মঙ্গলবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

সম্পাদিকার ডেস্ক থেকে

নতুন বছর । নতুন সুর । নতুন বই । 
গত ২৭ শে জানুয়ারী মিলন মেলা প্রাঙ্গনে শুরু হয়েছে বাঙ্গালীর নিজস্ব দুর্গোৎসব । পড়ন্ত শীতের শেষ মিঠে ঠাণ্ডায় নিজেকে আরও একবার সেঁকে নিতে বইয়ের জুড়ি মেলা ভার । সুতরাং আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা উপচে পড়া বইপিপাসু হাজার সহস্য প্রকাশক , কবি , লেখক ও পাঠকে। সোশ্যাল মিডিয়ার নিউজফিডে এখন হট টপিক 'বইমেলা ' -- বছর চারেকের ছোট বাচ্চাটিও এখন খেলা ফেলে শনি-রবিবার এক থেকে দুই , দুই থেকে তিন , তিন থেকে একাধিক স্টলে ঘুরে বেড়িয়ে ক্লান্ত । 
      এই ফেব্রুয়ারীতেই 'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' -- 'অমর একুশ ' , বাঙালী হিসেবে আমরা নিশ্চয়ই ভুলে যেতে পারি না হাজার হাজার শহিদের রক্তাক্ত সংগ্রাম ? একুশে ফেব্রুয়ারী মাতৃভাষা প্রতিষ্ঠা দিবস । বাঙালী হিসেবে আরও একবার গর্বিত হওয়ার দিন একুশে ফেব্রুয়ারী । 
      উৎসবের এই মরশুমে রোদ্দুর পা রাখলো দশ মাসে । এই দশ মাস যাঁদের সৃজনশীল লেখনীতে সেজে উঠেছে রোদ্দুর , তাঁদের সবাই কে উজ্জ্বল ধন্যবাদ । 
     ভাল থাকুন সকলে এবং ভাল লিখুন    Because writing is the reflection of unsaid voices . 

শুভেচ্ছান্তে ,
পিয়ালী বসু 


চরিত্র টি কাল্পনিক ~ শমিতা চক্রবর্তী

আমি সুলগ্না  সেন ----
বহুদিন পর হাতে কালি কলম ;
আমার অবক্ষয়ের দিনলিপি !
মনে পড়ে সেই সব দীন ?
বয়স -সন্ধির স্বপ্ন নিঙড়ে
কুঁড়ি কুঁড়ি ভালবাসা
দিয়েছিলাম তোমায় ?
বলেছিলে উচ্ছ্বল ঝর্ণা আমি
ডাগর দুচোখে প্লাবনের পূর্বাভাস !
বিহ্বল আমি ,চঞ্চল আমি পরম
পাওয়া য় অনাবিল অবকাশ
চলতি জীবন -- বহমান নদী ----
থমকে দাঁড়ায় ভাঁটার টানে ,
পড়ন্ত ভালবাসার রঙ ফিকে হয় --
তোমার ও মন বাঁক নিয়েছে
কখন অন্য -মনে !
বিষাদ মেঘে আকাশ ছাও য়া --
দুমড়ানো মন , মোচড়া ন বুক
ডুকরে কান্না চুপিচুপি ,
আমি সুলগ্না  --------
লিখেই চলি - অবক্ষয়ের দিনলিপি !

অতীত ~ চন্দ্রাণী বসু


পোড়া নিকোটিনের গন্ধে,
আজও তো ঘুম ভাঙে রোজ,
তবু নেশা লাগে কই?
দামী লিপস্টিকে সেজে,
আজও ঠোঁট লাল হয়,
তবু পোড়া মন ফ্যাকাসেই রই।
টিপ গুলো ঝরে যায় ,
ঝকঝকে আয়নায় মুখ দেখি ,
কপালে টিপের দাগ এখনো মোছেনি।
তোর কাছ থেকে চলে
এসেছি তো সেই কবে....
তোকে ছেড়ে আসা আজও হয়নি

আলগা মুঠির ফাঁকে ~ আমি পিয়ালী

শীত শেষ হতে আরও কিছু বাকি , শেষ রাতে কোকিল ডাকে দেখি পুলকভরে - মধ্যবসন্তের ভাবনা গুলো ফিরিয়ে এনে ! বাড়ির হাতার মধ্যে বোগেনভালিয়ার ডাল গুলো তে এখন আর পাতা দেখা যায়না ! এখন ওরা ঋতুমতী , ফল হবে ওদের ! তোমার মনে আছে আমাদের পাখি পোষার সেই মিথ্যে শখের দিনে আমরা কেমন শাল বনে উড়ে উড়ে ঘুরে বেড়াতাম ! মহুয়ার মিষ্টি গন্ধ বাতাসে ভাসতো আর পথের ধারে ফুটে থাকা পুটুস ঝোপে তখন কত রঙ ! 
ছত্তিশগড় বেড়াতে এসে এ অঞ্চলের জঙ্গল পাহাড় কে ভালোবেসে তুমি এমনই এক পাখিডাকা ভোরে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললে এখানেই থাকবে , বেয়ারা জেদ তোমার - কেয়ারটেকার কে দিয়ে খোঁজ খবর নিয়ে কিনে ফেললে দুকামরার এই আশিয়ানা ! জানো এখন এখানে গত গ্রীষ্মে শুকনো পাতায় আগুন লেগে বাড়ির একাংশ পুড়ে গেছে - তোমার কলকাতার সাতাশ তলায় সে গন্ধ পৌঁছায়নি ! কোথা থেকে ঠিকানা নিয়ে ওই বুড়ো ঠিক খুঁজে নিয়েছে আমায় - জোর করে নিয়ে এসেছে এখানে ! আমি তার ঝিমধরা লাল চোখ কে অগ্রাহ্য করতে পারিনি, তোমাকে জানাইনি! কেনই বা জানাবো -ক্ষনজন্মা বর্ষার মত আমাদের ভালোবাসার ইতিদিনে এ বাড়ি তুমি বেঁচে দিতে চেয়েছিলে , মুক্তি চেয়েছিলে পথের পাশে ফুটে থাকা জারহুলের হালকা বেগুনী স্মৃতি আভা থেকে ! 
তোমার অনেক অভিযোগ ছিলো বিষাদ আমার বিলাসিতা বলে ! সে অভিমান ছুটে গেছে কবে ! আমারও তরী কূল পেয়েছে অন্য বিশ্বাসে - কিন্তু কি এক দ্রবণের উৎপল উৎপাতে আমিও আজ চোখ দুটো কচলাচ্ছি বারবার ! 
কোথা থেকে লোক জোগাড় করে এনেছে বুড়ো! কোনো রকমে রাত্রিবাসের যোগ্য করে সারিয়ে তুলছে একটা ঘর, আর আমি বাড়ির পিছনে তির তির করে বয়ে চলা সেই শুকনো নালা টার ধারে দাঁড়িয়ে অভিমান এর সংজ্ঞা টা আরও একবার ঝালিয়ে নিচ্ছি ! মনে আছে তোমার শীত রাতের শেষ ভোরে দাঁতাল বুনো শুয়োর গুলো এ নালায় জল খেতে আসত , ওদের আওয়াজে বিরক্ত তুমি আমার বুকে মাথাটা গুঁজে দিতে এসে আচমকা ঘুম ভাঙ্গা ভোরে! আজ দেখছি ছুঁয়ে - সব একই রকম আছে যেখানে যা কিছু ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে গেছিলাম আমরা ! জানি,খুব জানি তুমি এলে এবার আর ফিরতে পারতে না , তাইতো জানাই নি ! যে মুঠি একদিন ঘৃণাভরে আলগা করে দিয়েছিলে সেই মুঠির মধ্যেই তোমার ডেনিম শার্টের তিন নম্বর বোতাম টা সেদিন ধরে রাখা ছিলো - আজ মনে হলো মুক্তি হোক তার পরম স্বস্তিতে , অবুঝঅভিমানে ! 
মন বলছে . . . 
"প্রেমেরে বাড়াতে গিয়ে মিশাব না ফাঁকি
সীমারে মানিয়া তার মর্যাদা রাখি 
যা পেয়েছি সেই মোর অক্ষয় ধন 
যা পাইনি , বড় সেই নয় "

একটু উষ্ণতার জন্য ~ চঞ্চল নায়েক

ঘুম জড়ানো শরীরে তোমার চুম্বন স্বাদ অমৃত !
লেগে আছে এই সজাগ শরীরে আজও...
হৃদয়ের স্পন্দনে এখনও সুখময় অনুভূতি !
জিভের পেলবতায় শিরশির করে আমার হৃদপিন্ডটা
তুমি আমায় অকাল-ঘাম দিয়েছো...
শীতের অভিমান হোক !
আমি পরিযায়ী হয়ে উষ্ণতা নিতে যাবো আবার
উত্তুরে বাতাসের কানে বলে যাব, তুমি লজ্জা পেয়োনা...

আমি ও আমার কামদুনি ~ প্রবীর শর্মা

খবরের কাগজে হেডলাইন
টিভির পর্দায় ব্রেকিং নিউজ
তোমরাই বা বাদ যাবে কেন
আমায় নিয়ে হোক না তোমাদের
মুখরোচক কাব্য, গল্প বা উপন্যাস
আর কামদুনি থাক কামদুনিতেই.

স্মৃতির আসমান সাঁতারু অভিমান ~ লুতফুল হোসেন

বাঁ বুকের পকেট থেকে
ভাঁজ খুলে চিঠিটাকে মেলতেই
ঝুপঝাপ লাফিয়ে বেরুলো
ডজন তিনেক নীল রঙের শব্দ।
ঠিক হাত ফস্কে ছিটকে পড়া
ক’খানা ছুটন্ত মুড়ি-মুড়কির মতো।
সেই ছত্রিশ শব্দে গভীর বোনা ছিল
বলা না বলা প্রায় শতেক অভিযোগ
অকস্মাৎ তিরিশ বছর পর
কোন মলাটের ভেতর থেকে
পুরোনো সেই চিঠিটা আজ
বেরিয়ে এলো হঠাৎ আবার।
তাকে ঘিরেই ভাবনা চিন্তা
একঝাঁক চঞ্চল পাখির মতোন
স্মৃতির ঝাঁপি খুলে করোটিতে
উড়তে শুরু করলো দুর্বার।
চারভাঁজের ওই কাগজখানা
থাকে অমনই, হাতে ধরা।
বুকের ভিতর বাতাস জুড়ে
বাজতে থাকে হাজার কথা।
পিয়ানো আর সাক্সোফোনে
মান ভাঙানো স্মৃতির পরম্পরা।
অনন্ত সময় ধরে থাকি, ছুঁয়ে থাকি,
কোষে কোষে নৃত্যরত স্মুতির জোনাকী।
ভুল করেও ভাঁজ খুলিনা চিঠিখানার,
অভিমান টুপ টাপ ঝরে যদি আবার !

আলোর প্রত্যাশা ~ সুনীতি দেবনাথ

আমি রাতের আঁধারে যখন নিমগ্ন হয়ে যাই, 
আর আমি আমার আত্মাকে নিয়ে একা একা
অন্ধকারের পাটাতনে বসে লোফালুফি খেলি,
তখন কোন কোনদিন একফালি চাঁদ মলিন হয়ে
আকাশের এক কিনারা থেকে চুপিচুপি চেয়ে থাকে
আর শেষ রাতের কুয়াশার আস্তর ছিঁড়েখুঁড়ে
কিছু কিছু মিটমিট তারা ক্ষীণ সবুজ আলো
ছুড়ে দেয় বহুকালের প্রাচীন এই পৃথিবীর পিঠে।
:
মহাকালের অতি ক্ষুদ্র এক খণ্ডাংশে এই অবস্থানে
আমি মানুষের সংসারে খুব বেশি সম্পদ সুখ চাইনি,
চেয়েছি শুধু কেউ বেশি কেউ কম নয়
 সমান সমান সবার মাঝে ভাগাভাগি হোক মৌল সম্পদ আর অধিকারের।
এই চাওয়া সবচেয়ে বড় চাওয়া জানি আর তাই
জীবনের শেষ দিগন্তে হিসেব - নিকেশ মেলাতে গিয়ে দেখি,
আমাকে ঘিরে থাকা রাত্রির আঁধারের দীর্ঘশ্বাস
আমাকে জড়িয়ে থাকা মৃত্তিকার অশ্রুসিক্ত বন্ধন
অরণ্যের অন্তর জোড়া হু হু হতাশ্বাস আর
নদীর কলোচ্ছ্বাসে সুগভীর ক্রন্দনের রোল।
:
এতোসব কিছু আমাকে ঘিরে থাকা আকাশ বাতাস
আর কল কোলাহল রত জীবনের হা হুতাশ —
সবকিছু আমাকে ক্রমাগত দিনের পর দিন
যণ্ত্রণার ভিন্নতর কুৎসিত মানচিত্রে নির্বাসিত করে
আমার কবিতায় তাই আগুনের তাণ্ডব চিরদিন
আমার কবিতার আর্তনাদ আকাশ করে ফালাফালা আর —
কবিতা শেষ রাত্রির আলোর প্রত্যাশার বিলাপ
:
এবার আলোর প্রার্থনা আর স্বপ্নিল নতুন সকালের
সুবিমল কামনায় আমি স্নিগ্ধতায় শেষ ডুব দিতে চাই।

সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

যুক্তিহীন ~ শান্তনু দে

"ভেবেছিনু কোথা তুমি স্বর্গের দেবতা, 
কেমনে তোমারে কব প্রণয়ের কথা।" 
হয়তো তুমি স্বর্গে,বেহেস্তে কিংবা হেভেনেতে থাকো
মানবীয় প্রণয় কি আদৌ মনে রাখো ? 
জানিনা আমি বিকৃতসত্যের পূজারী কি না...
যুক্তিতে কি ভালোবাসা মাপা যায়,হে মোর বিধাতা..?

আমি দলিত ~ সুদীপ্তা নাথ

ধলেশ্বরীরর বাঁকে এখনোও কি দাঁড়াও মহীতোষ?
সে কি লুকিয়ে আসে এখনো!
নাকি দলিত ছেলের সাথে প্রেম তার পোষাচ্ছে না আর!?
শহুরে ইউনিভার্সিটিতে তোমার হাঁটুর বয়সী ছেলেমেয়েগুলো তোমায় অপমান করলো,
কম নম্বর পেয়ে তোমারই এক ছাত্রী,সোশ্যাল মিডিয়ার ঘটা করে লিখলো তুমি পাড়াগাঁয়ের গণ্ডমূর্খ,ইউনিভার্সিটির পরিবেশ দূষিত করছো।
অধ্যাপক তুমি,কতো লেকচার, কতো লেখা সব নস্যাৎ করে গেলো তোমার দলিত পরিচয়।
তোমার নামে ওরা কুকুর পুষলো ক্যাম্পাসে।
সেদিন তুমি অঝোরে কাঁদলে,
বুঝলে,
দলিতের জ্বালা জলাতঙ্কের ক্ষত-জ্বরের থেকেও কতো কতো বেশি জ্বালাময়ী।
বন্ধুহীন, সম্বন্ধহীন তোমার দলিত অবস্থান।
তোমার মেধা,তোমার সংগ্রাম,তোমার পরিশ্রম, কঠোর অনুশীলন.....সবটা যে কেউ দেখতে পায় না মহীতোষ।
এ পচে যাওয়া সমাজ দেখতে চায় না তোমাদের,
অতোটা বুকের পাটা এখনও যে তৈরী হয়নি আমাদের।
রাজনীতির সাপলুডো খেলায় কতো মহীতোষ ঝরে যায় অকালে।
দলিত মরলে তো শোকমিছিল নিষ্প্রয়োজন।
তুমি তোমার জন্য বাঁচো মহীতোষ,
তোমার ভেতরকার আগুনটাকে হাতিয়ার করে উঠে দাঁড়াও।
মহীরুহ হয়ে ওঠো মহীতোষ,
গভীর থেকে আরো গভীরে প্রোথিত হোক তোমার সংগ্রামের তেজস্বী আগুন-বীজ।
পিষে মেরে ফেলার আগে গলা ছেড়ে আরেকবার গাও -
"Where the mind is without fear and the head is held high,
Into the heaven of freedom my father,
Let my country awake..."

সেই মেয়েটার গপ্প ~ চন্দ্রাণী বসু

হসপিটালের সাদা দেওয়ালটাও
অস্পষ্ট কালো কালো দেখাচ্ছে।
সামনে ঘিরে থাকা সব মুখ গুলোও
অচেনা হচ্ছে প্রতিটি নিঃশ্বাসের সাথে ক্রমশ..
অক্সিজেন মাস্কের ভিতর থেকে
মেয়েটা প্রাণপণ চিৎকারে বলছে....
আমি আছি !! এই তো আমি!!
কেউ শুনছে না কেন??
বাঁ হাতের রক্তের সূঁচটা
নার্স খুলে নিচ্ছে কেন??
মেয়েটা প্রাণপণ চিৎকার করছে ....
রক্ত চাই!!রক্ত চাই!! আমি বাঁচতে চাই...
ছোট্ট ডানপিঠে মেয়েটা,
একদিন শুধু রক্ত দেখলেই ভয় পেত।
সামান্য রক্তপাতে কেঁদেকেটে বাড়ি মাথায় করত।
ভয়ে দৌড়ে মাথা লুকোতো মায়ের কোলে..
চোখ বুজতো বোকার মত।
যেন চোখ বুজলেই সব রক্ত বওয়া থেমে যাবে।
থামেনি সেদিন রক্ত বওয়া ...
পাঁঠাবলি দেখে যেদিন অজ্ঞান হয়ে গেল
তারপরও তো থামেনি বলির আদিম উল্লাস।
যেদিন শ্বশুরবাড়িতে প্রথম কপাল ফাটল দেওয়ালে
সেই উল্লাস সেদিন আবার শুনেছিল মেয়েটা।
চোখ বুজে নয় ,
এবার চোখ খুলেই সে দেখল,
ফোঁটা ফোঁটা রক্তে দেওয়ালের বুকটা, বড় সুন্দর দেখাচ্ছে।
যেন ঠিক প্রেমিকের বুকে ভালোবাসার ক্ষত।
রক্তের সাথে এই তার সখ্যতার শুরু .....
হতচ্ছাড়িটার কপালে তাও সইল না বেশিদিন ...
শরীরের রক্ত গুলো তার অগাধ ভালোবাসা পেয়ে,
ক্রমশ গলে গলে জল হয়ে গেল।
তারপর শীতল হতে হতে একদিন রক্ত বরফ।
আজ আর একটুও বইছে না উষ্ণতার লাল বর্ণ।
শরীরে এত শীতলতা কেন?
অক্সিজেন মাস্কের ভিতর থেকে
মেয়েটা প্রাণপণে চিৎকার করে বলছে
রক্ত চাই!! রক্ত চাই...আমি বাঁচতে চাই!!!.
কেউ শুনতে পাচ্ছে না কেন আজ??
শুধু কে যেন এসে সাদা কাপড়ে মেয়েটার মুখটা ঢেকে দিয়ে গেল।

তোকে ~ বাসব মণ্ডল

তোর হাতের চেটোর দ্রাঘিমাগুলোকে
অনুভব করতে পারিনি ,কোনোদিন-
অনুভব করেছি
প্রত্যাখানের ব্যাথাগুলোকে
:
তোর চোখের স্নিগ্ধতাকে
নিজস্ব বলতে পারিনি,কোনোদিন-
নিজস্ব বলেছি
নিদ্রাহীন রাতগুলোকে
:
তোর দুঃখের কান্নাগুলোকে
মোছাতে পারিনি,কোনোদিন-
মুছে ফেলেছি
স্বপ্নে আঁকা কল্পচিত্রগুলোকে
:
তোর নিঃস্বাসের উষ্ঞতাকে
আত্মস্থ করতে পারিনি, কোনোদিন-
আত্মস্থ করেছি
সার্বিক শূণ্যতাকে
:
এখন
বাঁচার রশদ শুধু
বইয়ের ভাঁজে রাখা চ্যাপ্টা গোলাপ
আর
সান্তনা শুধু
মরমে বোঝা সেই রবি গান-
"ভেবেছিনু কোথা তুমি স্বর্গের দেবতা
কেমনে তোমাকে কব প্রনয়ের কথা।"

একটি না আঁকা ছবি ~ মিঠুন চক্রবর্তী

আকাশতো একটি আশ্রয় কল্প।
মনে করো স্বরবর্ণ মানুষগুলি
হাঁটছে ব্যঞ্জনবর্ণের মতো
বন্ধনীর ব্যারিকেড হীন ছায়াপথে,
আলোকবর্ষ গুলি প্রেমিকার শৃঙ্গারে ডোবানো
:
একটা সহজ সরল ছবি
ইচ্ছে করলেই আঁকা যেত অনায়াসে
অসুখে মায়ের হাতের তৈরি পথ্যের মতো
যদি আকাশের রং সবার মুখস্ত থাকত 

তবুও ~ প্রণব বসুরায়

মুড়ির ঠোঙার মতো যাবতীয় প্রেম প্রেম খেলা
ডুবে যায় চোখের আড়ালে মরা ঝিল-জলে—
ছেঁড়া ছবি, ভাঙা চাঁদ, অসমাপ্ত ভুলভাল গান
আবর্জনা হ’য়ে, নিশুত রাত্তিরে, কোথায় হারায়?
:
বাসন্তী পঞ্চমী, হলুদ পাপড়ি, অন্যমন শ্লোক 
ধেয়ে যায় প্রাক্তন প্রেমিকের অকেজো ঠিকানায়...
তবুও পরের দিন দধিকর্মার আয়োজন হ’তে থাকে 

আমার সকাল ~ সুজাতা ঘোষ

ঘুম চোখে প্রথম দর্শনেই এক অলস শালিখ
তাহলে কি দিনটায় তালা পড়ে গেল?
অকারণেই মনের মুখ ভার
:
জানালার বাইরে মেঘ কালো
দূরের বহুতল ঢাকা ধোঁয়াশার পরতে...
ভালো লাগে না... মনের মুখ ভার
:
কাজের মাসির ননদের শ্বশুর বিগত
আজ আর আসবে না সে...
পড়ে থাকবে বাসন। মেঝেতে ধুলোর পরত
বাসি বিছানা; ছাড়া কাপড়
:
ব্যাটা একলা শালিখ
দিলি তো আমার দিনটাতে তালা মেরে?
:
কি আর করা। মনের মুখ যে বন্ধ -
বাকি দিনটার ওপর যবনিকা টেনে দিল... শালিখ

রঙ ~ রিক্তা চক্রবর্তী

রঙের পরত এখন বিলুপ্ত
এখন শুধু সাদা কালো চিনি
প্রিয় মানুষের চলে যাওয়াটা
অর্ধেক ব্যাকুলতা আর অর্ধেক শোক
:
প্রতি বছর উৎসবের পার্বণে
তাই ঘেঁষি না রঙের কাছে
সাদা কালো মেশানো এই জীবনে
আমি স্মৃতি নিয়ে বাঁচি
:
মা চলে গেছেন আজ দু বছর
আমারও চোখে জল আসে
একটা অস্পষ্টতা গলায় চেপে বসে
এক সাথে লক্ষ্মীর পাঁচালী মুখস্থ বলবো
:
কথা রাখেন নি মা
আর তাই আমিও শিখিনি
জামাকাপড়ে রঙীন সেজে কিভাবে ঢেকে রাখতে
ভিতরের হাহাকার
:
আমি সাদা কালোতেই সুখী

ক্যানভাস ~ বাসব মণ্ডল

চিত্র-১
------

বিয়ারের ক্যানটা রাস্তায়
হালকা হ্যেঁচকি
চোখ দুটো প্রায় বন্ধ
অতৃপ্ত হৃদয় কে,গাড়ি বন্দি করে
তৃপ্তি খোঁজার আস্তানায়
:

