বুধবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৬

"The beauty of all literature. You discover that your longings are universal longings, that you're not lonely and isolated from anyone. You belong.” ― F. Scott Fitzgerald

'সাহিত্য' অর্থাৎ 'সহিতের সহিত ভাব বা মিলন ' { বাংলা অ্যাকাডেমি অভিধান জানুয়ারী, ২০১৪) - আমাদের অন্তর্নিহিত চেতনাবোধের চিন্তন প্রথম আক্রান্ত হয় সাহিত্যের নানা ধারা'র অনুভবের ভিত্তিতে , ... সুপ্ত চিন্তনের সার্বজনীন প্রতিফলন অবশ্যই সাহিত্যের প্রধান সংজ্ঞা
একটি উদাহরণ দেওয়া যাক - সোফোক্লিসের ‘ইডিপাস রেক্স’ আমাদের অনুভব অলিন্দের গোপন দুয়ার শুধু আন্দোলিতই করেনা - বরং তা আমাদের সার্বিক বিশ্বাসবোধ কেও আন্দোলিত করে তোলে - ফলত জীবন দর্শনের এক অভাবনীয় দৃশ্যপট উন্মিলিত হয় আমাদের সামনে , সাহিত্য' আমাদের নিয়ে যায় সেই 'ইউটোপিয়ান' দুনিয়ায় , যেখানে আমাদের বাস্তব অনুভব পৌঁছতে অক্ষম ।
মানুষের জীবন একটি সামগ্রিক ও বহুমাত্রিক সত্তা-- তার অসংখ্য দিক ও বিভাগ এবং অগণিত দিকপ্রান্ত রয়েছ - অপরিমেয় কার্যকারণ মানব জীবনে প্রতিনিয়তই কর্মরত... 'সাহিত্য' এই পর্যায়েরই একটি বিষয় মাত্র।

খুব সহজ ভাষায় বললে ,--- মানবিক অনুভূতির ভাষাগত রূপায়ণকেই ' সাহিত্য' নামে অভিষিক্ত । আবেগ ও চেতনাকে সুন্দর ও চিত্তাকর্ষক শব্দ বিন্যাসের মধ্যস্থতায় সার্বজনীন পাঠকের দরবারে পৌঁছে দেওয়াই 'সাহিত্য' --- ফলে সাহিত্য' যেমন বক্তৃতা ও ভাষণরূপে প্রকাশিত হতে পারে, তেমনই গদ্য ও কবিতার ছন্দময় পরিচ্ছদেও উপস্থাপিত হতে পারে।
'মুঠো ভরা রোদ্দুর 'এর এবারের সংখ্যায় রইল গদ্য ও কবিতার একাধিক সাহিত্য-মিশেল' । চিন্তন ও চেতনের সার্বিক স্পন্দন এই সাহিত্যে সভায় সম্পৃক্ত । আসন্ন কালিপুজো ও ভাইফোঁটা'র আগাম শুভেচ্ছা সমেত সাহিত্যের চেতনা রসে নিজেকে সিক্ত করার অভিপ্রায় থাকুক ... এই কামনাও রইল ।

শুভেচ্ছান্তে
পিয়ালী বসু


নারী, পঞ্জরাস্থি প্রেয়সী আমার - পলাশকান্তি বিশ্বাস ও জাকিয়া জেসমিন যূথী

গড়েছি পাঁজর থেকে, ইচ্ছা থেকে, মানসপ্রতিমা!
.
আমারই সৃজন তুই, অপরূপা, মাংস-হাড়-সাধ
পঞ্জরতলে যে হৃদয়ের বাস, আনখশিখর জরীপে জরীপে 
উদ্বেলিত উচ্ছ্বসিত বিন্দু বিন্দু শোণিত-সঞ্চারে
অপলক দুটি চোখ তোর, সেও দেখি বিদ্যুৎ জমিয়ে রাখে,
পুষে রাখে ভালোবাসা মুগ্ধতার প্রণিপাতে
যথার্থ মুহূর্তে ঝিলকিয়ে হিরণ্ময় হবে বলে 
.
পঞ্জর, পাঁজরে আয়! এসো সখী, 
বুক ছুঁয়ে বুকে মিশে যাও 
আমাকে প্রণতি দিয়ে তুলে দিস সৃজনের ডালা, স্বর্ণালী আকাশ 
কী রেখেছিস নিজস্ব দেওয়ালে?
.
আফ্রিকা-কন্দর থেকে শিকারের অবসরে তুলে আনা ফুল-লতা-মালা
ভুমধ্যসাগর-থেকে-ব্যবিলন ঘোড়সওয়ারের দিনে যূথপক্ষ আসমানী উল্লাস
অনাহারে পিপাসায় উষ্ট্রকুঁজ করেছি সম্বল মরু পাড়ি দিতে
ভীম্বেটকর গুহায় গুহায় অগ্নিবলয় কেন্দ্রে রেখে 
নেচেছি যৌথনৃত্য সঙ্গীদের উতসাহ-সঙ্গতে 
হৃদয়ে হৃদয় ছুঁয়ে অর্ধনারীশ্বর রণে বনে জলে অন্তরীক্ষে 
সভ্যতার লালকার্পেটে যুগ্মতাল কুচকাওয়াজ 
.
বারবার মুগ্ধচোখে তোকেই তো দেখে গেছি সম্পদে-বিপদে 
রাষ্ট্রদ্রোহ, ভূমিকম্প, দাবানল, প্লাবণের খরস্রোতে 
ছাড়িস নি হাত তুই, হাতের আঙুল
.
আমি তবু অহমিকা-জ্বর, বিস্মৃত-অক্ষর-অজগর'
শাপিত মুহূর্তে হৃদয়কে চাপা দিতে বাহুকেই ভেবে নিই বিশ্বস্ত সহায়
সঙ্গিনী আমার, কুক্ষণে তোমাকে, তোকে বন্দী করে 
ঘিরে রাখি স্বচ্ছ কাঁচে, আকুরিয়ামের মাছ, 
আমার খেয়ালি নজরদারিতে তোর ঘোরাফেরা, ডিগবাজি, নাচ
আমারই ইচ্ছে-রঙে সাজ তোর দিনে রাতে পালটানো ফরমান 
.
যখন আসঙ্গলিপ্সা, তুলে নিয়ে বিছানা রাঙাই
যখন অর্থলিপ্সা তোকেই ওজনদরে তুলে দিই বেনিয়ার হাতে,
পিঠ-বাঁচানিয়া রাজ্যলিপ্সায় পুরুষে পুরুষে যুদ্ধের সন্ধি-উপঢৌকন 
সেও জানি তুই
.
ভুলে যাই কতদিন দেখিসনি রোদেলা আকাশ 
কতদিন চোখের তারায় তোর রাতের তারারা এসে 
লেখেনি কবিতা, ঝিলমিল আলোকের রূপকথামালা 
অর্ধেক আকাশ তোর, অর্ধেক পৃথিবী-- ভুলেছি প্রমত্ত-মদে
.
ভেবেছি পশরা তুই, ভোগ্যপণ্য শুধু 
তুলেছি রাতের গাড়িতে লিফট দেব বলে 
স্কুলের গাড়ি্তে করে কাকু-কাকু নিরাপত্তা-নামে 
প্রথম রজোদর্শন সাবালকত্বের রঙিন পতাকা, ধর্মের দোহাই দিয়ে করেছি ঘোষণা 
ট্রেন থকে নামিয়েছি, চোর অপবাদ দিয়ে,
পেতেছি ঘরে ঘরে মোড়ে মোড়ে কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প
গণিকা, পতিতা, ক্রীতদাসী, দেবদাসী নানা অভিধায় দেশ ও ধর্মের নামে 
করেছি নিয়ম নানা, লিখেছি শাস্ত্র-অধ্যায়
.
তারপরও তাকেই অমান্য করে কেবলি পাথরখণ্ড, লোহা-রড
একাকী ও দল বেঁধে আমিই ঢুকিয়েছি সে গুহার দ্বারে
যার থেকে, আমি, পিতা পিতামহ সকলেই নিষ্কৃত হয়েছি
অন্ধকার থেকে আলোময় ভোরে
.
তবু তুমি এতো ক্ষমা জানো!

এখনো মেঘলাদিনে সখী বলে ডাকি যদি
সব ভুলে সুকোমল ঠোঁটদুটো, কম্পমান ভালবাসা 
ছায়াছবিময় দুচোখের সঙ্গে তুলে ধরো দ্বিধাহীন 
রাগের লুকনো ছুরি ছুঁড়ে ফেলো দূরে এক লহমায়
নতুন পৃথিবী সুসন্তানে ভরে দেবে বলে 
আবার উর্বরভূমি পেতে দাও তুমি, প্রসারিত বাহু
বজ্র ও বৃষ্টিপাত সোৎসাহ সহ্য কর ধরিত্রীর মত 
.
এখনো কি প্রণাঃম করবে তুমি, কেবলি পঞ্জরজাত বলে?
আমারও কি দায় নেই আনত কুর্নিশ দেবার তোমাকে, হে নারী?
.
আমার পঞ্জর তুমি এতদিন, এত কষ্টে 
এত ভুলভালাইয়া পেরিয়েও বাঁচিয়ে রেখেছ, 
জানি, সে শুধু আমার ঘাটতিটুকু অম্লান পূরন করবে বলে
তোমাকে যে বুকে রেখে পূর্ণ হব আমি! 
.
শুধু ভালোবাসা নয়, আমার প্রণতি নাও নারী, প্রেয়সী আমার!

সমাজের আয়নায় নারী :একটি কোলাজ - বাসব মণ্ডল ও স্বাতী গুপ্ত

মেয়ে
......
নিষেধের প্রাচীর বেয়ে
বসন্তের ভরা যৌবন
বয়ে চলা শিরায় শিরায়

অনঅভ্যস্ত পথ বেয়ে
খুঁজে চলা স্বপ্নের হানছানি

তারপরটা কল্পনা....

স্ত্রী
.....
রন্ধ্রে রন্ধ্রে আপসের উষ্ঞতা
রাত পোষাকের গায়ে অনিচ্ছার অষ্টানি
সিক্ত আবেগ জুড়ে
অনুশোচনার চোরা স্রোত

প্রত্যেক পদক্ষেপ ঘিরে রাখে
নিয়মের বেড়াজাল
কর্তব্যের দায় একা বয়ে চলে
সিঁথির সামান্য সিঁদুরের অজুহাতে

তারপরটা কল্পনা....

মা
...
মা বলে যাকে চিনি
সে মেয়ে না মানুষ
সেই নিয়ে যুদ্ধ হয়েছে
তার জন্মের আগে থেকে

তারপর বইয়ের পাতায়
যখন পড়েছে লক্ষীবাঈয়ের কথা
তখন শরীর জুড়ে আলপনা এঁকেছে
সংসারের জোয়ালের ক্ষত

মনের ঝুল ঘেঁটে
যখন উঁকি মেরেছে ভালবাসার পলাশ
তখন সমাজ আর সংসারের শাষানী
খুঁজে দিয়েছে স্বামীরঘর নামের হারেম

আমি রুদ্রের কথা বলছি - জুবায়ের আহাম্মদ

এইযে শহরকবি, জানো
এখনো আমার 'উপদ্রুত উপকূল' জুড়ে মৃত 'মানুষের মানচিত্র' আঁকা হয়,
ঝাপসা চোখে আজো সেখানে 'ফিরে পাই স্বর্ণগ্রাম'। 
সে কি! তোমরা স্বর্ণগ্রাম চিনতে পারোনি?
সেখানেই তো জমা 'দিয়েছিলে সকল আকাশ'
'মৌলিক মুখোশ'টায় মুখ ঢেকে 
'ছোবল' দিয়ে কেড়ে নিয়েছিলে 
দুফোঁটা 'সোনালী শিশির'এর 'গল্প'। 
আমি সেই স্বর্ণগ্রামে ফিরে আসি,
'বিষ বিরিক্ষের বীজ' হাতের মাঝে পুরে
আমি আরো একবার বুনতে চাই 'মনুষ্য জীবন'।
'বাতাসে লাশের গন্ধ' মুছে 
গড়তে চাই শিশির ভাসানো জীবন

অনুতাপ - সুকান্ত চক্রবর্তী

সমস্ত অহঙ্কার পুড়ায় চিতার আগুন ,
সকল দেহতত্ব মিলায় ছাইভস্মে ।
এজন্মেও পেয়েছি মৃত্যু , প্রিয়তমা,
হয়তো আগামীতে তোমায় পাবো

লজ্জাহীনা - শঙ্খসাথি পাল

আমি আজ প্রসব করেছি, মৃত ভালোবাসা-
বিশ্বাসের জারজ সন্তান, 
এখনও আমার জঙ্ঘায় প্লাবিত ঘৃণার স্রোত ।
যন্ত্রণা বোধ লুপ্তপ্রায় ;
হওয়ায় কৃষ্ণচূড়ার স্পর্শ,
লজ্জাহীনা কানীন জ্যোৎস্না মাখি

শনিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৬

অভিমান -- সৌমেন ঘোষ৷

প্রত্যেকটি বস্তু তার নিজস্বতা দিয়ে,
ছুটে চলে নির্ধারিত নিজ গন্তব্যে!
ঠিক যেন নদীর গতিপথ ৷
প্রেম ও এগিয়ে চলে!
তার দাবি জোরালো করতে,
অভিমান তার প্রথম অলংকার

হ্যাং ওভার (১) -- সুকান্ত চক্রবর্তী

অঝোরে বৃষ্টি , মাঝখানে আমি,
আর চারিদিকে ছড়ানো রাস্তারা
গান গায় পথচলার । কোন পথ ?
সে তো ভাবিনি ! চারিদিকে শুধু
ওদের বিস্তার দেখেছি , গান শুনেছি ।
এভাবেই ধীরে ধীরে বৃষ্টি-রাত শুকিয়ে যায় ।
ক্রমশ ভিড় জমছে , শহরে সকাল ;
গতরাতের জড়ানো রাস্তারা এখন
যেন কীরকম সহজ হয়ে গেছে ।
কই ? আর গান নেই তো ! আমিও
অনেকটাই হেঁটে গেছি দূরে ,
এখন আকাশে জম্পেশ রোদ্দুর ।

মন্দাকিনী , তুমি আজও নির্বোধ -- পারমিতা চক্রবর্ত্তী


রাত্রি রয়েছে আমার বিছানায়
তুষার শীতল কাঠিন্যের আবেশে
মসৃণ তালোবারি
শুধু রাত্রি আর আমি
একাকী

সোহাগী শরতের স্রোতে উড়ে
আসে গোপন চিঠি
যার অর্থ অভিধান আজও
দিতে পারেনি
আমি সেই আগের মতই নির্বোধ
আলস্য চোখদুটো নির্ঘুম

ক্রন্দসী বুঝি তোমার আবর্তে
বিরাজমান
কবে তুষার ভেঙে মন্দাকিনী হবে
সেই প্রপাতে হবে আমার
দেহজ বেদনার আবরণ উন্মোচন .....

লিপ্সা ( Lust ) -- বাসব মণ্ডল

শরীরের খাঁজে খাঁজে
জমে থাকা বৈরাগ্যের বল্কল খসে পড়ে


নৈকট্যের অযাচিত ইস্তাহারে
অভ্যাস মিস করা ইন্দ্রিয়র সম্ভোগ ক্রিয়ায়
রচিত হয় উল্লাসের মানস সরোবর


চরিত্র এখন হিমবাহ হয়ে
জাহাজ ডোবার অপেক্ষায়

আধুনিকা -- জাকিয়া জেসমিন যূথী

রবি সন্ধে । 
দু বাটি মুড়ি মাখা নিয়ে ঘরে ঢুকলেন সরমা। মিলি আর তুতানের হাতে ধরিয়ে দিলেন বাটি দুটো , " হ্যাঁ রে ? বিজয় কে ডাকবো কাল ? পাকা কথা বলে নিলে হয়না ? " 
" উম , ডাকতে পারো , কাল হাফ ডে আমার , চাপ নেই , কিন্তু তোমার পেয়ারের মেয়ে কি বলছেন ? " আড়চোখে মিলির দিকে তাকায় তুতান । 
মিলি -- অর্থাৎ মল্লিকা সেন । যাদবপুর ইউনিভার্সিটি । বাংলা স্নাতকোত্তর প্রথম বর্ষ , ... আর তুতান -- অর্থাৎ তীর্থঙ্কর সেন । প্রেসিডেন্সী ইউনিভার্সিটি । সোশিওলজি ফার্স্ট ইয়ার । 
পিঠোপিঠি ভাইবোন । সর্বক্ষণের খুনসুটির সঙ্গী , আবার বেষ্ট ফ্রেন্ডও । 
-
গত হপ্তায় কলেজ থেকে ফিরে বোমাটা ফাটিয়েছিল মিলিই । 
" এই যে শুনছো ? " সরমা তখন সন্ধে সাতটার সিরিয়ালে বুঁদ । কানে যায়নি কথাটা । পরের বার একই প্রশ্ন আসে , কিন্তু এবারে ডেসিবেল টা আরও খানিক চড়ায় মিলি ... " উফফ !! মা ? শুনছো ? "
-
রাতে ডিনার টেবিলে একই কথা আবার দর্শায় মিলি । 
থম্থমে পরিবেশে খাওয়া দাওয়া সারেন সবাই । খাওয়ার পর অভ্যাস বশত একবার রাতের নিউজ শুনতে টিভির সামনে বসেন বাবা , কিন্তু সেদিন আর বসলেন না , তুতানের প্রশ্নের উত্তরে ... " আজকের সেরা নিউজ দিয়েছে তোর দিদি " বলে ঘরে ঢুকে যান ।
:
এ যুগের মেয়ে মিলি। নিজের মত করে থাকতেই ভালোবাসে। ক্লাব ডান্স তার ভীষণ ভালো লাগে। ক্লাবে যখন ডান্স করে তখন সবাই জাস্ট মুগ্ধ হয়ে চেয়ে থাকে। এটায় ও আরও আনন্দ পায়। বিশেষ করে ছেলেদের হাততালি ওর ডান্সের রিদম বাড়িয়ে দেয়। আর সেখানে গিয়েই পরিচয় রোশান এর সাথে। রোশান! রত্নদীপ রয়। ও প্রেজেন্ট থাকলে মিলি আর কারোকে পাত্তা দেয় না। ওর সমস্ত মনযোগ ঐ একজনকে ঘিরে তখন। এভাবেই দুজনের কাছে আসা। এখন ওরা একসাথে থাকতে চায়। কিন্তু রোশান বলেছে ওর ফ্যামিলি খুব কনজার্ভেটিভ। বাড়ির বউ কাজ করবে বেশ। কিন্তু ক্লাবে ডান্স! নো ওয়ে! 
.
ওদিকে রোশান খাঁটি ব্রাক্ষণ ঘরে জন্মায় নি। এ কি তার দোষ? কিন্তু মিলির বাবা যে খাঁটি ব্রাহ্মণ ছাড়া মেয়েকে পাত্রস্থই করবেন না। তাহলে উপায়? রত্নদীপ শিক্ষায় কোন অংশে কম? ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার পাত্র কি কম কথা? নিজের একার ফার্ম। মাসে লাখের উপরে কামায়। নিজেদের ফ্লাট। পাত্র হিসেবে সে কম কিসে! 
.
অনেক ভেবেচিন্তে দুজনে মিলে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছিয়েছে। মিলি ওর নিজের শখ ছাড়তে পারবে না। বিয়ের জন্য যদি নিজেকে আমূল পালটে ফেলতে হয়, তবে ও বিয়ের প্রয়োজনই নেই। কিন্তু রোশানকেও ওর চাই। তেমনি মিলিকেও চাই রোশানের। কিন্তু ফ্যামিলিকেও ফেলতে পারছে না। কী করা! কী করা! অবশেষে সিদ্ধান্তে আসা। জানাতে হবে ফ্যামিলিকে। আর এরকমটা আকছার হচ্ছে! সো, প্রবলেম কোথায়?
.
প্রথমে তো শুনে মিলির মায়ের আক্কেল গুড়ুম। সিরিয়াল দেখা মাথায় উঠেছে। এর পরে বাবাও থ মেরে গেছেন একদম। কিন্তু এ যুগের ছেলে-মেয়ে! এদের চিন্তাভাবনার সাথে তারা পারবেন কেন? আর একমাত্র মেয়ে বলে কথা! সমাজ যখন মেনে নিচ্ছে তখন তাদের উদার হতে বাঁধা কোথায়!
.
হ্যাঁ, রোশান আর মিলির সিদ্ধান্তটা উভয় ফ্যামিলিই মেনে নিয়েছে শেষ পর্যন্ত। বছরের পর বছর এক সাথে থাকবার জন্য চুক্তিপত্রে সই? বাব্বাহ! ওর চেয়ে শর্তহীন একসাথে থাকবার সিদ্ধান্তটা কিছুটা হলেও প্রশান্তি দেয়। একসাথে কিছুদিন থাকবার পরে যদি মনে হয় দুজনে আরও বহুবছর একসাথে কাটিয়ে দিতেও প্রবলেম হবে না, তখন না হয় সাইন করা যাবে।
.
সে জন্যেই বিজয়ের ডাক পড়েছে। তার ফ্লাটেই কাল থেকে শুরু হবে রোশান-মিলির সুখের সংসার
। 

অক্ষর -- মানস চক্রবর্তী

(১)

ভিজিয়ে দিলে এভাবে
কেউ দেখলনা জানল না
কাক পক্ষীও

দোলা খোঁপা লাল ফিতে
গান গাইতে গাইতে
আপনমনে
চলে গেলে
চলেই গেলে

(২)

ভিজে চোখে ঝাপসা
গায়ে হাত বুলিয়ে বুলিয়ে
জিভ বুলিয়ে বুলিয়ে
নোনতা
কাঁদে
অক্ষর
অক্ষর কাঁদে

অশরীরী -- সুশান্ত হালদার

যদি চলে যাই রাতের অন্ধকারে অজানা নক্ষত্রে
কাউকে কিছু না বলে, জানবে তুমি - 
এখানেও ছিলো সবুজ বৃক্ষের প্রেমোময় ঘরবাড়ি
যারা ভালোবেসে ফুটিয়েছিলো কত শত রঙের পুষ্প রাশিরাশি।
যদি চলে যাই রাতের অন্ধকারে অজানা নক্ষত্রে
কাউকে কিছু না বলে, জানবে তুমি --
বাতাসের কাছে রেখে গেছি আমার না বলা কথাগুলি ;
যখন থাকবে একা আনমনা তুমি
জাপটে ধরে কানেকানে বলবো আমি
'এসেছি প্রিয়ে অশরীরী হয়ে --
শুধু অতৃপ্ত আত্মার না পাওয়ার বেদনাগুলো উপশম করবো বলে'।
তোমার ঐ নষ্টসমাজের সার্জারি করা মুখে থুথু ফেলি
যারা শেয়াল শকুনের করে শুধুই দালালি ;
আজ তারাই হয়েছে পরাস্ত, কি করে বলবে --
'এ কবি মুখোশ খুলেছে বলে হবে তার ফাঁসি
নয়ত গিলোটিনে চড়িয়ে আবার মারবো কোন প্রতিবাদী'।
হে ধূর্ত নষ্ট সমাজ!
এবার তোমায় দেখে আমিই হাসি অট্টহাসি,
কি করে ধরবে আমায়?
আমি বজ্র, ঐ মেঘের আড়ালে লুকিয়ে থাকি
যখন দেখি অন্যায় অত্যাচার
পাপিষ্ঠের মাথায় আছড়ে পড়ি
আমি পরশুরামের অজেয় কুঠার
জলে স্হলে অন্তরীক্ষে যুদ্ধ হবে আবার

উষ্ণতার জন্য -- জয়ীতা ব্যানার্জী গোস্বামী

শীত আগতপ্রায়
শিরশিরে মাদকতার গায়ে শুকনো ঠোঁট রেখে
ফিরে যায় যাবতীয় উত্সবমুখর রাত্রি
বন্য ছাতিমের নেশা ফিকে হয়ে আসে শিশিরের ঘ্রাণে
পঞ্জিকা দর্শায় হলুদ বসন্তের দিনগুলি
কেমন লাল বর্ণের আঁচলে ঢাকা
আবির না কি রক্ত ......
বুঝে ওঠার আগেই মৃতু এসে ছুঁয়ে যায়
বরফ শীতল অনুভবে
উষ্ণতম কবিতার আহ্বানে
স্মৃতির চাদর বিছিয়ে এখন পুনর্জন্মের আয়োজন

ভাসিয়ে দিলাম -- অমিত রায়

ভাসিয়ে দিলাম
মঙ্গলদ্বীপ ভালোর বাসনাতে
এ বয়সে কী বা আমার করার আছে আর
ওরা যেন থাকে দুধে ভাতে
নিজেকে ভুলে ভালো চাওয়াটাই সংসার ।।

ভাসিয়ে দিলাম
ঘোমটা ঢাকা, গারদ বন্দী, রঙ্গীন স্বপ্নগুলো
দেওয়ালে টাঙ্গানো সতীর অবশ্য কর্ম
ইচ্ছে প্রদীপ কোনদিন কি সাগর পেলো ?
সারা জীবন পতী সেবাই সতীর পরম ধর্ম ।।

ভাসিয়ে দিলাম
ইচ্ছেগুলো যেথায় যত গোধূলীবেলায়,
স্বপ্ন শেষ । ব্যস্ততাতে দু চোখ জাগে 
বছরগুলো ফুরিয়ে গেল পুতুল খেলায়
বাতাস এখন শান্ত বড় সন্ধ্যা রাগে

মন্ত্র --- রিক্তা চক্রবর্তী

দশমীর বেনারস
অস্থিটুকু বাঁচিয়ে রাখা খুব প্রয়োজন মনে করে
ভীষণ ভীড়ে হারিয়ে যাই আমি
-
একটা স্মৃতি ডাকতে থাকে আমায় 
যেখানে ঘুম রাখা আছে কুড়ি'র কোঠরে 
-
দশমীর বেনারস
তোমরা চলে গেছো সময়ের বালিতে পায়ের ছাপ রেখে
ভাবো বুঝি দিয়েছো আমায় অনেক
-
আমার অতীত জন্মের কথা মনে পড়ে
গন্তব্যহীন ভেসে চলা নদীতেই সম্ভব ... কিন্তু 
কথারা আজ সত্যিই বড় অবুঝ ... অসহায় 
-
দশমীর বেনারস
কথা রাখেনি নিভৃত মায়া 
আজ ফিরে যাওয়ার কথা ... তবুও প্রতিবারের মতো কথা রাখি
-
ষাটের চামড়ায় বয়সের ভাঁজরেখা 
বিসর্জনের করুণ এসরাজের ব্যাকড্রপে চাপা পড়ে যায় আলোক দ্যোতনা
তবুও ভাসিয়ে দিই শেষ প্রদীপটি ... অনুভব করি 
:
জগতের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে
আপনা আপনি ঝরে যেতে হয় 

নিবেদন -- বর্ণনা রায়

খুশির শামিয়ানায়,
ন্যুব্জদেহে আবাহনে,
পবিত্র অগ্নিশিখায়..
শুচিময় আত্মযোগে,
তৃপ্ত আনন্দযজ্ঞ—
তোমার স্পর্শ কায়ায়..

ঋজুতা সময় বশ করেছে,
বাঁধ সাধেনি আশা..
আকাঙ্খাতে জিইয়ে রাখা,
হৃদির মাঝে,
সবার ভালোবাসা..

যার তরে জীবন ভরে,
সবুজ প্রাণের আলো —
চোখের তারায়,
ছায়া ঘিরেই,
শুভেচ্ছাকে জ্বালো..

দিবাকর তোমায়,
নতুন দিনের প্রণাম..
ভাসিয়ে দেওয়া অর্ঘ্যতে,
প্রিয়র সুখের,
কাহিনী লিখো আগাম৷৷

পুনর্জন্ম -- সিলভিয়া ঘোষ

কেদার-বদ্রী থেকে ঘুরে এসে দুইদিন হরিদ্বারের হরকেপৌরী ঘাটের সন্ধ্যা আরতি দেখার জন্যই থেকে গিয়েছিলাম সাত বছর আগে ।

শাশুড়ি মা এর শখ তিনি জামাই ষষ্ঠীতে গঙ্গায় স্নান করবেন।তাই তাঁর ছেলে মা কে নিয়ে হোটেল লাগোয়া গঙ্গাতে স্নান করাতে নিয়ে গেলেন।

আর একদিন পরেই ঘরে ফেরা ।তাই মনটা আমার খুব খারাপ ছিল।হোটেলে তিন তলায় আমাদের ঘর ।আর সামনেই লম্বা টানা বারান্দা ।
সেখানে দাঁড়ালে পিছনে গঙ্গার উপল বহমানতা দেখা যায়।সকালের স্নিগ্ধ বাতাসে নিজেকে শুচীস্নাত করতে করতে প্রকৃতির এই অশেষ করুণা কে ধন্যবাদ জানাচ্ছিলাম।
হঠাৎ দেখি একটি হলুদ রঙের ফুটবল 
ভেসে যাচ্ছ ঐ গঙ্গায়। ভীষণ চেনা লাগছে ঐ ফুটবলটি কে ।আমার সারা শরীর কেমন যেন অবশ হয়ে আসছিল।

সাথে সাথ দেখলাম আমার হাবি ক্যামেরা নিয়ে ---'এই এই 'বলতে বলতে ছুটে চললেন ঐ গঙ্গায় অথচ ঐ কাঙ্ক্ষিতবস্ত অনেকটা এগিয়ে চলে গেছে স্রোতের উজানে ।

আমার হাবির চিৎকার শুনে উজানের আগে থাকা এক ব্যক্তি তাঁর পরিবারের সাথে ফটোশুটে ব্যস্ত থাকা অবস্থায় কোন দিকে না তাকিয়ে ক্যামেরা মোবাইল সমেত ঐ বলটিকে টেনে তুললেন !দেখলাম আমার সাড়ে পাঁচ বছরের ছোট ছেলে অরুণিম।

এই সব দৃশ্যাবলি আমি ঐ বারান্দা থেকেই দেখছিলাম কিন্তু কোন কথা বলার শক্তি তখন আমার ছিল না।

ছেলেকে ধরে নিয়ে তার বাবাই যখন হোটেলে ফিরলো তখন শুধু জিজ্ঞাসা করলাম-- 'কি রে ভেজা কেন শরীর টা '? 

উত্তরে সে বলল---'ঐ একটু স্নান করে আসলাম'।

আর আমি মনে মনে ঐ নর-নারায়ণ কে ধন্যবাদ জানিয়ে বললাম ----'ভগবান তুমি যুগে যুগে দূত পাঠায়েছ বারে বারে '!!

আবহমান -- শ্রীলেখা মুখার্জী

দীর্ঘশ্বাসের বাষ্প
চশমার পুরু কাঁচ আরও ঝাপসা
অতীত অধিকাংশই অস্পষ্ট
কেবল এক্কা-দোক্কা বেলাটি বেশ দৃশ্যমান--

পুতুলের সংসার সাজাতে সাজাতে
হঠাৎ একদিন আঁচলে বাঁধা হলো
দায়িত্ব---চাবির গোছা
বয়স তখন...ঠিক মনে পড়েনা
হয়তো বারো-----

সংসার সাগরে ঘূর্ণিঝড়...লোনা হাওয়ার
ঝাপটা
তবুও চাহিদা মেটানোর ব্রত পালন
নিষ্ঠা ভরে,
নিজের অস্তিত্ব মুছতে মুছতে
বর্তমানে...
নুয়ে পড়া অবয়বটুকু সম্বল----

এখন একাকীত্ব আলিঙ্গনে দিন-যাপন
শুধু অভ্যাসটাই আবহমান....
গঙ্গা-সাগর মোহনায় আজও প্রদীপ ভাসানো
ঝুঁকে পড়া অসহায় শরীরটি নিয়ে
সংসারের মঙ্গল কামনায়----

শহীদের মা -- সুধাংশু চক্রবর্ত্তী

সূর্য্য এখন অস্তাচলে একেবারে ঢলে পড়ার চরম মুহূর্তে এসে দাঁড়িয়েছে । মাঝবয়সী কুসুমবালা গঙ্গার ঘাটে এসে দাঁড়িয়েছেন জ্বলন্ত প্রদীপ হাতে । চোখে মোটা কাঁচের চশমা । তাতে ঝিলিক দিচ্ছে অস্তমিত রবির শেষ ছটা । আলোর সেই ছটাকে দ্বিগুণ ভাবে প্রতিফলিত করছে কুসুমবালার চোখে টলটল করতে থাকা অশ্রুবিন্দু । নাকের নাকচাবিটাও স্পষ্ট প্রতিভাত হচ্ছে বিকেলের ম্লান আলোকে । 
আজ সন্দীপের জন্মদিন । কুসুমবালা পুত্রকে স্মরণ করে জ্বলন্ত প্রদীপ ভাসাতে এসেছেন গঙ্গাবক্ষে । প্রদীপখানা ভাসিয়ে দেবার প্রাকমুহূর্তে কুসুমবালা থমকে দাঁড়িয়ে পড়লেন । তাঁকে এই অবস্থায় দেখে কুঁজো বলে ভ্রম হলেও তিনি কিন্তু সাধারণ নারীদের তুলনায় অনেকটাই দীর্ঘদেহের অধিকারিণী । পুত্র সন্দীপ তাঁরই মতো দীর্ঘদেহের অধিকারী ছিলো । তাতে ওর সুবিধা হয়েছিলো ভারতীয় সৈন্যদলে যোগ দিতে । শেষ বিকেলের ম্লান আলোকে সোনার চ্যাপ্টা আকৃতির চুড়ি দুটো ঝিলিক দিয়ে উঠেছে দেখে থমকে দাঁড়িয়ে পড়েছেন কুসুমবালা । দু’মাসও হয়নি সন্দীপ ছুটিতে এসে সোনার চুড়িগুলো কুসুমবালার হাতে দিয়ে বলেছিলো – “ এতদিনে আমার মনস্কামনা পূরণ হলো । তোমার সোনার চুড়িগুলো বেচে দিয়েছিলে আমাকে সৈন্যবাহিনীতে চাকরী করতে পাঠাবে বলে । তখনই মনঃস্থ করেছিলাম তোমাকে আবার সোনার চুড়ি গড়িয়ে দেবো । আমার সেই সাধ এতদিনে পূরণ হলো । আজ থেকে তোমার হাতদুটো আর খালি থাকবে না মা । ” 
সন্দীপ ছোট্ট একটা নাকচাবিও গড়িয়ে এনেছিলো মায়ের জন্য । নাকচাবিতে বসানো আছে একটুকরো আমেরিকান ডায়মণ্ড । আলো পেলেই হীরের মত ঝকমক করে ওঠে । 
ছুটির শেষে সন্দীপ ফিরে গিয়েছিলো বর্ডার পাহারার কাজে । যাবার সময় কান্নায় ভেঙে পড়া কুসুমবালাকে স্বান্তনা দিয়ে বলেছিলো – “ কেঁদো না মা । এরপর যেবার আসবো অনেকদিন থাকবো তোমার কাছে । ” সন্দীপ কথা রেখেছে । যাবার দিন কুড়ির মধ্যে একেবারে ছুটি নিয়ে ফিরে এসেছে মায়ের কাছে । ফিরে এসেছে জাতীয় পতাকায় মোড়া কফিনে শুয়ে । 
কুসুমবালার বেদনা সূর্য্যকেও যেন সংক্রামিত করেছে । তাই হয়তো অস্তমিত সূর্য্যের জবাকুসুম রঙ হয়েছে বিবর্ণ ফ্যাকাসে । নদীর বুকও রক্তাক্ত হচ্ছে কুসুমবালার দুঃখের কাহিনী স্মরণ করে । প্রদীপ ভাসিয়ে দেবার আগে কুসুমবালা ভেজা গলায় স্বগতোক্তি করলেন – “ আমার হাত তো ভরিয়ে দিয়েছিস বাছা । কিন্তু কোল ? কোল যে খালি করে গিয়েছিস । এই কোল যে আজীবন খালি পড়ে থাকবে বাছা । ” 

AGING BEAUTY -- Durba Mitra

Shape size colour
Different permutation combination
Aging myself beautifully

পুজোর ছড়া --- পলাশকান্তি বিশ্বাস

১.
 ছেলের ডাকে 

ছেলের উপর অভিমানে গতবছর আশ্বিনে
বললে দেবী, ‘যতোই ডাকিস, সামনে বছর আসছি নে।’
ছেলেও মুখর, ‘যা না চলে, দেখি মা তোর জিদ কতো !
পারবি কি আর মুখ ফেরাতে ডাক যদি হয় হৃদগত ?’
হার হল মা’র, ঠিক এল সে শরত-শিউলি-কাশ চিনে।
-----------------------
২.
 ভাসান

মেঘের কানে বললে হাওয়া, ‘দেখবি মজা বঙ্গে চল ।’
সপ্তমীতে ঝিরিঝিরি, অষ্টমীতে নামল ঢল ।
নবমীটা কর্দমাক্ত --
বিরক্ত সব শৈব-শাক্ত;
দশমীতে দেবী বলেন, ‘ভাসানের কী বাকি বল ?

স্মৃতি কণা -- জ্যোৎস্না রহমান মন

বাদাম ভাঙা খোসায় লেগে থাকা সময়
দূরত্বের গা বেয়ে হেঁটে রাতের জামা পরে-
ছাদের কার্ণিশে তুলতুলে চাঁদে স্নান সেরে

বুকপকেটে গুছিয়ে রাখা সিনেমার টিকিট
আজও লাজুক হাসিতে ভিজে রঙিন
মধুর স্পর্শের নির্জন অনুভূতি খুঁড়ে

বিভাজিত মুহুর্ত সাঁকো বেয়ে জুড়তে চাইলে
ধোঁয়া ওঠা রান্নাঘরে মশলার বিদ্রুপ হাসি
ঘামে ভেসে ব্যাস্ততায় বাস্তব ঠিকানা মেলে

সম্পাদিকার ডেস্ক থেকে

উৎসবের আলোড়ন কিছুটা স্তিমিত , তবুও মনের অলিন্দে হৈমন্তী স্বপ্ন । বারো মাসের তেরো পার্বণ প্রায় শেষ মুখে , উৎসব তিথি এখন অন্তিম লগ্ন যাপনে ব...