সূর্য্য এখন অস্তাচলে একেবারে ঢলে পড়ার চরম মুহূর্তে এসে দাঁড়িয়েছে । মাঝবয়সী কুসুমবালা গঙ্গার ঘাটে এসে দাঁড়িয়েছেন জ্বলন্ত প্রদীপ হাতে । চোখে মোটা কাঁচের চশমা । তাতে ঝিলিক দিচ্ছে অস্তমিত রবির শেষ ছটা । আলোর সেই ছটাকে দ্বিগুণ ভাবে প্রতিফলিত করছে কুসুমবালার চোখে টলটল করতে থাকা অশ্রুবিন্দু । নাকের নাকচাবিটাও স্পষ্ট প্রতিভাত হচ্ছে বিকেলের ম্লান আলোকে ।
আজ সন্দীপের জন্মদিন । কুসুমবালা পুত্রকে স্মরণ করে জ্বলন্ত প্রদীপ ভাসাতে এসেছেন গঙ্গাবক্ষে । প্রদীপখানা ভাসিয়ে দেবার প্রাকমুহূর্তে কুসুমবালা থমকে দাঁড়িয়ে পড়লেন । তাঁকে এই অবস্থায় দেখে কুঁজো বলে ভ্রম হলেও তিনি কিন্তু সাধারণ নারীদের তুলনায় অনেকটাই দীর্ঘদেহের অধিকারিণী । পুত্র সন্দীপ তাঁরই মতো দীর্ঘদেহের অধিকারী ছিলো । তাতে ওর সুবিধা হয়েছিলো ভারতীয় সৈন্যদলে যোগ দিতে । শেষ বিকেলের ম্লান আলোকে সোনার চ্যাপ্টা আকৃতির চুড়ি দুটো ঝিলিক দিয়ে উঠেছে দেখে থমকে দাঁড়িয়ে পড়েছেন কুসুমবালা । দু’মাসও হয়নি সন্দীপ ছুটিতে এসে সোনার চুড়িগুলো কুসুমবালার হাতে দিয়ে বলেছিলো – “ এতদিনে আমার মনস্কামনা পূরণ হলো । তোমার সোনার চুড়িগুলো বেচে দিয়েছিলে আমাকে সৈন্যবাহিনীতে চাকরী করতে পাঠাবে বলে । তখনই মনঃস্থ করেছিলাম তোমাকে আবার সোনার চুড়ি গড়িয়ে দেবো । আমার সেই সাধ এতদিনে পূরণ হলো । আজ থেকে তোমার হাতদুটো আর খালি থাকবে না মা । ”
সন্দীপ ছোট্ট একটা নাকচাবিও গড়িয়ে এনেছিলো মায়ের জন্য । নাকচাবিতে বসানো আছে একটুকরো আমেরিকান ডায়মণ্ড । আলো পেলেই হীরের মত ঝকমক করে ওঠে ।
ছুটির শেষে সন্দীপ ফিরে গিয়েছিলো বর্ডার পাহারার কাজে । যাবার সময় কান্নায় ভেঙে পড়া কুসুমবালাকে স্বান্তনা দিয়ে বলেছিলো – “ কেঁদো না মা । এরপর যেবার আসবো অনেকদিন থাকবো তোমার কাছে । ” সন্দীপ কথা রেখেছে । যাবার দিন কুড়ির মধ্যে একেবারে ছুটি নিয়ে ফিরে এসেছে মায়ের কাছে । ফিরে এসেছে জাতীয় পতাকায় মোড়া কফিনে শুয়ে ।
কুসুমবালার বেদনা সূর্য্যকেও যেন সংক্রামিত করেছে । তাই হয়তো অস্তমিত সূর্য্যের জবাকুসুম রঙ হয়েছে বিবর্ণ ফ্যাকাসে । নদীর বুকও রক্তাক্ত হচ্ছে কুসুমবালার দুঃখের কাহিনী স্মরণ করে । প্রদীপ ভাসিয়ে দেবার আগে কুসুমবালা ভেজা গলায় স্বগতোক্তি করলেন – “ আমার হাত তো ভরিয়ে দিয়েছিস বাছা । কিন্তু কোল ? কোল যে খালি করে গিয়েছিস । এই কোল যে আজীবন খালি পড়ে থাকবে বাছা । ”
আজ সন্দীপের জন্মদিন । কুসুমবালা পুত্রকে স্মরণ করে জ্বলন্ত প্রদীপ ভাসাতে এসেছেন গঙ্গাবক্ষে । প্রদীপখানা ভাসিয়ে দেবার প্রাকমুহূর্তে কুসুমবালা থমকে দাঁড়িয়ে পড়লেন । তাঁকে এই অবস্থায় দেখে কুঁজো বলে ভ্রম হলেও তিনি কিন্তু সাধারণ নারীদের তুলনায় অনেকটাই দীর্ঘদেহের অধিকারিণী । পুত্র সন্দীপ তাঁরই মতো দীর্ঘদেহের অধিকারী ছিলো । তাতে ওর সুবিধা হয়েছিলো ভারতীয় সৈন্যদলে যোগ দিতে । শেষ বিকেলের ম্লান আলোকে সোনার চ্যাপ্টা আকৃতির চুড়ি দুটো ঝিলিক দিয়ে উঠেছে দেখে থমকে দাঁড়িয়ে পড়েছেন কুসুমবালা । দু’মাসও হয়নি সন্দীপ ছুটিতে এসে সোনার চুড়িগুলো কুসুমবালার হাতে দিয়ে বলেছিলো – “ এতদিনে আমার মনস্কামনা পূরণ হলো । তোমার সোনার চুড়িগুলো বেচে দিয়েছিলে আমাকে সৈন্যবাহিনীতে চাকরী করতে পাঠাবে বলে । তখনই মনঃস্থ করেছিলাম তোমাকে আবার সোনার চুড়ি গড়িয়ে দেবো । আমার সেই সাধ এতদিনে পূরণ হলো । আজ থেকে তোমার হাতদুটো আর খালি থাকবে না মা । ”
সন্দীপ ছোট্ট একটা নাকচাবিও গড়িয়ে এনেছিলো মায়ের জন্য । নাকচাবিতে বসানো আছে একটুকরো আমেরিকান ডায়মণ্ড । আলো পেলেই হীরের মত ঝকমক করে ওঠে ।
ছুটির শেষে সন্দীপ ফিরে গিয়েছিলো বর্ডার পাহারার কাজে । যাবার সময় কান্নায় ভেঙে পড়া কুসুমবালাকে স্বান্তনা দিয়ে বলেছিলো – “ কেঁদো না মা । এরপর যেবার আসবো অনেকদিন থাকবো তোমার কাছে । ” সন্দীপ কথা রেখেছে । যাবার দিন কুড়ির মধ্যে একেবারে ছুটি নিয়ে ফিরে এসেছে মায়ের কাছে । ফিরে এসেছে জাতীয় পতাকায় মোড়া কফিনে শুয়ে ।
কুসুমবালার বেদনা সূর্য্যকেও যেন সংক্রামিত করেছে । তাই হয়তো অস্তমিত সূর্য্যের জবাকুসুম রঙ হয়েছে বিবর্ণ ফ্যাকাসে । নদীর বুকও রক্তাক্ত হচ্ছে কুসুমবালার দুঃখের কাহিনী স্মরণ করে । প্রদীপ ভাসিয়ে দেবার আগে কুসুমবালা ভেজা গলায় স্বগতোক্তি করলেন – “ আমার হাত তো ভরিয়ে দিয়েছিস বাছা । কিন্তু কোল ? কোল যে খালি করে গিয়েছিস । এই কোল যে আজীবন খালি পড়ে থাকবে বাছা । ”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন