উড়নচণ্ডী শর্মিলার গুণপনা নিয়ে হরিপদ’র পঞ্চমুখ হওয়াটা মেয়ের মা ননীবালার পছন্দ যে হবে না তা কিন্তু অজানা নয় হরিপদ’র । যেমনটা ভেবেছিলো তেমনটাই ঘটলো । হরিপদ’র কথা শুনে ননীবালা রাগে গজগজ করে উঠলেন – “ যে-মেয়ে পরিবার এবং সমাজের তোয়াক্কা না করে গোটা দুপুর মাঠে-বাদাড়ে উড়ে বেড়ায় মুক্ত বিহঙ্গের মতো , সাতবারের চেষ্টাতেও যে-মেয়ে স্কুলের শেষ পরীক্ষাটা পাশ দিতে পারলো না তার গুণপনা নিয়ে অত আহ্লাদ করার মতো কি এমন দেখলে হরিপদ ?”
হরিপদ ঠা-ঠা করে হাসছে ননীবালার কথা শুনে । হেসে উড়িয়ে দিতে চায় ননীবালার শতেক অভিযোগ । ওকে দাঁত বার করে হাসতে দেখে ননীবালার পিত্তি জ্বলে গেল । একে মেয়েকে কিছুতেই বাগে আনতে পারছেন না তারওপর হরিপদ’র মুখে নিজের গুণপনার কাহিনী শুনে মেয়েটা আবার সাপের পাঁচ-পা দেখে না বসে !
- “ তুমি থামবে ? লজ্জা করছে না অমন একটা বেয়াদব মেয়ের গুণপনা গাইতে ? ” ননীবালা ঝঙ্কার দিয়ে উঠলেন ।
“ লজ্জা করবে কেন গো মাসি ? যা’ই করুক না কেন অমন মেয়ে আর দুটি পাবে না এই ভূ-ভারতে । ” হরিপদ গলগল করে হাসতে থাকে ।
ননীবালার দু’চোখ ফেটে জল গড়িয়ে পড়ার উপক্রম হলো । বুঝতে পারছেন না মেয়ের গুণগান গাইছে নাকি মেয়েকে উপহাস করছে হরিপদ । চোখের জল চাপতে না পেরে কপাল চাপড়ে বললেন – “ এ হলো অদৃষ্টের পরিহাস বাবা । নইলে মেয়েটা সাত বছর বয়সে নিজের শক্তসমর্থ বাপকে খায় ? বাপ বেঁচে থাকলে ও এমনটা হতে পারতো ? আমিই বা কোনদিকে যাই ? মেয়েকে সামলাবো না সংসার সামলাবো ? কোনটা করবো বলতে পারো ?”
শর্মিলার কাকা অদূরে বসে একধামা মুড়ি নিয়ে কাঁচালঙ্কা সহযোগে চিবোতে চিবোতে শুনছিলেন এদের কথা । এবার মুখ খুললেন – “ কি হে হরিপদ ? শর্মিলার অত গুণগান করছ যে বড় ? অতিভক্তি চোরের লক্ষণ ! কোনো মতলব আছে নাকি হে ?”
হরিপদ শুনে আবার ঠা-ঠা করে হেসে কথাটা উড়িয়ে দিতে চাইলো । ধরা পড়ে গেলে সব প্ল্যান ভেস্তে যে যাবে । এখনো শর্মিলার মন বুঝে উঠতে পারেনি । তার আগেই যদি ব্যাপারটা কেঁচে গণ্ডূষ হয়ে যায় তাহলেই হয়েছে । নাছোড়বান্দা হরিপদ হাসি থামিয়ে গম্ভীর হয়ে জবাব দিলো - “ কী এমন মতলব থাকতে পারে কাকা ? মেয়েটাকে পাড়াসুদ্ধ মানুষ সর্বদাই গালমন্দ করে বলেই না ওর পক্ষ নিতে বাধ্য হলাম । ওকে অতই যদি খারাপ মেয়ে ভাবো তাহলে বিয়ে দিয়ে বিদেয় করে দিচ্ছো না কেন ?”
কথাকয়টা উগড়ে দিয়ে তেড়ছা চোখে তাকিয়ে শর্মিলার মা এবং কাকার ভাবগতিক বোঝার চেষ্টা করলো । হরিপদ’র মনের কথা পড়তে কাকার অসুবিধা হলো না । তাই ভাবি এতো দরদ উথলে উঠেছে কেন ! পেটের ভেতর গুড়গুড় করতে থাকা হাসি চাপতে চেয়ে কাকা একখাবলা মুড়ি মুখে ফেলে চিবোতে শুরু করলেন দু’চোখ বন্ধ করে ।
শর্মিলা তখনই এসে ঢুকলো বাড়িতে । একগোছা কাঁচাতেঁতুলে কোঁচড় ভরিয়ে এসেছে । দেখেই ননীবালার মাথায় আগুন জ্বলে গেল । গলা সপ্তমে চড়িয়ে মেয়েকে বললেন – “ ওই এলেন মহারানী । হরিপদ ঠিক বলেছে । দাঁড়া , তোকে এবার বিদেয় করবো এই সংসার থেকে । ওই হরিপদ’র সাথেই তোর বিয়ে দেবো ।”
গুলতির টিপ লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়নি জেনে হরিপদ আহ্লাদে আটখানা হয়ে তাকায় শর্মিলার দিকে । পরমুহূর্তেই ভয়ে বিবর্ণ হয়ে গেল ওর মুখ । শর্মিলার হাতে উঠে যে এসেছে আস্ত একটা কাঁচা তেঁতুলে ছরা । হাতটা তাক করে আছে হরিপদ’র টেঁকো মাথাখানা । শর্মিলার হাবভাব দেখে হরিপদ’র বুঝতে অসুবিধা হলো না শর্মিলার কোঁচড়ের সমস্ত তেঁতুলই একটা একটা করে এসে আছড়ে পড়বে ওর টেঁকো মাথার ওপর ।
হরিপদ ঠা-ঠা করে হাসছে ননীবালার কথা শুনে । হেসে উড়িয়ে দিতে চায় ননীবালার শতেক অভিযোগ । ওকে দাঁত বার করে হাসতে দেখে ননীবালার পিত্তি জ্বলে গেল । একে মেয়েকে কিছুতেই বাগে আনতে পারছেন না তারওপর হরিপদ’র মুখে নিজের গুণপনার কাহিনী শুনে মেয়েটা আবার সাপের পাঁচ-পা দেখে না বসে !
- “ তুমি থামবে ? লজ্জা করছে না অমন একটা বেয়াদব মেয়ের গুণপনা গাইতে ? ” ননীবালা ঝঙ্কার দিয়ে উঠলেন ।
“ লজ্জা করবে কেন গো মাসি ? যা’ই করুক না কেন অমন মেয়ে আর দুটি পাবে না এই ভূ-ভারতে । ” হরিপদ গলগল করে হাসতে থাকে ।
ননীবালার দু’চোখ ফেটে জল গড়িয়ে পড়ার উপক্রম হলো । বুঝতে পারছেন না মেয়ের গুণগান গাইছে নাকি মেয়েকে উপহাস করছে হরিপদ । চোখের জল চাপতে না পেরে কপাল চাপড়ে বললেন – “ এ হলো অদৃষ্টের পরিহাস বাবা । নইলে মেয়েটা সাত বছর বয়সে নিজের শক্তসমর্থ বাপকে খায় ? বাপ বেঁচে থাকলে ও এমনটা হতে পারতো ? আমিই বা কোনদিকে যাই ? মেয়েকে সামলাবো না সংসার সামলাবো ? কোনটা করবো বলতে পারো ?”
শর্মিলার কাকা অদূরে বসে একধামা মুড়ি নিয়ে কাঁচালঙ্কা সহযোগে চিবোতে চিবোতে শুনছিলেন এদের কথা । এবার মুখ খুললেন – “ কি হে হরিপদ ? শর্মিলার অত গুণগান করছ যে বড় ? অতিভক্তি চোরের লক্ষণ ! কোনো মতলব আছে নাকি হে ?”
হরিপদ শুনে আবার ঠা-ঠা করে হেসে কথাটা উড়িয়ে দিতে চাইলো । ধরা পড়ে গেলে সব প্ল্যান ভেস্তে যে যাবে । এখনো শর্মিলার মন বুঝে উঠতে পারেনি । তার আগেই যদি ব্যাপারটা কেঁচে গণ্ডূষ হয়ে যায় তাহলেই হয়েছে । নাছোড়বান্দা হরিপদ হাসি থামিয়ে গম্ভীর হয়ে জবাব দিলো - “ কী এমন মতলব থাকতে পারে কাকা ? মেয়েটাকে পাড়াসুদ্ধ মানুষ সর্বদাই গালমন্দ করে বলেই না ওর পক্ষ নিতে বাধ্য হলাম । ওকে অতই যদি খারাপ মেয়ে ভাবো তাহলে বিয়ে দিয়ে বিদেয় করে দিচ্ছো না কেন ?”
কথাকয়টা উগড়ে দিয়ে তেড়ছা চোখে তাকিয়ে শর্মিলার মা এবং কাকার ভাবগতিক বোঝার চেষ্টা করলো । হরিপদ’র মনের কথা পড়তে কাকার অসুবিধা হলো না । তাই ভাবি এতো দরদ উথলে উঠেছে কেন ! পেটের ভেতর গুড়গুড় করতে থাকা হাসি চাপতে চেয়ে কাকা একখাবলা মুড়ি মুখে ফেলে চিবোতে শুরু করলেন দু’চোখ বন্ধ করে ।
শর্মিলা তখনই এসে ঢুকলো বাড়িতে । একগোছা কাঁচাতেঁতুলে কোঁচড় ভরিয়ে এসেছে । দেখেই ননীবালার মাথায় আগুন জ্বলে গেল । গলা সপ্তমে চড়িয়ে মেয়েকে বললেন – “ ওই এলেন মহারানী । হরিপদ ঠিক বলেছে । দাঁড়া , তোকে এবার বিদেয় করবো এই সংসার থেকে । ওই হরিপদ’র সাথেই তোর বিয়ে দেবো ।”
গুলতির টিপ লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়নি জেনে হরিপদ আহ্লাদে আটখানা হয়ে তাকায় শর্মিলার দিকে । পরমুহূর্তেই ভয়ে বিবর্ণ হয়ে গেল ওর মুখ । শর্মিলার হাতে উঠে যে এসেছে আস্ত একটা কাঁচা তেঁতুলে ছরা । হাতটা তাক করে আছে হরিপদ’র টেঁকো মাথাখানা । শর্মিলার হাবভাব দেখে হরিপদ’র বুঝতে অসুবিধা হলো না শর্মিলার কোঁচড়ের সমস্ত তেঁতুলই একটা একটা করে এসে আছড়ে পড়বে ওর টেঁকো মাথার ওপর ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন