শনিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৬

সম্পাদিকার ডেস্ক থেকে

ডিসেম্বর ।
বছরের শেষ মাস । আরও একবার সময় কে সাক্ষী রেখে সূর্য প্রদক্ষিণের জন্য তৈরি আমরা ।
সুখ-দুঃখ , আনন্দ-বেদনা'র এস্রাজে জীবন কে বাজিয়ে নেওয়া আরও একবার ।
২০১৬ আমাদের দিয়েছে অনেককিছুই , তেমনই কেড়েও নিয়েছে অনেক নক্ষত্র'কে । বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সমাজতান্ত্রিক বহু কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে, যুক্তরাষ্ট্রসহ সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সরব থেকে বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের লড়াইয়ে সহায়তার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে ৯০ বছর বয়সে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন মৃত্যুঞ্জয়ী নেতা ফিদেল কাস্ত্র ।
ডিসেম্বর ।
বিজয়ের মাস । অগণিত সাধারণ মানুষ ও অমর শহিদ সেনাদের আমৃত্যু লড়াইয়ের মধ্যস্থতায় অর্জিত স্বাধীনতার সাক্ষর হিসেবে চিহ্নিত বিজয়ের মাস বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালিত হবে ।
ডিসেম্বর।
এ মাসের ৭ই পৌষ নিয়ম মেনে শান্তিনিকেতনে শুরু হবে পৌষমেলা। শান্তিনিকেতনের অন্যতম Cult Culture বাউল গানের মধ্যস্থতায় দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রবর্তিত পৌষ উৎসব' কে আরও একবার সরাসরি দেখে নেওয়া যাবে ।

মুঠো ভরা রোদ্দুর 'এর ডিসেম্বর সংখ্যা সেজে উঠেছে ভিন্ন স্বাদের ৩০ টি লেখা নিয়ে । বর্ষশেষের রাঙা আলোয় নতুন বছর কে স্বাগত জানানোর প্রাক্কালে , সময় নিয়ে একবার পড়ে দেখুন অনন্য লেখাগুলি ।

সকলের জন্য রইল নতুন বছরের আগাম শুভেচ্ছা ।
মোহ ফসফরাস মেখে দীপ্ত হয়ে উঠুন আগামী'তে । ভাল থাকুন ।
শুভেচ্ছান্তে ,
পিয়ালী বসু



মন্দাক্রান্তা -- ইথার অতিরঞ্জন

মোজাইক করিডোরে পোড়ামাটির টেরাকোটা ছক
মাংসের বুকে বাজে মিথুন রেকর্ডার
তার ছিঁড়ে গেলে পর নাট্যাভিনয়...
অহো,অাসল অার নকলের বাকলে মঞ্চস্থ কুমারী প্রেম
হৃৎপিণ্ডের শাখায়-শাখায় বসেছে নাটমন্দির
অহো,পূজোর ফুল কেন পঁচে প্রতিভার ভাঁগাড়ে?
মন্দাক্রান্তা,
মানব হৃদয়ে অনাবৃষ্টি।
পলাতক ধুলোয় জাগে কেলাসিত সময়ের ক্যানভাস,
কেবল অলক্ষ্যে নড়েচড়ে
অমানবিক কামোদ ফসিল
ক্লীবের ভাষায়

WARMTH -- Durba Mitra

Surrounding fog
Blurred sunshine 
Feel your embrace

হঠাৎ --- বর্ণনা রায়

একটা ফুড়ুৎ পাখির মতন
এদিক ওদিক জীবন যেমন
:
ঠোকর খাওয়া ভাঙা দিন
উতরে যাওয়া
বেবাক ফাঁকা বাক্ স্বাধীন
:
বাঁধ দিয়ে আটক নদী
চাপে পড়ে ঠেলাঠেলি
হঠাৎ মিলতে চায় যদি
:
বলার কোন সাধ্য নেই
'যেতেই পারি যাব কেন!'
খাবি খাচ্ছে সাক্ষাতেই 

ফড়িং হবো --- সকাল রায়

কোন এক নির্জন দুপুর কিংবা রোদের মিছিলে
উড়ে যাবো ফরিঙ হয়ে দুজনে
ফরিঙদের কোন বাঁধা নেই,
ফরিঙদের কোন অভিমান নেই
উড়ে যাবো সেইসব পথে যেখানে পা পড়েনি আগে
দূরের রেললাইন পেড়িয়ে, সবুজ ধানের ক্ষেতে
পৌছে যাবো মৃতপ্রায় নদীর বালুচর কিংবা লোহারব্রীজ পেড়িয়ে-
করিডোরে দাড়িয়ে থাকে অবুঝ শিশুটির কাছে
আলতো করে ছুঁয়ে দেবে কোমল শিশুমুখ।
ফরিঙ হয়ে উড়ে যাবো শহুরের ভীড়ে ভাসা নাট্যশালার ঘরে
যেখানে রোজ মানুষ সং সেজে অভিনয় করে-
ওদের চোখে ঝাপটা দিয়ে দেখিয়ে দেবো
সম্পর্ক কোন পোষাক নয় চাইলেই যা বদলে ফেলা যায়!
ভালোবাসা কোন অভিনয়ের খাতা নয় সময়ের সাথে যা ফুরিয়ে যায়!
ফরিঙ হয়ে এঁকে যাবো প্রেমের সবুজঝিল
ফরিঙ হয়ে উড়ে যাবো নির্জন দুপুর কিংবা রোদের মিছিলে
কেননা ফরিঙদের কোন বাঁধা নেই

প্রেমে অপ্রেমে --- সঞ্জীব কুমার

তারপর;
খই ছড়িয়ে চলে যাবো একদিন,
যেমন এসেছিলাম
টালটমাল শাঁখের শব্দে।
আমাদের আর কোন
ভবিষ্যৎ থাকবে না,
থাকবে না কোন যাপন-ভঙ্গীমা,
কোন মিথ্যে আশ্বাস
তবু মনে হয়
এসেছি যখন,
রেখে যাই পায়ের চিহ্ন
সন্ততির চোখের জলে
তারপর নাহয়
প্রত্নতাত্ত্বিক খুঁজতে থাকুক,
আমাদের ভালবাসার চিঠি

মুহূর্তরা ফিরে আসে --- সুব্রত ব্যানার্জ্জী‬

অনুভূতির স্পর্শকাতরতায় মায়াবী ভালোবাসা দিগভ্রান্ত
গলন্ত মোমের চলনে আদিম রিপু বশ মানে
নিঃশেষিত কফির কাপ তোমার চুম্বনের স্মৃতি ফিরিয়ে আনে
সহবাসের গতানুগতিকার শেষে নিকোটিনের ধোঁয়া অন্তিম মুহূর্তের হাতছানি

অথ দ্বিতীয় বসন্ত সংবাদ ---- জয়ীতা ব্যানার্জী গোস্বামী

রোজ নিয়মমাফিক ভাত মাখা'র জীবনে
নতুনত্ব নিয়ে এল নতুন আলুর স্বাদ
ডাইনিং এর কোণে শীতলতা জমা রাখা যন্ত্রটির
যাবতীয় নিরামিষ সঞ্চয় ট্রান্সফার হল অন্য অ্যাকাউন্টে......

সবকিছু জমা রেখে ফের শূণ্য থেকে যাত্রা শুরু হবে
পরিপাটি বিছানার চাদরে ঘুমন্ত রাত্রিবাস
আর পাথুরে মেঝে ভর্তি অপচয়ের স্তূপ সরিয়ে
এগিয়ে গেল ডিসাইনার ট্রলি........

ছয়দিনে টার্গেট পূরণের পূর্ণ প্রতিশ্রুতি নিয়েছে চাঁদ
যে যার ওয়ালেট ভরে এনেছি লুকানো স্রোত

ভেসে যাবার আগে
ট্রেনের বাতানুকূল কূপের জানালায় জমা কুয়াশা সরিয়ে নিই.....
জ্যোৎস্নায় পাল তোলে আদরের নৌকো 

ভারলাঘব --- ব্রততী সান্যাল

ওলটপালট করতে চেয়েছিলে সময়স্রোতের আবর্তন,
কামনার রামধনু খুঁজেছিলে বিরহের মহাকাশ চিরে, 

শ্রেষ্ঠ প্রেমিক তুমিই, 
উন্মুক্ত উপত্যকা জুড়ে প্রতিধ্বনিত করাতে চেয়েছিলে... 

অপার্থিব সুখ যা কিছু অপ্রাপ্ত,
যা কিছু কল্পনাতীত আমার.. 
প্রেমের অলিন্দে উপঢৌকনের পসরা সাজাতে চেয়েছিলে, সশব্দে.. 

স্মৃতিঝড়ের খড়কুটোয় ভেসে আসা মুহূর্তে মনে পড়ে,
“ অকৃত্রিম নিজস্বতাটুকু দিয়েই ভালবাসবো তোমায়, 
অপার্থিবের প্রশ্ন অনাবশ্যক, তবে.. 
জীবন জুড়ে নিশ্চিত আঁকব
ব্যক্তিগত সাধ্যসীমার সুখসংকেত....”
বললে না তো কখনও..

বাকিটা তাই আজ গল্পকথা,
উপসংহারটা অসমাপিকার বিশেষণযুক্ত... 
বাস্তবের মুহূর্তগুলি নিঃশব্দে লিখি বিষাদের কলমে, 

প্রেমের কাঁটায় বোনা উষ্ণ মিলনের দৃশ্যকল্প
দ্বিখণ্ডিত হয়েছে কবেই,
বাসনাতীত সুখপ্রাপ্তির মেকী ভারবহনে...

রোদ্দুর খুঁজে নিতে ---- সুজনা চক্রবর্তী

বেড়ে ঠান্ডা পড়েছে ক’দিন যা হোক 
"মাঘের শীত বাঘের গায়ে" প্রামাণ্য দলিলে 
ধোঁয়াসার পশরা সাজিয়ে -
দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা নামা ঝোপ ঝাড়ে সরীসৃপের হামাগুড়ি 
হিমেল স্রোত ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাওয়া বাতাস 
কেঁপে কেঁপে ওঠা শিহরণ 
খাড়া খাড়া লোম - হাতে পায়ে আড়ষ্টতা - জবুথবু ঘরে বসে থাকা আলসেমি 
লেপ - কম্বল - কাঁথা মুড়ির ঠাকুরমার ঝুলি ঈশপের গল্পে -
নস্টালজিক এডভেন্চারে উৎসুক মন, মনন ;
#
খেলারীর খেলা খেলা উৎসবে মেতে আজো ওরা 
ওই সাধারণ মানুষগুলো 
নেই চাল চুলো যাদের 
নেই পরনের কাপড় - নেই পেটে ভাত রুটি 
নেই কোন প্রতিবাদী চেতনা শিক্ষা 
নেই দাবি দাওয়া আধিকারিক বোধ বুদ্ধিটাও 
নেই কোন বিরক্তির বেজার ভ্রুক্ষেপ 
নেই অনুশোচনা 
নেই পরাজয়ের গ্লানি -------- 
#
ওরা মাটির মানুষ 
মাঠে নেমে গেছে তাই পায়ে পায়ে 
আমন-আউসের বীজ বুনছে পরম যত্নে 
উদাম শরীরে উত্তপ্ত রক্ত টগবগ টগবগ 
ধানের সুবাসের হাতছানি, সবুজ ক্ষেতের অবুঝ আহ্লাদ -
হাসছে ওরা -
হাসছে আহ্লাদে ------
কঠিন কঠোর কর্মসূচিতে 
যোগ - বিয়োগ - গুণ - ভাগ ভুলে 
প্রকৃতির কোলে নির্মল খুশির উল্লাসে ওরা 
কেবল হাসছে, হাসছে আর হাসছে -------
ওই হতভাগ্য দীনহীন সর্বহারা দারিদ্র্য দুঃসহ রোদ্দুর স্বপ্নে হাসছে বিভোর ;
#
প্রকৃতিও তাই বুঝি জড়িয়েছে ওদের স্নেহময়ীর বাহুতে 
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব জলছবি ক্যানভাসে 
নিমগ্ন আনমনা ভালোবাসা হারিয়ে দিল জড়তার যোমে
শীতলতা ঢেকে গেল একখণ্ড জমি আর কাজের ওমে -----
ঈপ্সিতের আকাঙ্ক্ষা সামান্যই ওদের 
আনন্দ আশ্রমের ছবিও উজান গাঙে বাঁধ ভাঙ্গার ডাকে --------
চল বদলে যাই কিছুটা সাহসী হয়ে ও পথেই।।।
হাওড়া, পশ্চিমবঙ্গ

কৃত্রিম আতরের গন্ধ ---- জ্যোৎস্না রহমান মন

"কেন এমন, কবে হঠাৎ,কিসের হাওয়া, তখন বিকেল
বলা বারণ.........
কি অজুহাত, কোন সে রঙিন,কখন আঘাত, জলের আড়াল
বলা বারণ ......
কে জাগে রাত, বেলা প্রহর, পোড়ো বসত
ঠিকানা তোর
চেনা দুচোখ, চেনা পালক, চিনি কি ঘর, স্বয়ম্বর "
.

কাঁচির ঠোঁটে, স্বপ্ন হাঁটা, চোখে স্রোত, গভীর জল
ডোবা বারণ..
আদুরে মন, মশলা মাখা, খোলা জানলা,পাখির ডাক
ওড়া বারণ...
একাকী ছাদ, বোবা কথন, বিষাক্ত রাত
ঠিকানা তোর..
অল্প আলোয়, দাঁত চিবিয়ে, সইতে থাকা, ইঁটের আদর
.

হঠাৎ করে, চাঁদের হাসি, ভ্যাপসা ঘরে, ছবি আঁকে
দেখা বারণ...
হলুদ বই'য়ে, ঘুমন্ত ফুল, মৃদু স্পর্শে, জাগতে থাকে
ছোঁয়া বারণ...
একান্তে আকাশ, বৃষ্টি মেঘ , ডুবিয়ে পা, নতুন খোঁজ
ঠিকানা তোর..
মরু গল্পে, বালির ফুলদানি, কাগজী ফুল, কৃত্রিম আতর 

হিমেল ---- কৌশিক চক্রবর্ত্তী

বিছানা জুড়ে আদর দিচ্ছি, 
বিদ্ধ হচ্ছি আকন্ঠ দায়ভার নিয়ে।

আকাশের ভাঙা নীলচরে রোদ
দেয় প্রশ্রয়, নির্মেঘ স্নান।
সশরীরে বন্দি আজ,
আমি শীতের একান্ত অঘ্রাণ।

সতত প্রকাশ সর্বাত্মক,
আশকারা শুধু আকাশ-- বাতাস-- নদী-- সাগর-- মাটি।

কথা দিয়েছি হিমেল সন্ধ্যে ছুঁয়ে,
আমি হব দিকভ্রান্ত, একা --
আপন কৌলীন্যে যখন হারিয়েছে হেমন্তের চিঠি।

নতুন নিমন্ত্রণের চুক্তিপত্রে আজ
খোদাই করবো দুরের সন্ধ্যাতারা, 
আহ্লাদী চারপাশে।

আদুরে পৃথিবী আবার ধরা দিয়ে
আমার কালের দখল শোনায়,
শীত যখন মিশে যায় ঘাসে ঘাসে

শীতস্নেহে তুমি একান্ত আমার ---- জাকিয়া জেসমিন যূথী

রৌদ্রতাপ প্রখর খরাময় প্রকৃতি
উপেক্ষা করা দায় 
দাবদাহে ওষ্ঠাগত প্রাণ
তুমিহীন এ পৃথিবী অসহনীয় ঠিক অতটাই...
.
বৃষ্টিমুখর ঝুম বর্ষায়
যুগল ডাহুকের রোমান্স
একা চোখে বিরহী মনে
খুঁজে গেছি, ডেকেছি তোমায় আপ্রাণ
.
পুরো একটা বছর যেন গেছে চলে
এই দু মাসে
তুমি ছিলেনা ঘিরে
নি:স্বংগ জর্জরিত নিদ্রাহীন হাহাকার....
কতটা অভিমানে হেঁটেছি উলটোপথে
সে কি জেনেছিলে?
.
দেখেছি বহুবার
জেনেছি ততোধিক
ফিরে ফিরে খুঁজেছিলে চেনা পথে
এই শেষ বেলায় শীতের উষ্ণ চাদরে মোড়ানো ভালোবাসায়
তোমার বাজুবন্ধনেই গাঢ় জীবন বন্ধন
তোমার সাথেই বাঁধা শীত সৌরভ,
তুমিই জীবনের শীতস্নেহের সুখ- যবনিকা। 

শীতের ওম --- সীমা ব্যানার্জী-রায়

আজ সারাদিন সূর্যাস্ত, দিদি! 
আবার শীত এসেছে যেমন আসে
ছুমন্তর করে ছুটে আসছে শীতের ছায়া
ইতু পূজো সমাপ্তের পরেই পৌষ-পার্বণ...
পিঠে-পুলি, মুগ-তক্তির নাচন -কোঁদন-খুনসুটি
গন্ধে ম ম করবে ঘর ও মনের আবহাওয়া
মনে পড়ে বয়াম ভরা তেঁতুলের আচার, কুলের আচার
চুরি যেত অগোচরে... 
মনের ওমে রেখে দিতে সব কিছু, 
গায়ে থাকত ন্যাপথলিনের গন্ধ মাখা
লেপ -সোয়েটার, বিছানায় আপাদমস্তক ঢাকা।
আজ আর সে সবের বালাই নেই, 
সব স্বাদ-গন্ধ-বর্ণ ঘুমন্ত প্রান্তর থেকে বহু দূরে...
..Winter tapestry

অন্তরের অতলান্ত ফুঁড়ে দেখতে চাই
আছো কিনা আজও নিভৃত আত্মা জুড়ে।
সত্যি কি জব্দটাই না করলে তুমি, ভাবি 
কেবল এখনও তুমি তেমনি পাজি, 
তেমনি পাগলি। আজ বোতাম টিপলেই ঘর গরম
শুধু আশেপাশে তুমি নেই, 
আমি জানলায় দাঁড়িয়ে দেখি স্নো-স্লিট...
আদর চাদর মেঘ, মাঝে মধ্যে ঢেকে রাখে
মানুষের পুরা্নো দ্যোতনা.....
…winter drags me down

আমার মূর্খতা বেশি, খুঁজি আমি
ন্যাপথলিন গন্ধ মাখা লেপ ও তোষক-
মায়ের কোল...
নাকি ছেড়ে দেবো সবই-ভুলে যাবো
আলুথালু শীত ইকো
নেই আজ করতলে টক তেঁতুলের আচার,
মনের দুয়ারে হাবিজাবি যাবতীয় স্মৃ্তির জঞ্জাল....

ফায়ারপ্লেস --- শুভা গাঙ্গুলী ক

ধূসর সন্ধ্যাটা বড় তাড়াতাড়ি আসে
নির্লিপ্ত উদাসীনতা নিয়ে,
নির্জনতা আরও বিষন্ন
কুয়াশার শাল জড়িয়ে
কফিটা আজকাল বেশী হয়ে যাচ্ছে,
বাতাস ভারী হয়ে এলে
প্রেসার টাও বাড়ে

কোনো এক হ্যারিকেন জ্বালা শীতের
বিকেলে
এক অষ্টাদশীকে পড়িয়েছিলাম
৩০ শব্দের মধ্যে কুয়াশার জন্মকথা
কুয়াশা ছিঁড়ে গিয়েছিলো

কানাডা থেকে মেয়ে লিখেছে
খুব স্নোফল হচ্ছে
বাগানের চেরীগুলো
সব নষ্ট হয়ে গেছে
দিল্লী থেকে ভাগনীরা গেছে
সঙ্গে নতুন গুড়ের সন্দেশ
এখন ওদেশেও সব পাওয়া যায়

অষ্টাদশীর খুব প্রিয়, শীতকাল
কড়াই শুঁটির কচুরী আর
নতুন গুড়ের পায়েশ
তারপর নাঃ সেগুলো বলার নয়
একান্ত আপন,

Fireplace এখন আর চলে না
সবই central heating,
রোমাঞ্চ না নেই আর
আরাম কেদারাটাও,
হালকা আঁচের আলো
মুখের একপাশ
কোনো এক বিখ্যাত লেখকের গল্পে
মগ্ন
হারিয়ে গেছে অনেকদিন

বিনিময় ---- জুবায়ের আহম্মদ

তোমার অবসাদগ্রস্ত গ্রীষ্মের কড়া রোদে
এক ফালি শীত জমা দিলাম
তুমি বরং ওর যত্ন নিও
যখন মাঘের বাড়তি উষ্ণতায়
দীর্ঘশ্বাসে কাটে সারা রাত্রি
খানিক শীত গায়ে মেখে নিও
বুঝে নিও কিছু স্বস্তি। 
.
তোমার অগোছালো বুনো ঝোপে
দুফোঁটা শিশির গুঁজে দিলাম
তুমি ওকে আগলে রেখো, 
যখন তোমার মন অভিমানের ঝড়ে বিদ্ধস্ত
আনমনে শিশিরে ভিজিও তোমার দুটি পা
অবাক মনের বিস্ময়ে কেটে যাবে
জমে থাকা যত নীরবতা। 
.
তুমি কেবল আমায় একটা আকাশ দিও
যেখানে বেঁধে রাখব অনুভূতির যত কথা
আর থাকবে অবিন্যস্ত শীতকালীন রোদে মাখা 
আমাদের উষ্ণতার ভালোবাসা।

মন-ঘোড়া ও শীত ---- বাসব মণ্ডল

ঘোড়ার নালে ঠকঠকানি নেমে এলে
চোখে লাগানো চামড়ার আস্তরন
ইচ্ছার কুচকাওয়াজে লাগাম দেয়

জমে যাওয়া ইচ্ছে নদীও চায়
তার গায়ে লাগুক
গিজারের ভাপ
কিন্তু জীবন বাথরুমে
সবসময় বিদ্যুৎ থাকে না

ক্যালেন্ডারের শীত মাস গুলো তে
লাগিয়ে দেব 
মোটা লাল রঙ
কামনার ঘোড়া ছুটবে সোজা
কুয়াশা সকালে
ঝাপসা হবে অতীত
আর কাঁচকোনের শিশির বিন্দুতে
মিশে যাবে
অমূল্য অশ্রুজল
"Let the captive heart gallop and gallop breaking the treacherous snow"

শীতের ছবি --- দীপঙ্কর বেরা

শীত জড়ানো বিকেল বইছে উত্তরা 
বন্ধ জানলা হিমের পরশ পশরা;
সময় ঝরা পাতার আকুল দিনান্তে 
পাখিদের নীড়ে ফেরা কোন সে বনান্তে।
মৌন হয়ে এল স্তব রূপ আলো ফিকে 
বিভ্রাট কুয়াশা ছায়া ভরে দিকে দিকে,
শিশিরে সিক্ত ঘাসের বড্ড মুখ ভার 
ধুলো বালি ধোঁয়াশায় ঠাঁই নাই তার। 

আকুল জড়িয়ে গায় ওম রেখে ঢেকে
রাত তার পোহায় না রাঙা রোদে মেখে,
পরিশ্রান্ত কর্মশালা ঘর মুখী যাত্রা
গরম মানুষী খোঁজা সময়ের মাত্রা।
শীতের দহনে ঋতু জ্বালাও আগুন 
বিশ্ব জুড়ে শীত হোক আগামী ফাগুন

হাইবারনেশন --- শঙ্খসাথি পাল

ব্যালকনির কাচ কুয়াশায় মাখামাখি 
সারা রাতের বারংবার আছড়ে পড়া পৌরুষের ছাপ 
আবছা, বড় বেশি আবছা 
ঘুম ঘুম জেগে থাকা রহস্যের দরবারী কানাড়া 
:
পাইন পাতা অত্যন্ত সাবধানে ঢেকে রাখে একখণ্ড অতীত 
উত্তরে চাবুকে হাওয়া তবু জারি রাখে তল্লাশি 
আজও পরিচয়হীন পাথরের টুকরো 
খরস্রোতা নদী জানে মেয়েবেলার নিরুদ্দেশ গল্প 
:
চোখে পড়ে রোজকার চেনা মুখ 
আড়মোড়া ভাঙা ক্লান্তি উত্তাপ খোঁজে ব্যবহৃত পুরোনো কম্বলে
সাইড টেবিলে ফাঁকা চায়ের কাপ, সিগারেট 
দু'হাতের অভ্যস্ত আড়ালে জ্বলে ওঠে দেশলাই 

শীত প্রহর ---- স্বাতী গুপ্ত

অনেক রাতে হিম মেখে রাত পাখি
ক্লান্ত ডানায় অপেক্ষা এখন
আগামী রোদেল ছোঁয়ার

...ক্যালেন্ডারে ডিসেম্বর 
আদিবাসী পল্লিতে মাদলে প্রস্তুতি 
আসন্ন উৎসবের অবসরে
:
পাতা ঝরা অরণ্যের ব্যাথা ভুলাতে
ইতস্তত বিক্ষিপ্ত বুনো সূর্য মুখী
সমস্ত উজ্জ্বলতা উৎসর্গ করেছে
:
শুকনো ঘাসের বুকে ভোরের কুয়াশা চাদর জড়িয়ে ইচ্ছেরা
উবু হয়ে বসে উষ্ণতা খোঁজে 
:
পেন্ডুলামের সাথেই দিন ফুরিয়ে 
রাত নামে নিঃসঙ্গতা নিয়ে 
তবুও যেটুকু পাওয়া নিজস্ব করে
মুহূর্ত গুলো আঁকড়ে ধরে শীত প্রহর এগিয়ে চলে.......
:
পরিযায়ী মন বাসা বাঁধে কোনো 
শক্ত সরল ডালে নির্ভয়ে......

শীতের ফিচার্স --- পিয়ালী বসু ঘোষ

শহরে এখন তীব্র কুয়াশা 
ভৌতিক সুর কুড়ে খাচ্ছে 
শীত রাতের শ্বাসমূল ....

ভুলের কোলবালিশ 
নিভু নিভু ভোর 
সুবর্ণ পালক 
আর সৃষ্টিসুখ গায়ে মাখা সূঁচালো শব্দহীন মৃত্যু 
কামড়ে ধরেছে ঠোঁট ....

দৃশ্য,অণুদৃশ্য কিংবা দৃশ্যান্তরের পথ 
শীতকাতুরে রোদ্দুরে অস্পষ্ট 
তবুও....
উন্মিলিত ভিক্ষাপাত্র মেঘমসৃণ আদরে 
বুনো ঘোড়াটাকে পোষ মানাতে চায় 

শারীরিক জ্যামিতি পাখিঠোঁটে বুনে চলে 
হিম কবিতার শরীর 
অঘ্রাণী মৃত্যু ঢলে পরে ক্যাশমিলনের ওমে 
প্রেমিক পুরুষের শিশ্ন তখন 
প্রেমাভিসারে শীত রাতের ফিচার্স লেখে 
পুটুশ পাতার ঝোপে !!

মধ্যাহ্ন হ্রদে পর্যটন বিমুখ শীত --- পারমিতা চক্রবর্ত্তী

শব্দের নিজস্ব অনুতাপ হারিয়ে পর্যটন বিমুখ শীত আসে মনের ইজিচেয়ারে
কৌশরিক প্রেম হামাগুড়ি দেয়
কমলালেবুর খোসায় , নলেনগুড়ের চৌকাঠে 

মধ্যাহ্ন হ্রদে অলিভওয়েল মাখা 
শরীর তোমায় চেয়েছিল
গ্লিসারিনের কোরক হয়ে 
'তুমি '......

আজ
নরম সাম্রাজ্যে শুধুই অ্যালকোহল
মাখা ক্লান্তি 
অালটুসি বিকেল ঢাকা পড়ে আছে 
বিষণ্ণতার ব্ল্যাঙ্ককেটে 

অপেক্ষার অন্তহীন পথ রুদ্ধ
অবিশ্বাসের আঁচড়ে
পেসমেকার রাতে হৃদয়ের গ্রামোফোনে শুধু একটাই সুর বাজে 
" দূরে কোথাও দূরে দূরে ......."

প্রহর -- রিক্তা চক্রবর্তী

শীতের বুকে ভোর নামছে 
আর রাতের সাথে তুমি অন্যের হয়ে যাচ্ছো
-
আমি তো চলেই এসেছি
সব ছেড়ে ...পিছুটান আর সময়ের সার্বিক সংস্রব 
-
রাত ফুরোলে ইথারের ঠিকানায় রেখে যাই সব বাষ্পীয় অনুভব
শব্দের কান্না আর অকালে ঝাপসা হতে থাকা চোখ 
-
চেনা শহরের বাঁকে শীত নামে --- মাপ বুঝে আজকাল
ফেলে আসা অতীতগাথা থেকে জন্ম নেয় শত সহস্য ফিনিক্স 
-
এভাবেই শীত ' নামে আমার স্মৃতি ছুঁয়ে প্রতিবার 

আকাশ ও মেঘের গল্প -- বিলকিস বি পলি

বিক্ষিপ্ত চঞ্চল মেঘগুলো যখন 
গুরুগম্ভীর হয়ে এক হয়ে যায়,
আকাশের বুকটা তখন হু হু করে উঠে 
পাছে বৃষ্টি হয়ে তারা পরে ঝরে


নির্বোধ আকাশের আর্তনাদ
বুঝে কি আর তারা??
ঝরঝর করে পরে ঝরে
হয়ে শ্রাবনের ধারা


আকাশের বুকটা খালি করে
ধরিত্রীর বুকে পরে লুটিয়ে,
তপ্ত খরায় চৌচির উম্মুখ ধরণী
বুকে টেনে নেই তাদের হয়ে উম্মাদীনি


এ যে আকাশের হারানো ব্যথা
বোবাকান্না হয়ে পরছে সেথা,
বুঝেনি কখনো তা এই ধরণী
বৃষ্টির আলিঙ্গনে হয় উদাসীনি


নিঃসঙ্গ আকাশের সাথী হতে
দুরন্ত এক মেঘবালিকা তখন যায় ছুটে,
বিমর্ষ আকাশের মুখে ফুটে উঠে হাসি
গগনবিদারী চিৎকার করে বলে সে
স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি

শুক্রবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৬

লক্ষ্যভ্রষ্ট -- সুধাংশু চক্রবর্ত্তী

উড়নচণ্ডী শর্মিলার গুণপনা নিয়ে হরিপদ’র পঞ্চমুখ হওয়াটা মেয়ের মা ননীবালার পছন্দ যে হবে না তা কিন্তু অজানা নয় হরিপদ’র । যেমনটা ভেবেছিলো তেমনটাই ঘটলো । হরিপদ’র কথা শুনে ননীবালা রাগে গজগজ করে উঠলেন – “ যে-মেয়ে পরিবার এবং সমাজের তোয়াক্কা না করে গোটা দুপুর মাঠে-বাদাড়ে উড়ে বেড়ায় মুক্ত বিহঙ্গের মতো , সাতবারের চেষ্টাতেও যে-মেয়ে স্কুলের শেষ পরীক্ষাটা পাশ দিতে পারলো না তার গুণপনা নিয়ে অত আহ্লাদ করার মতো কি এমন দেখলে হরিপদ ?” 
হরিপদ ঠা-ঠা করে হাসছে ননীবালার কথা শুনে । হেসে উড়িয়ে দিতে চায় ননীবালার শতেক অভিযোগ । ওকে দাঁত বার করে হাসতে দেখে ননীবালার পিত্তি জ্বলে গেল । একে মেয়েকে কিছুতেই বাগে আনতে পারছেন না তারওপর হরিপদ’র মুখে নিজের গুণপনার কাহিনী শুনে মেয়েটা আবার সাপের পাঁচ-পা দেখে না বসে ! 
- “ তুমি থামবে ? লজ্জা করছে না অমন একটা বেয়াদব মেয়ের গুণপনা গাইতে ? ” ননীবালা ঝঙ্কার দিয়ে উঠলেন । 
“ লজ্জা করবে কেন গো মাসি ? যা’ই করুক না কেন অমন মেয়ে আর দুটি পাবে না এই ভূ-ভারতে । ” হরিপদ গলগল করে হাসতে থাকে । 
ননীবালার দু’চোখ ফেটে জল গড়িয়ে পড়ার উপক্রম হলো । বুঝতে পারছেন না মেয়ের গুণগান গাইছে নাকি মেয়েকে উপহাস করছে হরিপদ । চোখের জল চাপতে না পেরে কপাল চাপড়ে বললেন – “ এ হলো অদৃষ্টের পরিহাস বাবা । নইলে মেয়েটা সাত বছর বয়সে নিজের শক্তসমর্থ বাপকে খায় ? বাপ বেঁচে থাকলে ও এমনটা হতে পারতো ? আমিই বা কোনদিকে যাই ? মেয়েকে সামলাবো না সংসার সামলাবো ? কোনটা করবো বলতে পারো ?”
শর্মিলার কাকা অদূরে বসে একধামা মুড়ি নিয়ে কাঁচালঙ্কা সহযোগে চিবোতে চিবোতে শুনছিলেন এদের কথা । এবার মুখ খুললেন – “ কি হে হরিপদ ? শর্মিলার অত গুণগান করছ যে বড় ? অতিভক্তি চোরের লক্ষণ ! কোনো মতলব আছে নাকি হে ?” 
হরিপদ শুনে আবার ঠা-ঠা করে হেসে কথাটা উড়িয়ে দিতে চাইলো । ধরা পড়ে গেলে সব প্ল্যান ভেস্তে যে যাবে । এখনো শর্মিলার মন বুঝে উঠতে পারেনি । তার আগেই যদি ব্যাপারটা কেঁচে গণ্ডূষ হয়ে যায় তাহলেই হয়েছে । নাছোড়বান্দা হরিপদ হাসি থামিয়ে গম্ভীর হয়ে জবাব দিলো - “ কী এমন মতলব থাকতে পারে কাকা ? মেয়েটাকে পাড়াসুদ্ধ মানুষ সর্বদাই গালমন্দ করে বলেই না ওর পক্ষ নিতে বাধ্য হলাম । ওকে অতই যদি খারাপ মেয়ে ভাবো তাহলে বিয়ে দিয়ে বিদেয় করে দিচ্ছো না কেন ?” 
কথাকয়টা উগড়ে দিয়ে তেড়ছা চোখে তাকিয়ে শর্মিলার মা এবং কাকার ভাবগতিক বোঝার চেষ্টা করলো । হরিপদ’র মনের কথা পড়তে কাকার অসুবিধা হলো না । তাই ভাবি এতো দরদ উথলে উঠেছে কেন ! পেটের ভেতর গুড়গুড় করতে থাকা হাসি চাপতে চেয়ে কাকা একখাবলা মুড়ি মুখে ফেলে চিবোতে শুরু করলেন দু’চোখ বন্ধ করে । 
শর্মিলা তখনই এসে ঢুকলো বাড়িতে । একগোছা কাঁচাতেঁতুলে কোঁচড় ভরিয়ে এসেছে । দেখেই ননীবালার মাথায় আগুন জ্বলে গেল । গলা সপ্তমে চড়িয়ে মেয়েকে বললেন – “ ওই এলেন মহারানী । হরিপদ ঠিক বলেছে । দাঁড়া , তোকে এবার বিদেয় করবো এই সংসার থেকে । ওই হরিপদ’র সাথেই তোর বিয়ে দেবো ।” 
গুলতির টিপ লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়নি জেনে হরিপদ আহ্লাদে আটখানা হয়ে তাকায় শর্মিলার দিকে । পরমুহূর্তেই ভয়ে বিবর্ণ হয়ে গেল ওর মুখ । শর্মিলার হাতে উঠে যে এসেছে আস্ত একটা কাঁচা তেঁতুলে ছরা । হাতটা তাক করে আছে হরিপদ’র টেঁকো মাথাখানা । শর্মিলার হাবভাব দেখে হরিপদ’র বুঝতে অসুবিধা হলো না শর্মিলার কোঁচড়ের সমস্ত তেঁতুলই একটা একটা করে এসে আছড়ে পড়বে ওর টেঁকো মাথার ওপর । 

তিক্ত অতীত -- রীনা রায়

হাই শুভ্র, 

সঙ্গীতার কাছে শুনলাম, তুমি নাকি জেলের ভাত ছেড়ে এখন বাড়ীর ভাত খাচ্ছো! এটা সম্ভব হল কি করে? খুব ভাল ভাল কাজ করেছো নাকি? আমার হিসেবমতো তোমার আরও তিনবছর জেলের ভাত খাওয়ার কথা----এই, তুমি আবার ভালো ছেলে হয়ে যাওনি তো! হা হা হা, ডোন্ট মাইন্ড হ্যাঁ।
পুরনো কথাগুলো ভাবলে এখন আমার হাসি ছাড়া আর কিছু আসেনা।
মনে পড়ে, আমার সব কাজেই তোমার প্রশংসায় 'পঞ্চমুখ হওয়া' দেখে আমার এক দিদি বলতো, ''দেখিস মিমি, 'অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ' হয় কিন্তু ''। তিনি তোমাকে ঠিক চিনেছিলেন ।
তোমাকে আমি যতই অবজ্ঞা করতাম না কেন, 'নাছোড়বান্দা ' তুমি কোনো কিছুই গায়ে মাখতে না। মিষ্টি মিষ্টি কথায় আমাকে ঠিক বশ করে নিতে । এখন বুঝি, আসলে তোমার 'উড়নচন্ডী' স্বভাব ঠিকমতো বজায় রাখার জন্য তোমার প্রয়োজন ছিল একটা টাকার সোর্স।
সবকিছুই তোমার প্ল্যানমাফিক চলতো, যদি না সেদিন সঙ্গীতা তোমাকে আমার সাথে দেখে ফেলতো। 
ওই তো তোমার বিবাহিতা স্ত্রীকে গিয়ে সব জানিয়েছিল, আর সে আমাদের বিয়ের আসরে এসে সবকিছু 'কেঁচে গন্ডুষ' করে দিয়েছিল। 
আর, 'অদৃষ্টের পরিহাসে' তোমাকে সেদিন জেলে যেতে হয়েছিল ।
যাক, এবার আশা করি নিজেকে শোধরাবে। 
নাহ্, তোমার প্রতি কোন আবেগ আর আমার অবশিষ্ট নেই ।


---ইতি মিমি

সম্পাদিকার ডেস্ক থেকে

উৎসবের আলোড়ন কিছুটা স্তিমিত , তবুও মনের অলিন্দে হৈমন্তী স্বপ্ন । বারো মাসের তেরো পার্বণ প্রায় শেষ মুখে , উৎসব তিথি এখন অন্তিম লগ্ন যাপনে ব...