বাবা,
এই চিঠি তুমি যখন পড়বে তখন আমি আর এই পৃথিবীতে নেই। ভয় নেই, কাউকে দায়ী করে সুইসাইড নোট লিখতে বসিনি; বুকশেলফের এই বইটা হয়ত পুলিশ কখনো খুলেও দেখবে না, চোখে জল নিয়ে আদরের মেয়ের শখের বইগুলোর ধুলো ঝাড়তে গিয়ে হয়ত মায়ের হাত থেকে এই বইটা মাটিতে পড়বে, তখন তুমি এই চিঠিটা পাবে। তুমিই শিখিয়েছিলে সবসময় মাথা উঁচু করে বাঁচতে, সেই তুমিই সমাজের চাপে আমার জীবনটাকে পিষে দিলে? কি এমন দোষ করেছিলাম আমি? তুমি চেয়েছিলে আমি মেডিকেল নিয়ে পড়ি, তোমার দেমাকী কলিগ রোহিত আঙ্কেলের মেয়ে তৃণার মত মস্ত বড় ডাক্তার হই; আচ্ছা, ইচ্ছা করলেই কি সবাই সবকিছু হতে পারে? আসলে তোমার মধ্যে ছিল টেক্কা দেওয়ার অদম্য ইচ্ছা, বিলাসিতার হাতছানি, কোনদিনও জানতে চেয়েছ আমার মনের কথা?
"শেষমেষ, ইংলিশ অনার্স, ছিঃ" বলে মুখটা ঘৃণায় বিকৃত করেছিলে যেদিন, আমার মনের কষ্ট কেউ দেখেনি। কলেজে সেকেন্ড ইয়ারে আলাপ হল সুমন-দার সাথে, একঘেয়ে জীবন তখন উন্মাদনার কালবৈশাখী চাইছে। তারপর লুকিয়ে ঘোরা, পার্ক, সিনেমা; অফিসফেরতা তুমি দেখে ফেললে একদিন, তারপর বাড়িতে মায়ের বকুনি। সেই দিনটার কথা খুব মনে পড়ছে, কলেজ এক্সকার্শনের নাম করে সুমনদার সাথে গোপালপুর অন-সি, সেই দুইদিন মনে হয়েছিল জীবনে সবচেয়ে সুখের, ওর ষ্পর্শ সারা শরীরে নিয়ে ফিরে এসেছিলাম। কয়েকদিন পরেই মা তোমার কানে কানে কি বলল, আর তুমি এসে সপাটে মারলে এক চড়;
"বেশ্যাগিরি চলবে না এখানে, এটা ভদ্রলোকের পাড়া, উফফ! কিভাবে যে লোককে মুখ দেখাব, অফিস থেকে ফিরে তোমার মুখ যেন আর না দেখি" এই ছিল তোমার আমাকে বলা শেষ কথা। সুমনদা বলল "হুর পাগলী, কাঁদছ কেন? অ্যাবরশান করিয়ে নাও, ফালতু ঝামেলা বয়ে কি হবে, আমার সব চেনাশোনা আছে"...
পারলাম না শেষ পর্যন্ত; মাথা উঁচু করে যখন বাঁচতেই পারিনি, তখন আমার মরাই ভালো। হয়ত তোমার সোস্যাল স্ট্যাটাস বাঁচানোর জন্য টাকার জোরে গায়েব করবে আমার প্রেগনেন্সির রিপোর্ট, শুধু পরের দিন খবরের কাগজের এককোণে ছাপা হবে "তরুণীর রহস্যজনক মৃত্যু".
এই চিঠি তুমি যখন পড়বে তখন আমি আর এই পৃথিবীতে নেই। ভয় নেই, কাউকে দায়ী করে সুইসাইড নোট লিখতে বসিনি; বুকশেলফের এই বইটা হয়ত পুলিশ কখনো খুলেও দেখবে না, চোখে জল নিয়ে আদরের মেয়ের শখের বইগুলোর ধুলো ঝাড়তে গিয়ে হয়ত মায়ের হাত থেকে এই বইটা মাটিতে পড়বে, তখন তুমি এই চিঠিটা পাবে। তুমিই শিখিয়েছিলে সবসময় মাথা উঁচু করে বাঁচতে, সেই তুমিই সমাজের চাপে আমার জীবনটাকে পিষে দিলে? কি এমন দোষ করেছিলাম আমি? তুমি চেয়েছিলে আমি মেডিকেল নিয়ে পড়ি, তোমার দেমাকী কলিগ রোহিত আঙ্কেলের মেয়ে তৃণার মত মস্ত বড় ডাক্তার হই; আচ্ছা, ইচ্ছা করলেই কি সবাই সবকিছু হতে পারে? আসলে তোমার মধ্যে ছিল টেক্কা দেওয়ার অদম্য ইচ্ছা, বিলাসিতার হাতছানি, কোনদিনও জানতে চেয়েছ আমার মনের কথা?
"শেষমেষ, ইংলিশ অনার্স, ছিঃ" বলে মুখটা ঘৃণায় বিকৃত করেছিলে যেদিন, আমার মনের কষ্ট কেউ দেখেনি। কলেজে সেকেন্ড ইয়ারে আলাপ হল সুমন-দার সাথে, একঘেয়ে জীবন তখন উন্মাদনার কালবৈশাখী চাইছে। তারপর লুকিয়ে ঘোরা, পার্ক, সিনেমা; অফিসফেরতা তুমি দেখে ফেললে একদিন, তারপর বাড়িতে মায়ের বকুনি। সেই দিনটার কথা খুব মনে পড়ছে, কলেজ এক্সকার্শনের নাম করে সুমনদার সাথে গোপালপুর অন-সি, সেই দুইদিন মনে হয়েছিল জীবনে সবচেয়ে সুখের, ওর ষ্পর্শ সারা শরীরে নিয়ে ফিরে এসেছিলাম। কয়েকদিন পরেই মা তোমার কানে কানে কি বলল, আর তুমি এসে সপাটে মারলে এক চড়;
"বেশ্যাগিরি চলবে না এখানে, এটা ভদ্রলোকের পাড়া, উফফ! কিভাবে যে লোককে মুখ দেখাব, অফিস থেকে ফিরে তোমার মুখ যেন আর না দেখি" এই ছিল তোমার আমাকে বলা শেষ কথা। সুমনদা বলল "হুর পাগলী, কাঁদছ কেন? অ্যাবরশান করিয়ে নাও, ফালতু ঝামেলা বয়ে কি হবে, আমার সব চেনাশোনা আছে"...
পারলাম না শেষ পর্যন্ত; মাথা উঁচু করে যখন বাঁচতেই পারিনি, তখন আমার মরাই ভালো। হয়ত তোমার সোস্যাল স্ট্যাটাস বাঁচানোর জন্য টাকার জোরে গায়েব করবে আমার প্রেগনেন্সির রিপোর্ট, শুধু পরের দিন খবরের কাগজের এককোণে ছাপা হবে "তরুণীর রহস্যজনক মৃত্যু".
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন