শুক্রবার, ১ জুলাই, ২০১৬

সম্পাদিকার ডেস্ক থেকে





" এমন দিনে তারে বলা যায় 
এমন ঘনঘোর বরিষায় 
এমন দিনে মন খোলা যায় " 

ছটি ঋতুর বর্ণিল বৈচিত্রে ভরপুর বাংলার প্রকৃতি ও মানবমন । এর মধ্যে আষাঢ় - শ্রাবণ এই দুই মাস আমাদের শিল্প , সাহিত্য এবং মননে সর্বাধিক প্রভাব বিস্তার করে আছে । 
বর্ষার আবেদনের চির সুধাময় রূপটি রবীন্দ্রনাথই সবচেয়ে বেশী করে অনুভব করেছিলেন , তার প্রমাণ তাঁর 'বর্ষামঙ্গল' কাব্য ।  ১৩১৭ সালে , এক শ্রাবণ সন্ধ্যায় আশ্রমের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি জানান- , “আজ এই ঘনবর্ষার সন্ধ্যায় প্রকৃতির শ্রাবণ-অন্ধকারের ভাষা আমাদের ভাষার সঙ্গে মিলতে চাইছে। অব্যক্ত আজ ব্যক্তের সঙ্গে লীলা করবে বলে আমাদের দ্বারে এসে আঘাত করছে।'-- তাঁর এ বক্তব্য থেকে সুস্পষ্ট , বর্ষা ঋতুর সঙ্গে সাহিত্য , বিশেষত কবিতার কি লীলায়িত যোগ !

বর্ষার সৌন্দর্যের বহুগামী বৈচিত্রময় রূপটির জন্যই যুগে যুগে এই বর্ষাকাল প্রেম এবং বিরহের থিম হিসেবে বহুবার ব্যবহৃত হয়েছে ।এ প্রসঙ্গে কালিদাসের মেঘদুতম -এর কথা ভোলা যায় কি ? বিরহী যক্ষ উজ্জয়িনীর প্রাসাদ শিখরে বসে মেঘকে দূত করে পাঠিয়েছিলেন অলকা পুরীতে তাঁর প্রিয়তমার কাছে । কালিদাসের 'মেঘদুতম' এ  বিরহী যক্ষের সেই আর্তি কি আমাদেরও হৃদয় স্পর্শ করে অমর হয়ে ওঠেনি ?  মধ্যযুগীয় কবি জয়দেবের 'গীতগোবিন্দম ' বা বড়ু চণ্ডীদাসের 'শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন ' অথবা আরও পরবর্তী কালে মুকুন্দরাম চক্রবর্তী , ইশ্বরচন্দ্র গুপ্ত , স্বর্ণকুমারী দেবী , প্রমথনাথ চৌধুরী থেকে উত্তর আধুনিক কালের সুররিয়ালিজমের কবি জীবনানন্দ দাস , ...প্রত্যেকের লেখাতেই ফিরে ফিরে এসেছে এই বর্ষা । 

মুঠো ভরা রোদ্দুর 'র এবারের সংখ্যায় রয়েছে একাধিক কবিতা , চিঠি , ফিচার এবং অণুগল্প , প্রতিটিই আঙ্গিক , শব্দ এবং বাক্যের অনায়াস মাধুকরী তে অনন্য । বর্ষার অনুপম মাধুরীতে হৃদয় সিক্ত করে সৃজনে থাকুন সকলে , ...এবং ভাল থাকুন ।

শুভেচ্ছান্তে 
পিয়ালী বসু 

অণুকবিতাগুচ্ছ ~ { শমিতা চক্রবর্তী , পলাশকান্তি বিশ্বাস }

রোমন্থন - শমিতা চক্রবর্তী 
--------
একটা মেঘরঙা সকালে 
বৃষ্টির জরিকাজ 
ফিরিয়ে আনতে পারে কতকিছুই ---
স্মৃতির পাতায় কমলা গোধূলী 
অভিসারিকার রূপো লী রূপকথা সাজ !



সাদা মেঘ - পলাশকান্তি বিশ্বাস 
----------
কবেকার কালোমেঘ নিজেরই বক্ষ চিরে ঝরেছি একদা 
ওরাও মেতেছে স্নানে স্বভাব-উল্লাস, 
ক্ষরণ থামার আগে ধুয়েও নিয়েছে অনিচ্ছুক বসন-বাসন

এখন নিঃশেষ আমি দূরকোণে রক্তশূন্য ম্লান সাদামেঘ




হেরো সিরিজ { হেরো -২০ } ~ শুভাশিস সিংহ

ক্ষতে প্রলেপ পড়লে 
যন্ত্রণা কবিতামুখি হয়

এই আহত চিন্তায় ডুবে গিয়ে 
ধবধবে নরম বুকে 
হাত বোলাতে বোলাতে 
নাভি অবধি নেমে আসি
এরপর গভীরতা আন্দাজ করে
নপুংসকতা নিয়ে উঠে যাই

জানলায় তখন ঘুম ঘুম বাতাস
দেনা মেটাতে অভাবী মেঘ
কার্নিসের দ্বারস্থ

চুপ কথার রাতে রূপকথার শহরে
মার্কস, গান্ধী, রবি স্ট্রিট লাইটে
অক্লেশে লিখে চলেছে
একটি যৌথ কবিতা

আমি বকেয়া জীবনের ফিল্টার সুখে
সে কবিতার গঠন শৈলীতে মজে যাই
ছন্দের অনায়াস দক্ষতায়
অক্ষরের মজ্জায় থাকা
অনুচ্চারিত ভাবনাকে
ঊরু বেয়ে নেমে যেতে দেখি

অণুকবিতাগুচ্ছ ~ { সীমা ব্যানার্জ্জী-রায় , হিল্লোল রায় , হরেকৃষ্ণ দে , বৃষ্টি বসু পাল , সুদীপ্তা নাথ }

অকারণে - 
---------
বাইরে বৃষ্টি, ঝড়ের ঝাপটা
তোমার মুখের পোর্ট্রেট 
আমাকে করেছে উৎসুক-



ইন্দ্রিয়ানুভুতি - হিল্লোল রায় 
-------------
ভালোবাসি পোর্ট্রেট
খুঁজি তাই ফ্রেম
দুজনের ভালোবাসা
ধরে থাকে প্রেম



অনুভব - হরেকৃষ্ণ দে 
-------
হৃদয় ছুঁয়ে অগোছালো মনে
এঁকে দিলাম কল্পনার তেলরঙে
অনুভবের পোর্ট্রেট.


রাত জোনাকি - বৃষ্টি বসু পাল
--------------
প্রতি রাতে চুপিসাড়ে নেমে আসে 
শিরায় শিরায় উল্লাস নেশা কুড়োয়
আলো ফুটলেই স্থবির পোর্ট্রেট
ফ্রেম বন্দি বাসি ফুলের ঘ্রাণ



অবশেষের খোলাচিঠি - সুদীপ্তা নাথ 
----------------------
প্রিয় প্রাক্তন,
অনভিপ্রেত অতীতের কালশিটে মুছে আগামীর শুভেচ্ছা নিতে ভুলোনা




আমার জীবনে প্রিয় মানুষ ~ শ্যামশ্রী চাকী

বেড়ার ফাঁকে ভোরের অনুপ্রবেশকারী আলোয় আমার মায়ের মুখটা পদ্মপাপড়ির মত টলটল করত।
তখন স্বপ্নঘোর ঠিক কাটেনা
একটা কোমল পদ্মরাগ স্পর্শ সারাদিনের অক্সিজেনবাহী হয়ে কপালে হাত বুলিয়ে যায়।

রান্নাঘরে হলুদ মাখা হাতে অংক শেখাতেন মা। ডালের সম্বার আর পাটিগণিত মিলেমিশে এক হয়ে যেত সূর্য ওঠা নারকেল পাতায়। হ্যারিকেনের মুমুর্ষ আলোয় যখন টিনের চালে একঘেয়ে বৃষ্টির অর্কেস্ট্রা, আমাকে মেঘদূত পড়ে শোনাতেন মা।মায়ের সাথে গলা মেলাতাম 'কশ্চিৎকান্তা বিরহ গুরুনা স্বাধিকার প্রমত্তহ'..
যক্ষের বিলাপ, খিচুড়ির গন্ধ, সোঁদা মাটির আঘ্রাণ সমস্ত কিছু মায়ের মধ্যে মিলেমিশে মা কে এক আশ্চর্য রহস্যময়ী নারী করে তুলতো।

রবিবারের বিকেল মানেই এক অদৃশ্য জাদুকরের জাদুছড়ির স্পর্শে আমাদের উঠোন বদলে কবিতাবাসর। আমি কবিতা পড়ছি এক অলৌকিক খুশিতে ঝলমল করে উঠছে মায়ের চোখমুখ। সমস্ত পাড়াটার ওপড় যেন মায়ামাখা এক চাদর বিছিয়ে রেখেছে কেউ! সেখানে অপ্রাপ্তির হাহাকার নেই, ব্যার্থতার চোখ রাঙানি নেই, প্রত্যাশার তাড়া নেই।শুধু শান্তি.. অসীম শান্তি।
কারো সাথে এযাবৎ ঝগড়া না হওয়ার মূল মন্ত্রটা মায়ের শেখানো। জানি এমন হলে মা কষ্ট পাবেন।

আসলে আমি এখনো মায়ের রূপকথার সেই রাজকন্যা।তবে সেই আদরের দুলালি আজ নীলকণ্ঠী, তাই সব অপমান,আঘাত, সহানুভূতির আড়ালে লুকোনো ক্লেদাক্ত আঁচড় গিলে অনায়াসেই বলতে পারি; তোমরা ভাল থেকো।

আজকাল মায়ের উত্তরাধিকার সুত্রে পাওয়া 'সর্বংসহা' হওয়ার চাবিকাঠিটা মাঝে মাঝে মনের ভুলে আমার রূপকথার চোরাগলিতে কোথায় হারিয়ে ফেলি আর খুঁজে পাইনা।
আমার সহজ সরল আদি অকৃত্রিম মা এখন এই ক্ষয়াটে সমাজে মাঝে মাঝে চমকে ওঠে।সমাজের প্রত্যেকটি ধাপে নিত্যদিন ঘটে যাওয়া জটিল মনস্তাত্ত্বিক ট্র‍্যান্সফরমেশন দেখে ঘোলাটে চোখ মেলে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে।ইগো আর অহংকার, হিংসা আর হীনতা, লোভ আর উচ্চাকাঙ্ক্ষা ভরা নতুন প্রজাতি কে মা বুঝতে পারেন না, কিংবা বুঝতে কষ্ট হয়।
হয়ত বোকা বোকা শোনাবে তাও বলছি এই ইগো হীন, অহংকারশূন্য, ছাপোষা বেঁচে থাকায় মা
কে নিয়ে আমি খুব ভাল আছি।

অণুকবিতাগুচ্ছ ~ { অরুণজীব রায় , সিক্তা দাস , ওয়াহিদ মেহবুব মজুমদার , অনন্যা মজুমদার }

কলচি - অরুণজীব রায় 
------
সার্বভৌম কাঁটাতার
অস্ত্রের আস্ফালন
আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদ
ধর্মের কচকচানি
পুঁজিবাদের আগ্রাসন 
বিজ্ঞাপনের চকমকি
সব কিছুই অতীত 
কলমচির কল্যাণে আজ মানবতাবাদ জাগ্রত.



আর্তি - সিক্তা দাস 
------
আজ বেশ কিছুদিন কিছুই বলছো না...
নিঃস্তব্ধতায়, সকালের কুহূতান থেকে চন্দ্রিমার ঝর্ণাকথারা,
সবই আমাদের একান্ত আন্তর্জাতিক অভিমানবোধ।

বদলাবে না? 



সূর্যোদয় -  ওয়াহিদ মেহবুব মজুমদার
---------
সূর্যোদয়ের দেশ থেকে ন্যানোস্যাকেণ্ড ধার পেলে
'বারমুডা ত্রিকোণ' রসহ্য ভেদ করা যেত!
চা'য়ের কাপের বাক্যবাগীশ 
ব্যস্ত যদিও বিভাজনের আন্তর্জাতিক মহড়ায়



ছেলেটা - অনন্যা মজুমদার 
-------
দূঘটনা ছেলেটির মনের জোর না দমিয়ে, 
আজ সে স্পিন পাতের পা দিয়ে 

আন্তর্জাতিক 



সম্পর্কের ব্ল্যাকহোল ~ জয়তী ভট্টাচার্য অধিকারী

অমরত্বপ্রত্যাশী কিছু মুহূর্ত
অসম্পূর্ণতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যায়
উল্কাগতিতে
নীহারীকাপুঞ্জের মাঝে 
বিভাজিকায় ঘুমিয়ে থাকা প্রেমহীন ক্লেদাক্ত স্পর্শ
অপমানই বয়ে আনে

অ্যালার্মের অভ্যস্ত সকালে
ব্ল্যাকহোলের অলিতে গলিতে
জমতে থাকে সম্পর্কের পৌনঃপুনিকতা

গর্বোন্নত গ্রীবায় স্থায়ী প্রেম-ট্যাটু 
তিক্ততার প্রতীক হয়ে জাজ্বল্যমান
আজও

ভালবাসার অকালমৃত্যু প্রত্যক্ষ করি নির্নিমেষ
আর
একবুক জ্বালা নিয়ে সরে যেতে চাই
আলোকবর্ষ দূর

শিরনামহীন ~ আশফাক হাবিব চৌধুরী

সারাদিন দায়ের আশ্চর্য কোরিওগ্রাফি পালন শেষে
বাস্তুভিটে পরে নিচ্ছে আখেরি কলোনিয়াল সূর্যাস্ত

হ্যাঙ্গার মানুষ থেকে সদ্য অবসরের গন্ধ ছড়াচ্ছে
বোতাম খোলা, দমবন্ধনীহীন এক খোলা অবসর

সমগ্র বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে গন্ধটা ঠিক সাদা বকুলের মতো
আলেয়াহীন আঙুল তাক করে কিছুটা নিষিদ্ধ কিছুটা উৎসবের বুকে
অবসরে সরেও সরছে না অব-স্বাদ
প্রত্যেকটা মুহূর্ত অবসর... অব সর...

সর আদেশেই কী স্বরবর্ণ হওয়া যায়?
অবসরে সব ব্যঞ্জন ভিড় করছে পুরনো পাণ্ডুলিপির দোকানে
রিডাকশন সেলের মতো একটানা আবৃত্তি করছে কাব্যতা

আমি ও আমার সত্ত্বা ~ পারমিতা চক্রবর্তী

"লেখা আমার মা " 
শূণ্য বুকে আঁকড়ে ধরি 
আমায় ছেড়ে যেয়ো না 
:
বাতাস যেমন ক্লান্ত দেহে 
উদ্দীপকের ক্লোরোফিল 
গন্ধ তেমন ঘর্মাক্ত দেহে 
সিনথলের সিনোপসিস 
:
পানীয় যদি উত্তেজকের কোরক হয় 
জীবন তবে গীটারের তারে 
জীবনমুখী গানের সমতুল 
:
বর্ণমালা জুড়ে আমার বাস 
শূণ্য স্লেটে উপচে পড়ে শব্দচ্ছ্বাস
:
কলম কি তবে আমি ?
আপন বেগে বয়ে চলি 
লেখানদীর এপার ওপার 
:
ঝড়ের রাতে নৌকাডুবি হয়ে 
হারিয়ে যেওয়ো না 
যন্তে রেখো আপন নীড়ে 

আমি আর কবিতা ~ সুনীতি দেবনাথ

একলা থাকার দিনগুলিতে যখন যন্ত্রণা
আমার আমিকে প্রকাশের ব্যাকুলতা
সেদিন থেকে তোমাকে পেলাম কবিতা।
তোমার সাথে কি সম্পর্ক কোন নাড়ীর টান
জানি না কিছুই শুধু জানি আমার সুখ দুঃখে
আনন্দ বেদনায় তোমাকে সৃষ্টি করি আমি,
তুমি কি আমার মানস কন্যা? আমি তোমার মা?


আবার ভাবি আমার আমিকে নিয়ে নিত্য তুমি খেলো,
সেই আমি যে তার সাথে তো নেই আমার পরিচয়
শুধুই জানি তুমি এই আমিকে ভেঙ্গে গড়ে
কোন সে বিষম খেলা খেলো অনন্ত তা জানে 
কবিতা তুমি আমার দেখনহাসি মনের হাসি
চিরায়ত মা নাকি আমি তোমার জন্মদাত্রী? 
দু ' জনেতে মিলে মিশে অন্তহীন কবেই যেন
হয়ে গেছি অবিচ্ছেদ্য একে অন্যের মা

লেখা তুমি ~ প্রসাদ বিশ্বাস

একটু করে আমি বদলেছি
তোমায় বদলে দিয়েছি লেখা
শ্বাস বেঁধে তোমার গর্ভে খুঁজেছি আলো।
এক্সনের চরম স্পন্দনে
তুমি আমার চেতনাজাত।
:
উদভ্রান্ত ইপকের শেষতম কক্ষে
দগ্ধ প্রাণের সান্ত্বনা তুমি, আদিম গভীরে
যতোই ডুবেছি একাত্মে, জাপটেছি প্রাণপণ।
বদলে গেছে ধারণা যত
আমার লেখা, আমি তোমার আত্মজ।

দর্পণে প্রতিফলন: কবিতা ও আমি ~ জাকিয়া জেসমিন যূথী

মায়ের জঠর থেকে জন্ম নেয় বহু সন্তান
তার চিন্তা, চেতনার হয় প্রতিফলন
গড়ে উঠে তারই উত্তরাধিকারীর ভেতর
স্বপ্ন, উপলব্ধি সবই তার
ছড়িয়ে পড়ে তার বংশধর
নতুন উদ্যমে পুনরায়
বারংবার, 
বছর বছর।

এমন করেই আমার রচিত কবিতায় উঠে আসে 
স্ব-আবেগ, ভালবাসা, স্বপ্ন, উপলব্ধি...
এক একটি কবিতা আমারই ভাবনার প্রতিফলন
পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেই কবিতারূপ সন্তানদের
যাদের হাত ধরে ঘুরে আসি বিন্ধু সিন্ধু
মুগ্ধতায় মেতে উঠি নানারূপ দর্শনে
কবিতাই আমাকে বাঁচিয়ে রাখে অথবা আমিই কবিতাকে

কিছুটা পৃথিবী ~ প্রণব বসুরায়

থাক দরজা বন্ধ। হাওয়াও থমকে থাকে
প্রাণের লক্ষণ শুধু রঙিন মাছের গায়ে
কঠিন রাত বর্ষা বোঝে না, মানে না তন্ত্র
চোখে খোলা অপারেশন টেবলে--
আমি মাংস ছিঁড়ে দিলে লুফে নেয়.
বুঝে নেয় কোন খানে কতটা ফাটল--
বাতিল থেকে যায় ২রা আষাঢ়ের
নিজস্ব গানের কলি
পিরামিডের নীচে
চাপা পড়ে যায় কিছুটা পৃথিবী

অন্তরের অন্বেষণ ~ শুভময় মজুমদার

মুহূর্তের ফিরে তাকানো
স্নিগ্ধ হাসি এলোমেলো চুল
স্মৃতির ওয়েসিসে তুই
আনমনে করে ফেলা ভুল
'
সৃষ্টির সম্মানে সম্মানিত
হৃদয়ের চিলেকোঠা
বন্ধুত্বের পাতলা চাদরে
ভালোলাগার ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠা
'
আমার একলা আকাশ জুড়ে
তুই রাত্রি প্রেমের সৃষ্টি
তুই টলোমলো করতে থাকা
একফোঁটা বৃষ্টি
'
নিশীথ রাত্রি তোর
তুই স্বপ্ন দিনভোর
..
অভিমানের চিঠি তোর অনুরাগ,
তুই শরীর জুড়ে ফাগ
..
তুই প্রেম, তুই অভিমান
তুই প্রেম, তুই 'বিকেল বেলার ঘ্রাণ'
তোর স্পর্শে রোদেলা ছন্দ ম্লান
..
মিঠেল আলাপনে আবছায়া বাঁকে
ভবিতব্য হাতছানি দেয়
অন্বেষার অন্বেষণে
অকারন প্রেম আশকারা নেয়

হে পুরাতন ~ সুকান্ত চক্রবর্তী

হে পুরাতন , মনে রেখো
তুমিও এককালে নবীন ছিলে ।
যে বৃদ্ধ শীতে শুষ্ক তুমি , কোন
এক শ্রাবণে তুমিও অঝোরে ভিজেছিলে ।

ধীরে ধীরে বয়ে চলে স্রোত , নবীনেরা
একে একে আসে ,পুরাতন দূরে সরে ;
আজ তোমার যাবার দিন, দুঃখ নেই ,
হে পুরাতন , একদিন তুমিও নবীন ছিলে

আমার কবিতারা ~ জয়ীতা ব্যানার্জী গোস্বামী

এইমাত্র একটি মৃত কবিতার সৎকার করে ফিরলাম
আর একটিকে রেখেছি জঠরের কোণে
শব্দেরা নাড়ি বেয়ে পৌঁছে দিচ্ছে স্পন্দন
তোমরা ভুমিষ্টটিকে আদর করো
কালো টিপ পরিয়ে আসনে বসাও
তোমাদের আশীর্বাদে একদিন
সহজেই মিশে যাবে আগামীর সাথে
আমার চিন্তা তাকে নিয়ে
পিটুইটারির কয়েকবিন্দু আবেগ হাতে
যে এখনও অপেক্ষমান যোনিপথে

হারমোনি ~ মিঠুন চক্রবর্তী

এবার বৃষ্টি এলে উঠোনে ছড়িয়ে দেব কিসমিস হৃদয়
এবং বৃষ্টি ভেজা রোদে বুনে নেব ঔষধি সম্পর্ক।
মানসী জানি খুব ভাল গাছ আর নদীর মুদ্রা জানে,
তার বুকের হুক খুলে হাতের তালুতে রাখবো নরম পৃথিবী
আর প্রবল উত্তেজনায় সিঁড়ি দিয়ে উঠে যাবো অরণ্য সভায়........
তখনও কি হারমোনির পৃথক পৃথক স্বর গুলি স্বরলিপি হয়ে বইবে না

আভূমি ~ কুন্তলা চক্রবর্তী

শর্তহীন মাথা নুয়ে থাকা
আজন্মলালিত সংস্কারের কাছে, 
দ্যোতনাহীন চেতনাকে সযত্নে আড়াল করে
কেবলই মাথা নুয়ে থাকা
শিরদাঁড়া টান করা মানা
সুখেরও অদ্ভুত এক নেশা আছে


সে নেশায় মাতাল পৃথিবী
শিরদাঁড়া টান হলে, সুখ যদি কম পড়ে
সেই ত্রাসে আপোষনামা
রাতশেষে ভুখা পেটে খাবারের লোভে,
প্রতিবাদ ঘুমিয়েছে কবে
তার চেয়ে বেশ ভালো, মাথা নুয়ে থাকা
বোধ বিদ্রোহী হলে, বিদেশী ফিল্মের চর্বিতচর্বণ
আর স্লিপিং পিলের আশ্রয়
নরম গদিতে শর্তহীন সুখে ভেসে থাকা

প্রেম ~ মৌসুমী মন্ডল

দুটো পাহাড় অরণ্য হয়ে একটি প্রেমের উপন্যাস লিখে যেতে থাকে
ব্রাউন ওক কাঠের যে কঠিন গদ্যে জীবন তৈরী হয়ে এসেছে শীত ও বসন্তের দিনে

 আমি তার পায়ের কাছে নতজানু হয়ে বসে বর্ষায় কচি ঘাসের জঙ্গল ঘন করি 
তার সবুজে রামধনু রঙ ফুলের বুদবুদ্ ছড়িয়ে দেবো
সকালের কচি রোদের আলোয় 
তোকে শেষ শ্বাসবিন্দু পর্যন্ত 
শ্বাসনালীতে বেঁধে রাখবো

আমার শেষ ~ দীপঙ্কর বেরা

রূপকল্পের ক্ষণস্থায়ী অভিরাতের তীরে
ভুল আমি-সংস্কার নৈঃশব্দ নক্ষত্রটিরে
মৃত্যুর মধ্যস্থতায় স্পর্শ গুণন করেছি
আঁধারের আবছা গল্পে অতল ছুঁয়েছি


অনিন্দ্যের অযাচিত বাস্তবতার শ্লোক
তাড়িয়ে বেড়ায় রাতহীন অস্বর্গীয়লোক
প্রেমহীন যাপন চিত্রের জাগরণ লেখা 
আগ্রাসী জীবনবাদী আমি আমি দেখা,
ভাঙতে ভাঙতে ছুঁতে চায় অতলস্পর্শ
কেটে যাওয়া অভিজ্ঞানে আমি অপকর্ষ


এবার অসীমের মীড়হীন ঋজু অনুপমে
আমার শেষ আমি লিখুক শুদ্ধ সোহমে

হেমলক বিষাদ ~ স্বাতী গুপ্ত

নিস্তব্ধতায় কিছু শব্দ আর মন
প্রহর গুণে চলে
:
একটা নক্ষত্রও নয় ইচ্ছের অধীন 
ভালোলাগা সন্ধ্যা গুলো
বড় বেশি তাড়াহুড়ো করে
:
হেমলক্ অন্ধকারে ঢেকে যায়
ঋতুবৈচিত্রের বাস্তবতা 
:
শরীরী চুপকথারা জেগে ওঠে
তবুও আগ্রাসী মন ভালোবাসা খোঁজে 
:
অব্যক্ত যন্ত্রণা এলোমেলো 
সমস্ত সময় জুড়ে
:
দৃঢ় এক সংকল্পের সাথে
ধীর নিশ্চিত অবগাহন আত্মহননে

দৃশ্যকল্প ~ লাভলী বসু

অসহিষ্ণু সময়ের স্রোতে 
নামহীন কিছু সন্ধ্যার বিচরণ 
আলোর মন্তাজে সেজে ওঠা রাত 
নিমগ্ন সুখজাগানিয়া সুরে ----

দ্বিধা ও দ্বন্দ্বে বিচলিত 
স্বপ্নান্ধ চোখে স্মৃতিমেদুরতা 
তাসঘরের ছাদে অযাচিত অধীনতায় আবিষ্ট 
ক্লান্ত অবদমিত অনুভূতি 
----- নৈঃশব্দ আত্মহনন 

আলো আঁধারির হ্যালুসিনেশনে 
নিকষ রাতে ব্যাধিঘোর ছায়ায় 
আবদ্ধ অনিঃশেষ ভাবে লেখা 
বৃত্তবন্দী জীবনের এলিজি 

কবিতা ও আমার আত্মহত্যা ~ অরিজিৎ বাগচী

শহরের ব্যস্ত সন্ধ্যা
বাইপাসে ছুটে চলা আমির সন্ধানে 
কিছু আঁতেলামির অকালমৃত্যু
আর ফ্ল্যাশ ব্যাকের রিলের গরগরে শব্দ দূষণ
সচকিত পেশী টান ও অক্ষরের জন্ম দেয়
আমার শেষের কবিতায়
:
ক্রসিং পেরিয়ে ফ্লাইওভার টা 
আনাড়ি গলি গুলোর ছন্দপতন করতে সক্ষম হয়
শাপিত গল্পেরা পিছু ছাড়লে শেষ হয়
ভাঙাচোরা স্বপ্নের নির্বাসনের
পালা যাত্রা
:
প্রেমের বৈভবে জমা একাকীত্বের সালফিউরিক
শুধু মাত্র আমার সুখ নিষিদ্ধ কলমের কালি
:
তাই বেঁচে থেকেও শূন্যতার ঋজুতায় আজ আমিও আত্মহত্যা চাই

মধুর অচেতন কাল ~ কস্তূরী কর

লহমায় ফুরিয়ে যায় সময় 
:
মেঘলা দিনে আঁধারে হারানো সাঁঝবেলা
:
দ্যুতিহীন নক্ষত্র চিনে নিতে চায় পথ 
:
অভিশপ্ত ঝোড়ো হাওয়ায় দিকভ্রান্ত প্রেমের কম্পাস 
:
জীবন বেপথু , বেসামাল 
:
নিঃশব্দ চোরাবালির অমোঘ আকর্ষণ সুরেলা বাঁশিতে
:
ডেকে ফেরে রাতপাখি গ্রীষ্ম থেকে বসন্তে 
:
মোমের মতো গলে যায় কিছু কথা 
:
রাতের মধ্যযামে দরবারী কানাড়া আর মৃত্যু , শয্যা পেতেছে সবুজ ঘাসের গালিচায়

একান্ত আমি - র অপেক্ষা 

উইন্ডস্ক্রিনে বৃষ্টিফোঁটা ~ তন্ময় দেব

গুটিকতক পাখী মহাকাশ ঘুরিয়ে আনে
ডাস্টবিনের দেহে ডানা লাগিয়ে 
উপেক্ষিত এঁটোকাঁটা গা বাঁচিয়ে ওড়ে সস্নেহে
 
উইন্ডস্ক্রিনে বৃষ্টিফোঁটা, পাশাপাশি ঘর বেঁধেছে বৃষ্টি আর শীতও

ঘর জুড়ে চাপ চাপ বরফের স্তূপ, আলগা মিঠে
রোদ্দুর খেলে। এমন ঘর কোথায় আছে? বয়ামে
আঁচার পাঁচ মিশেলে। নলেন গুড়, পিঠে,
চালবাটার পিঠালি আলতো করে বৃষ্টিকে চুমে

মুহুর্তেরা রোজ ছবি তোলে, সেলফি নাকি
নতুন চল। ডাইরির ওই পুরনো পাতার গন্ধ
দারুণ। হাতে লেখা মুহূর্ত সব রইল বাকি।
কস্তুরি মেঘে ঘ্রাণের জোয়ার, ঝড় বন্ধ

জীবনযাত্রা উইন্ডস্ক্রিন, বৃষ্টিফোঁটা স্মৃতির রেশ।
রাত সময়ের কালো জঠর, দিন নতুনের উন্মেষ।

পূর্ণিমা ~ স্বরাজ কুমার ঘোষ

গতকাল যে পূর্ণিমা ছিল ,সেটা জানতাম না ,রাত আটটার সময়ে ছাদে উঠেছি ,এক অসাধারণ সুন্দর প্রকৃতি পর্যবেক্ষন করলাম I গরম কালে ,আকাশ পরিষ্কার থাকলে ,আমি ছাদে যাই কানে হেডফোন গুঁজে গান শুনি , ফেসবুক করি I কাল সেই রকম একটা পরিষ্কার বাদল মেঘ হীন সুন্দর রাত ছিল I 
যেইমাত্র ছাদের দরজাটা খুলেছি , একটা সাদা আলোর চাদর আমাকে ঢেকে দিল I চারিদিকে তাকাই ,সব সাদা উজ্জল আলোতে ভরে গেছে I দূরের নারকোল গাছের মাথাগুলো মনের আনন্দে নেচে যাচ্ছে ,মনে হচ্ছে ওরাও প্রকৃতির আনন্দযজ্ঞে নিমন্ত্রিত হয়ে মাতোয়ারা হয়ে গিয়েছে I মাথার উপর দক্ষিণপূর্ব দিকে চন্দ্রদেব বিরাজ করছেন তাঁর কিরণ ভান্ডার নিয়ে I 
আমি শুধু এই রূপসুধা উপভোগ করছি ,আর সর্বশক্তিমানের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি , বলছি হে ঈশ্বর তুমি ধন্য I তুমি আমাকে মানুষের জন্ম দিয়েছো ,আমাকে এই সুন্দর দৃশ্য দেখবার ক্ষমতা দিয়েছো ,তুমি আমার শতকোটি প্রণাম গ্রহণ করো

নস্ট্যালজিক ~ পিয়ালী পাল

ধূলোবালি কলের জল
মোগলির সাথে চল
বিকেল রোদ সকাল ঘুম
স্কুল ফেরত গল্পদল
আমার ঐ দিনগুলো বন্ধুরা পাশে
আলাদিনের মত ফিরে পেতে চেয়ে
হাত বাড়াই ভেজা নৌকো ভাসাই
“বন্ধু তোমায় এ গান শোনাবো বিকেল বেলায়”

আড়ি-ভাব চোরপুলিশ
চেনামুখ আব্বুলিশ
সবকিছুই দূরে কি কাছেই মন আঙিনায়

“ছেঁড়া ছবি স্ফটিক জল
এইটুকুই সম্বল
বাদবাকি রোদ চলে যাওয়া বিকেল বেলায়”

সে বিকেলগুলো ছবি এই বিকেলে
দুপুরের ব্যস্ততা সব চলে গেলে
জল চোখের পাতায়
“বন্ধু তোমায় এ গান শোনাবো বিকেল বেলায়”

তাড়াহুড়ো বড় হওয়া 
রেসাল্ট প্রাইজ পাওয়া 
পেরোলে সব ফুরিয়ে গেলো ছেলেবেলা

“মরা মছের চোখ যায় যতদূরে
শুকোনো জলছবি আজো রোদ্দুরে
হাওয়ায় হাওয়ায়
বন্ধু তোমায় এ গান শোনাবো বিকেল বেলায়”

অতন্দ্রিলা ~ শৌণক বক্সী

ক্লোরোফর্মের নেশায় বুঁদ হয়ে আছি

জনপথ গাছপালা এক এক করে
ঢুকে যাচ্ছে ঘরের ভেতর

ভাসমান শরীরের আনন্দ বৃক্ষ
জমিনের নিভৃত আশ্বাস নিয়ে
ছড়িয়ে দিচ্ছে বধির চেতনায়

কোথাও কোন শব্দ নেই
কোথাও কোন দৃশ্য নেই
স্নায়ুর ভেতর স্নেহ মৃদু বয়ে যায়
সবটুকু দিলেও নিঃস্ব হওয়া যায়না
হৃদয়ের পূর্ণিমায় পূর্ণ হয়ে আছে
প্রশান্তির দীর্ঘতম প্রতীক্ষা

কোথায় এর শেষ বলতে পারো অতন্দ্রিলা

কবিতা রাজ্যের দিনকাল ~ জুবায়ের আহাম্মদ

শুনেছি কবিতা রাজ্যে আজ দূর্ভিক্ষ এসেছে
কালি আর কলম মিলে
সত্যিই কি বিদ্রোহ করেছে?
যতিচিহ্ন সব নাকি বাধা দিয়েছে
শব্দের জয়োল্লাসে!???

কবিরা শুনলাম মাথা কুটে মরছেন!
সমঝোতা প্রস্তাব হাতে ছুটছেন
শব্দ ছন্দ আর কলমের ঘরে ঘরে।
তারা জানিয়েছে,
অচিরেই নাকি কবিতা রাজ্যে
আবারো শান্তি ফিরে আসবে।
.......
ছন্দেরা আজ সমাবেশ দিয়েছে
অপকবিতার পথে
শুনেছি মানহানি মামলা আছে
যতিচিহ্নের বিপরীতে।
এদিকে শব্দেরা কালকের দিনে
হরতালের ডাক এনেছে।

কবিতারাজ্যে কবি আজ অসহায়ে মাথা ভাঙে
জানা ছিলোনা বিদ্রোহী আগুন
কবিতা রাজ্য জ্বালাবে। 

চিত্রকল্প ~ অজয় বৈদ্য অন্তর

বৃষ্টির ছাটের ঝাঁক ঝাঁক টাপুরটুপুর
চেরাপুঞ্জির দিক থেকে উড়ে যাওয়া
আমার পাথুরে শব্দপুঞ্জিগুলি
লাল মাটির বুকে যেন বৃষ্টির প্রথম আঘাত


যদিও আমার ভাবনায় ছিল ঝরা পাতার মতই তারা
ঝরে পড়েছে বেঘোরে,
শহরে একটা জলজ্যন্ত মানুষকে
মেরে ফেলা হল কেমন হেলাফেলায় অবেহেলায়
ওরা মানুষ না আর কিছু,
তামা না ঝামা মাঝে মাঝে ধন্দ জাগায় শুকর ছানারা


সহমর্মী না হলেও সহজীবী তো হতেই পারে
নিরসন কি সন্দেহের-
আমি তাকে এককলি গান
নিতেনপক্ষে না হয় আস্ত একটা গানই
উপহার দিয়ে দিতে পারি বিনিময়ে
তার জায়গায় সে কি চাইল একটা মরমী মরাল
একই মূক ও বধির সে ও আমি
যার জন্য আজকাল প্রেমের কবিতা
আর লিখতে পারি না-


শুধু চিত্রকল্পে ভরে ঔঠে রক্তাক্ত লাশ
যায় না তাড়ানো কনুয়ের গুঁতো খেঁয়েও
আমি আর তার মাঝের অর্থাৎ
প্রেমের প্রতীকী ব্যঞ্জনাসমৃদ্ধ চিত্রসমূহকে

প্রেমে পড়লে ~ অনিরুদ্ধ দাস

প্রেমে পড়লেই--
ভাঙা উড়ালপুলে পুনম্ আসে,
প্লাস্টার খসা বাড়িটাও ডেকরেটেড হয়;

মরু সাগর নদী হয়
শ্যাওলা সরে আয়না থেকে ,
আবার খোলা বাগানও
দমবন্ধ গ্রিন হাউস হয়,
ছিঁড়ে যায় দড়ি...

অগভীর নলকূপে --চাষে
খরা আসে,
রিলিফ আসে না;

মুঠোফোন ...
হয় সুইচ্ অফ্ ,
এখানে প্রিম্যাচিওড বেবির --
শুধু ঠাঁই হয় না ডাস্টবিনে ,
সঙ্গে আনে --অথৈই বন্যা ...

সম্পাদিকার ডেস্ক থেকে

উৎসবের আলোড়ন কিছুটা স্তিমিত , তবুও মনের অলিন্দে হৈমন্তী স্বপ্ন । বারো মাসের তেরো পার্বণ প্রায় শেষ মুখে , উৎসব তিথি এখন অন্তিম লগ্ন যাপনে ব...