চিত্র -২
-------
সাজানো ফ্ল্যাট-ডিজাইনার ডোরম্যাট
চোখ টানে
এথেনিক টেরাকোটা ফ্লাওয়ার ভাস
দেওয়ালে রবি ভার্মা,ভ্যান গগ্
মনে না মেলা সর্পিল ছক
.
.
হৃদয়ের পাকস্থলিতে,
বদ হজমের চোরা স্রোত।
আর শরীর জুড়ে
অন্তহীন চার্বাক বোধ

ক্লীব লিঙ্গ ~ সৌগত মজুমদার

বাসুকি রাত / অভিসম্পাত / চেরা কাল / বিষ দাঁত।
একই খয়রাত / দহন হঠাৎ / পোড়া ছাল / চিৎপাত।।
***
বায়ু বেগ / ভীষণ আবেগ / ছারখার / রাত ভোর।
স্নায়ু তেজ / পশ্চিমী মেঘ / আন বাড় / নেশাখোর।।
***
পুরুষ ফুল / নাগকেশর / চাইছেই / খাঁচাটা।
একই ভুল / পরশপাথর / ভুলছেই / বাঁচাটা।

নির্বাক প্রতিবিম্ব ~ রীনা রায়

একটা আয়না আমাদের মাঝে
একদিকে আমি দাঁড়িয়ে
দেখি, ওদিকের তোমাকে ।
তুমি আর আমি তো একজনই
আমি কাঁদলে, কাঁদো তুমি
আর তুমি কাঁদলে আমি
শুধু পারিনা জলটা মুছে দিতে
মাঝের কাঁচটা কঠিন ভীষণ
পারেনা দূরত্ব একচুলও কমাতে
দূরে সরে যাই যতই
বেড়েই চলে দূরত্ব
ক্ষুদ্র থেকে আরও ক্ষুদ্র
বিন্দু হয়ে মিলিয়ে যাচ্ছো।
দু’জনের মাঝে শুধু জেগে থাকে
অসহায় একবিন্দু নীরবতা 

ডায়রি ~ অনিরুদ্ধ ব্যানার্জি

কষ্টেরা সব রাতের আড়াল খোঁজে,
সুখের বোঝা শুধুই সকাল চায়-
কষ্ট থেকে সুখেরই মাঝখানে,
একটা গোটা রাত্রি পেরিয়ে যায়...
:
কান্না তুমি বালিশ চেন শুধু
রাত্রি জানে সমঝোতার ই মানে।
সকাল তুমি মুখোশ ভালোবাসো,
গোপন কথা আয়না টুকু জানে...

বেশ তো আছি ~ লাভলী বসু

কেমন আছিস আমায় ছেড়ে ?
কেমন আছিস অনেক দূরে ?

:
তোরও কি আজ লাগছে ফাঁকা 
আমায় ছাড়া একা একা ?

:
এই তো সেদিন খুব কাঁদালি 
পথ আলাদা বুঝিয়ে দিলি 

:
জানিস আমার ঘুম আসেনা 
রাতপাখীদের ইচ্ছেডানা 

:
এখনো আমার একলা ঘরে 
অঝোর ধারায় বৃস্টি পড়ে 

:
আজও যেমন লিখতে বসে 
বানভাসী মন তোকেই খোঁজে 

:
সূর্যোদয়ের স্নিগ্ধ ভোরে 
তোর মুখটাই মনে পড়ে 

:
তবুও আমি বেশ তো আছি 
স্বপ্ন নিয়ে ভালই বাঁচি 

বন্ধু তোমায় ~ সুদীপ্তা নাথ

মননে আনাগোনা করে ভবঘুরে দিন,
কোন সে আলেয়ায় যে হারালাম তোমায়!!
ধূমায়িত উষ্মায় চাপ চাপ অভিমান,
ছুঁয়ে দেখেছো কখনো!??
কোন অকাল বসন্তে এলো প্রেম,
বানভাসি সময়....নোনতা আবেগ
:
যদি বলি পিকাসোর ক্যানভাস থেকে লাল চেঁছে নিয়ে,
রাঙাবো তোমার প্রিয় কৃষ্ণচূড়া?
ফিরে চাইবে কি একবারও!?
আমি বৃথাই তবে পেতেছি রঙ-তুলির সংসার।
লাল ভেবে আগুন রেখেছি ভরে...বেরঙিন ভায়ালে।

কাব্যাভিমান ~ অরুণজীব রায়

আর কবিতা লেখেনা সাগ্নিক। সময়ের দোলাচলে দুলতে দুলতে এক-দুই-তিন করে যখন তার নবম কবিতার বইটি প্রকাশিত হয় --- একটি কবিতা নিয়ে প্রচুর সমালোচনামূলক চিঠি পেল সে। পূর্ব প্রকাশিত আটটি কাব্যগ্রন্থ সর্ব সাকুল্যে একশো কপি করেও বিক্রি হয়নি। অথচ এই নবম কাব্যগ্রন্থে তার চিঠির সংখ্যা ছাড়িয়েছে দশ হাজার।
:
কেউ বলছেন, "আপনার কবিতায় কোন ধার নেই।" কেউ বলছেন, "এতো সাদামাটা ভাষায় কবিতা হয় নাকি!" আবার কেউবা, "আরে মহাশয়, কবিতা পড়ে যদি একটু ভাবনাই না পেলো তো আপনার বই কিনতে যাব কেন।"
:
আজ সাগ্নিক বুঝতে পারে কেন টলস্টয় বলেছিলেন, "আমার লেখাকে রাশিয়ানদের মানে না নামিয়ে, রাশিয়ানদেরকে আমার লেখার মানে উন্নীত করুন।" বুঝতে পারে রবিঠাকুরের সেই "জামা" আর "মোজা"র মর্ম।
অভিমানের শেষ ভাষায় সে লিখে চলে---
"যে ভাষা হারায়ে কাব্য প্রবেশিল অন্তরে মম
দুর্ভেদ্য কাব্যের প্রাচীরে ভেদিল সে শিকড় সম।"

একমুঠো বাতাস ~ সুধাংশু চক্রবর্ত্তী

ছেলেটা কোথায় চলে গেছে জানা গেল না। চলে গেছে? নাকি গুম হয়ে গেছে? সেলফোনটা পড়্বে রয়েছে পড়ার টেবিলের ওপর। হয়তো জেনেবুঝেই ফেলে গেছে। পাছে ধরা পড়ে যায় সেই ভয়ে! নয়তো সাথে নিয়ে যাবার সুযোগ পায়নি! অসহায় বিপ্রদাসবাবু কি করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। মা হৈময়ন্তী কেঁদে কেঁদে চোখদুটো ক্রমাগত ফুলিয়ে চলেছেন। এক মাত্র সন্তান। সে যদি না বলে কয়ে কোথাও চলে যায় তাহলে কান্না ছাড়া আর কিই বা পড়ে থাকে হাতে?
ক’মাস ধরেই গুজুর গুজুর ফুসুর ফুসুর করছিলো কতগুলো ছোকরার সাথে। মাঝখানে দু-তিন রাত ঘরেও ফেরেনি। ফিরেছিলো পরদিন সকালে। উদ্ভ্রান্ত চেহারায়। বিপ্রদাসের বকাঝকা আর হৈমবতীর কান্নাকাটিতে এতটুকুও পালটায়নি ছেলে। তারপর গত সন্ধ্যে থেকে একেবারে বেপাত্তা!
দিন গড়ায়। মাস গড়ায়। বছর গড়িয়ে যায়। ছেলে ফেরে না। বছর ঘুরে ঘুরে মাঝবয়সী বিপ্রদাসবাবু বৃদ্ধ হলেন। চোখের জল মুছতে মুছতে হৈমবতী দৃষ্টি খুইয়ে অন্ধ জবুথবু হয়ে পড়েছেন। সেই যে বেপাত্তা হলো আর কোনো খবরই পাওয়া গেল না ছেলের। যেন একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল পৃথিবীর বুক থেকে!
ঠিক বারো বছরের মাথায় ছেলের শ্রাদ্ধশান্তির ব্যবস্থা হলো। শাস্ত্রমতে তেমনটাই যে করতে হয়। আগামীকাল সকালে কাজ হবে। দুপুরের সামান্য কিছু মুখে দিয়ে বিপ্রদাসবাবু পূজার সামগ্রীগুলো গুছিয়ে রাখতে বসেছেন। তখনই পিয়োন এসে লিফাফা বন্দী একটা চিঠি দিয়ে গেল। লিফাফার ওপর শুধু তাঁরই নাম ঠিকানা লেখা আছে। কে পাঠিয়েছে কিছুই লেখা নেই। জানতে পারছেন না কে লিখেছে। দ্রুত হাতে লিফাফা খুলে বের করলেন একটুকরো কাগজ। কোনো সম্বোধন নেই। নেই কোনো নাম। শুধু লেখা আছে ‘আমি আছি, বেঁচেই আছি’। গলা তুলেই পড়লেন চিঠিটা।
শুনেই হৈমবতী আর্তনাদ করে উঠলেন, কে? কে লিখেছে? মানাই?
বিপ্রদাসবাবু জবাব দিতে না পেরে একমুঠো বাতাসের জন্য হাঁকপাঁক করতে করতে আবার মন দিলেন পূজোর সামগ্রী গোছানোয়। পুরুৎ বলে গেছেন সকাল সকাল চলে আসবেন। অনেক সময় লাগবে শ্রাদ্ধশান্তির কাজে। 

লুকোনো চিঠি ~ সৌমলেন্দু ঘোষ

বাবা,

 এই চিঠি তুমি যখন পড়বে তখন আমি আর এই পৃথিবীতে নেই। ভয় নেই, কাউকে দায়ী করে সুইসাইড নোট লিখতে বসিনি; বুকশেলফের এই বইটা হয়ত পুলিশ কখনো খুলেও দেখবে না, চোখে জল নিয়ে আদরের মেয়ের শখের বইগুলোর ধুলো ঝাড়তে গিয়ে হয়ত মায়ের হাত থেকে এই বইটা মাটিতে পড়বে, তখন তুমি এই চিঠিটা পাবে। তুমিই শিখিয়েছিলে সবসময় মাথা উঁচু করে বাঁচতে, সেই তুমিই সমাজের চাপে আমার জীবনটাকে পিষে দিলে? কি এমন দোষ করেছিলাম আমি? তুমি চেয়েছিলে আমি মেডিকেল নিয়ে পড়ি, তোমার দেমাকী কলিগ রোহিত আঙ্কেলের মেয়ে তৃণার মত মস্ত বড় ডাক্তার হই; আচ্ছা, ইচ্ছা করলেই কি সবাই সবকিছু হতে পারে? আসলে তোমার মধ্যে ছিল টেক্কা দেওয়ার অদম্য ইচ্ছা, বিলাসিতার হাতছানি, কোনদিনও জানতে চেয়েছ আমার মনের কথা? 
"শেষমেষ, ইংলিশ অনার্স, ছিঃ" বলে মুখটা ঘৃণায় বিকৃত করেছিলে যেদিন, আমার মনের কষ্ট কেউ দেখেনি। কলেজে সেকেন্ড ইয়ারে আলাপ হল সুমন-দার সাথে, একঘেয়ে জীবন তখন উন্মাদনার কালবৈশাখী চাইছে। তারপর লুকিয়ে ঘোরা, পার্ক, সিনেমা; অফিসফেরতা তুমি দেখে ফেললে একদিন, তারপর বাড়িতে মায়ের বকুনি। সেই দিনটার কথা খুব মনে পড়ছে, কলেজ এক্সকার্শনের নাম করে সুমনদার সাথে গোপালপুর অন-সি, সেই দুইদিন মনে হয়েছিল জীবনে সবচেয়ে সুখের, ওর ষ্পর্শ সারা শরীরে নিয়ে ফিরে এসেছিলাম। কয়েকদিন পরেই মা তোমার কানে কানে কি বলল, আর তুমি এসে সপাটে মারলে এক চড়; 
"বেশ্যাগিরি চলবে না এখানে, এটা ভদ্রলোকের পাড়া, উফফ! কিভাবে যে লোককে মুখ দেখাব, অফিস থেকে ফিরে তোমার মুখ যেন আর না দেখি" এই ছিল তোমার আমাকে বলা শেষ কথা। সুমনদা বলল "হুর পাগলী, কাঁদছ কেন? অ্যাবরশান করিয়ে নাও, ফালতু ঝামেলা বয়ে কি হবে, আমার সব চেনাশোনা আছে"... 
পারলাম না শেষ পর্যন্ত; মাথা উঁচু করে যখন বাঁচতেই পারিনি, তখন আমার মরাই ভালো। হয়ত তোমার সোস্যাল স্ট্যাটাস বাঁচানোর জন্য টাকার জোরে গায়েব করবে আমার প্রেগনেন্সির রিপোর্ট, শুধু পরের দিন খবরের কাগজের এককোণে ছাপা হবে "তরুণীর রহস্যজনক মৃত্যু".

এখন ভাটিয়ালি বন্দী ~ অনিরুদ্ধ দাস

গ্রে মেঘের গায়ে যায় নায়তে
আমি বন্দিশ করি না,
নিই সঙ্গম-রতি সুখ।
:
উড়ালপুল খোপ খোপ...
স্প্লিট এ.সি'র রিংটোন...
প্লাস্টার অফ্ প্যারিসের দেওয়াল...
নিচ্ছি কোকিল নীড়-সুখ
:
তন্হা তন্হা সময় ভাঙ্গে,
ঝুল বারান্দার উঠানে,
আমি আরাম কেদারায়-
বসে রই;
:
আমি চাঁদ বুকে নিতে চাই-
সব সবুজ সবুজ...
ভরন্ত মাঝদরিয়া নিয়ে
হরপল বনবীথি মচ্ত করে,
প্রতি অরুণ উদয় অস্তরাগে ;
:
এখন রসকলি চারু অঙ্গরাগ
ট্যাটু আপটুডেট,
হট শোম্যান;
দিলদরিয়া! এখন ভাটিয়ালি বন্দি

সম্পাদিকার ডেস্ক থেকে

উৎসবের আলোড়ন কিছুটা স্তিমিত , তবুও মনের অলিন্দে হৈমন্তী স্বপ্ন । বারো মাসের তেরো পার্বণ প্রায় শেষ মুখে , উৎসব তিথি এখন অন্তিম লগ্ন যাপনে ব...