মুঠো ভরা রোদ্দুর

ফেসবুকের রোদ্দুর গ্রুপের জন্ম ২৬শে মার্চ ২০১৫ । আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে এক চিলতে উজ্জ্বল রোদ্দুরের সুতীব্র স্পৃহা থেকেই জন্ম রোদ্দুরের । রোদ্দুরের প্রতি মাসের নির্বাচিত সেরা লেখাগুলি স্থান পেয়েছে এখানে

বৃহস্পতিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৫

কুয়াশা ~ অরিন্দম সরকার

কুয়াশার মোজা পায়ে হেঁটে আসা প্রতিটি ভোরে এ শহরে গান গেয়ে যায় একটি পাখী, সন্ধ্যের পায়ে পায়ে নেমে আসা প্রতিটি রাতে এ শহরে আমি একলা বেঁচে থাকি,

এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: ফিচার

এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন

সম্পাদিকার ডেস্ক থেকে

বারো মাসে তেরো পার্বণ এর হাইপ প্রায় শেষ , উৎসব তিথি এখন শেষ লগ্ন যাপন করছে । বাতাসে এখন হিমেল স্পর্শ , আহ্লাদী ভোরের  কমলা আলো ঘরে এসে পৌঁছচ্ছে নির্ধারিত সময়ের বেশ কিছুটা পরেই -- লেপের উষ্ণ ওমে নিজেকে সেঁকে নিচ্ছি আমরা --- কার্তিকের  মিঠে রোদ গায়ে মেখে। 

যদি আমি ঝরে যাই একদিন কার্তিকের নীল কুয়াশায়; যখন ঝরিছে ধান বাংলার ক্ষেতে-ক্ষেতে ম্লান চোখ বুজে, যখন চড়াই পাখি কাঁঠালীচাপাঁর নীড়ে ঠোঁট আছে গুজে, যখন হলুদ পাতা মিশিতেছে খয়েরি পাতায়, যখন পুকুরে হাঁস সোঁদা জলে শিশিরের গন্ধ শুধু পায়, শামুক গুগলিগুলো পড়ে আছে শ্যাওলার মলিন সবুজে- তখন আমারে যদি পাও নাকো লালশাক-ছাওয়া মাঠে খুঁজে, ঠেস্‌ দিয়ে বসে আর থাকি নাকো যদি বুনো চালতার গায়ে,

ইতিমধ্যে রোদ্দুর পা দিল আট মাসে। এরই মধ্যে নিজের পরিচয়ের অনন্য আখরে নিজেকে চিহ্নিত করেছে সে । এই আট মাসে রোদ্দুর পরিবারে সামিল হয়েছেন অসংখ্য গুণী মানুষ , তাঁদের মননশীল লেখার হাত ধরেই রোদ্দুর এগিয়ে চলেছে -- আগামী বছরে রোদ্দুরের একটি পি  ডি এফ প্রিন্টেড ভার্শন তৈরি হচ্ছে , আপনাদের সকলের আন্তরিক সহযোগিতার আশা রাখছি রোদ্দুরের  স্সৃষ্টিশীল পথ  চলায় । 

ভাল থাকুন সকলে , এবং ভাল লিখুন , because I believe , Litreture --still zooms in 

শুভেচ্ছান্তে ,
পিয়ালী বসু 




এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: সম্পাদকীয়

মিস ইউ-- শব্দ ~ বৈশাখী রায়চৌধুরী

শব্দ,
সমান্তরাল অধ্যায়ের বাইরে ছিটকে যাওয়া সেই মানুষ। 
সারা শরীরে মাখানো ছিল যার বোবা চাবুক। 
অদূরে অন্ধ জোৎস্না, 

চিকচিকে বালুচরে কে বা কারা মরেছিলো কবে শব্দের খোঁজে,
কে তার হিসাব রাখে?
তবে কি হিসেব খুঁজতেই হারিয়েছিলো শব্দ?
নাকি ইচ্ছে নির্বাসন।
বিজ্ঞানীরা বলেছিলো আলোর গতিবেগ শব্দের চেয়ে বেশী।
কিন্তু আজ সবই গতিহীন গতিজাড্যর চ্যাপ্টার।
ভাঙা প্রাচীরের ওপাড়ে জেগেছিলো কিছু চোখ,
চোখে শব্দের ঝলকানি।
ভাঙা প্রাচীর আজ উঁচু করে বাঁধানো।
টাঙানো শিরোনাম প্রবেশ নিষিদ্ধ।
ঘরে ঘরে দানা বাঁধা বোবা খুদার্ত প্রতিবাদ।
সবাই খুঁজছে শব্দকে, শব্দ নিরুদ্দেশ।
মন্ডপে মন্ডপে চলে চক্ষুদান,
তুলি ছুঁড়ে কেঁদে ওঠে মাটির দূর্গা
চোখ নয় কন্ঠে চাই শব্দ, আমার শব্দ খুঁজে দাও।
চাপা পড়ে কান্না, বেজে উঠে ঢাক।
বোবা সভ্যতা কানে গোঁজা হেডফোন, চোখে সানগ্লাস।
ব্যস্ততার ভিড়ে হারিয়ে যায় শব্দের মিসিং ডায়েরীটা। 
এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: কবিতা

প্রণয় মধু ~ কৃষ্ণকলি অন্তরালে

চারিদিকে এত অন্ধকার কেন । লাইটটা জ্বালাতে কি কষ্ট হয়? মুখে কুলুপ কেন? বোবা হয়ে গেছিস? অসহ্য হয়ে যাচ্ছিস দিন কে দিন। মর তুই। একটানা যা খুশি বলে বেরিয়ে গেল মা। ধুরর আমার উঠতেই ইচ্ছে করছে না। অন্ধকার ঘর চরম শান্তি দিচ্ছে আমার শরীরে, মনে।আসলে মন খুব খারাপ। কেন? পরে বলছি। আগে একটু জল খাই। জানালার পর্দাটা দিই।অন্ধকার ঘরটায় হাল্কা আলো খেলছে বেশ। এ বাড়ি থেকে তিনটে বাড়ি পর মান্তুদের বাড়ি। ওর আজ বিয়ে। এমনিতে সুন্দর দেখতে ওদের বাড়িটা, সেটা আবার টুনি দিয়ে সাজানো হয়েছে। খুব সুন্দর লাগছে বাড়ি টা। মান্তুকেও লাগছে নিশ্চয়ই। মান্তু তো এ পাড়ার পরী ছিল। ওদের দামী আলো আমার পলেস্তারা খসা ঘরে অবজ্ঞার রোশনাই ছুড়ে দিচ্ছে।
যাকগে আমার কি আমি তো সেই তিমিরেই। নাম ও তিমির, জীবনটাও তিমিরেই। পেছন ঘসে অনেক কষ্টে একটা চাকরী জুটিয়েছি। আপাতত করছি । মাঝরাতে মা ঘুমোলে বাথরুমে যাই । পরের দিন আবার এক চক্রকারে ঘোরা।
কিরে দাদা মান্তুদির জন্য মন খারাপ? দোষটা তো তোরই। ফিরিয়ে দিয়েছিলি। চা খাবি নাকি? দাঁড়া নিয়ে আসি।
আমার বোন মিনু।চা আনতে গেল। বেশী মাত্রায় পেছনপক্ক। সব ব্যাপারে গম্ভীর মতামত ওর ।আর এখানে মজা হল আমার কথা শোনার মত সময় কারুর কাছে নেই। আমার হ্যাঁ বা না শোনার আগেই কথা শেষ হয়ে যায়। আমাদের বাবা মারা গেছেন। মা মোটেই নিরুপা রায় নয়। বোন ও ফরিদা জালাল নয়। প্রকাশ্যে মা বোনের চুলোচুলি দেখি ভাত খেতে খেতে। আমাদের টিভি নেই। নষ্ট হয়ে পড়ে আছে দোকানে।সময় কাটানোর উপাদান খারাপ নয়।
মিনু কে কিছু বলা চাপ। জ্ঞান দেবে। মান্তু কে না ফেরালে বিয়ে করতে হতো। অতো টাকা কোথায়! করি তো একটা রদ্দি চাকরী। তাও কি কম চেষ্টা করেছি, ওর ওই হাড় জিড়জিড়ে মা বাড়িতে ডেকে চা খাইয়ে বলল “ বাবা তুমি আমার বড় ছেলের মত বোনের বিয়েতে খাটতে হবে কিন্তু”। শালা আমি বেশ দেখেছি একদিন অঙ্ক শেখাতে শেখাতে মান্তু কে লিপলক শেখাচ্ছিলাম ওর মায়ের কুটিল চোখ ওৎ পেতে ধরে ফেলেছিল আমার দু চোখ। সেদিন টাকা মিটিয়ে দিয়ে আসতে বারণ করে দিয়েছিল বরাবরের মত। বলা হয়নি আমি মান্তু কে অঙ্ক করাতাম।
চা খেয়ে টান টান হয়ে শুয়ে সানাই শুনছিলাম। আহ বেশ । মন টা ভালো লাগছে এখন। হঠাৎ ফোন বেজে উঠল। চেনা নম্বর।
—হ্যালো।
—বিজি হো।
—না তুম বোলো
— আই মিস্ ইউ বেবী। মুয়াাহ।
—মি টু বেবী।
পুণম আমার নতুন বান্ধবী । ফোন করেছে। দুমাসের আলাপ। ব‌িবাহ‌িতা !আচ্ছা আজ আসি। দরজাটা বন্ধ করব এখন ,ওর সাথে কিছু কথা আছে।
আপনারা শ্রীজাত পড়ুন
ছিটকে এসে জামায় লাগুক
একের পর এক বান্ধবীদের সিঁদুর ।
এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: অনুগল্প

পড়ন্ত ক্যানভাস ~ পিয়ালী মজুমদার ও অর্ণবকমল বসুভট্টাচার্য

রোদ্দুরের 'যৌথ কবিতা 'বিভাগে প্রথম স্থান গ্রহণ করেছে এই কবিতাটি 
-----------------------------------------------------------------------

ছাতার আড়াল টেনে হেঁটে যায় কত রঙিন মানুষ
দুপুরের ঠিক এই সময়টায়
পাতার নীচে ভাতঘুমের অতল আর
রোদ রোদ সীমানা পেরিয়ে
হেঁটে যায়… আত্মস্থ বিকেলের দিকে…
একার দুপুর,
সলতে উসকে দেয় ফেলে আসা কথার
কথারা আদরের কষ্টের মতো,
কথারা 'না' বলে ফিরে যাওয়া প্রেম
টানা টানা এক-একটা দুপুর
কত মানুষ বয়ে আনে
রঙচটা বিকেলের দিকে…
শীতলতা জানে খুব!
কিছু পিয়ানো-দুপুর…
মায়াময় আঙুল জড়ায় আঙুলে
হাঁটতে হাঁটতে
অপেক্ষারা দীনতা কুড়োয়।
ছাতা আর ভাতঘুমের দোহাই দিয়ে
কত দুপুর নাভিতে বিকেল ছুঁইয়ে নেবে!
রঙ চেয়ে চেয়ে
'পূরবী' ঘনাবে আকাশে...
শুধু মানুষ খানিক পুড়তে পুড়তে,
কিছুটা খেদ নিয়ে
মিশে যাবে অবধারিত বিকেলের নিয়মে
এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: কবিতা

বর্ণমালা ~ সুকান্ত চক্রবর্তী

কবে যে তোমাকে নিয়ে লিখেছিলাম,
হারিয়েছে অক্ষরে অক্ষরে ; তবু,
বর্ণমালা যখন সামনে ছোটো ছোটো 
শিশুর মতো খেলা করে , যেন জীবন্ত
কুমারী তুমি কবেকার আগ্রহ নিয়ে বসে
থাকো শিশুদের দিকে চেয়ে ;
আবার কবে তোমাকে নিয়ে লেখা হবে ?
এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: কবিতা

রঙ ~ শ্রেয়া ঠাকুর

'আজ পঞ্চমী, চাদ্দিকে আজ থেকেই ঠাকুর দেখার সাজো সাজো রব । কোথায় সবচেয়ে বড় দুর্গা কোথায় আহিরিটোলার বেতের ঝুড়ি দিয়ে সাবেকী ঠাকুর। লোকজন নতুন নতুন জামা কাপড় পরে ছুট দিয়েছে উত্তর থেকে দক্ষিণে।'
এইটুকু লিখে পেন টা নামিয়ে রাখলো অনমিত্রা, আজ হাত যেন সরছেই না। জোর করে মন কে গুছিয়ে যতবার লিখতে চাইছে ততবার অভীকের রূঢ় কথা গুলো ঘুরে ফিরে আসছে। 
" এই টি শার্ট টা কোথা থেকে কিনেছো? এত লাল? 
এই শার্ট টা? রঙ ছিটকে আসছে যেন! রোজকার পরার মত কিছু কিনতে পারোনি?
একটা কিচ্ছু পছন্দ হয়নি আমার! এরপর থেকে আমার শপিং আমি নিজে করে নেব। আর শোনো, কাল পুরনো জামা পরেই বেরোচ্ছি, এখানে পরার যোগ্য কিছু নেই!"
কথা গুলো খুবই সামান্য শুনতে, কিন্তু, তিলতিল করা জমানো টাকায় আহ্লাদ করে কেনার আনন্দ প্রতি শব্দের সাথে কমতে থাকে। কথা গুলো ছুঁড়ে দিয়ে হাত ঝেড়ে অভীক বেরিয়ে গেছে তারপর, একটাও উত্তর দেয়নি সে, গলা উঁচু করে ঝগড়াও না, যেটায় সে এক্সপার্ট অভীক প্রায়শই আদর করে বলে থাকে। শুধু অভীক ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর একরাশ অবসাদ ঘিরে ধরেছে তাকে।
সেই অবসাদ কাটানোর জন্যই লেখা নিয়ে বসেছিলো, কিন্তু মন বাগ মানলে তো!
অনমিত্রার শক্তি হল যখন যা করবে প্রাণ ঢেলে করবে, যখন যাকে ভালোবাসবে, তার জন্য নিজের সবটুকু উজাড় করে ভালো নিয়ে আসবে, আলো নিয়ে আসবে আর নিজে যদি অন্ধকারে থাকে, তাতেও তার আপত্তি কই?
আর তার দুর্বলতা? মুখের ওপর অপছন্দের কথা জানাতে না পারা, এই যে অভীকের দেওয়া লাল শাড়িটাও তো তার... কিন্তু সে বলেনি, শাড়িটায় ভালোবাসার রঙ এত ঘন ছিলো যে বাকি সব টেক্সচার কোয়ালিটি স্টাইল সবের খুঁত ফিকে হয়ে গিয়েছে। কাল সেটাই পরবে ঠিকও করেছিল, যদিও ট্রায়ালের সময় আয়নায় নিজেরই নিজেকে দেখে পছন্দ হয়নি, তবু... অপছন্দেও আলো খুঁজে নিতে চায় সে। কিন্তু কি লাভ? সবকিছুর পরেও তো সে অবসাদ, সেই গলার মধ্যে কি যেন আটকে রেখে সারাদিন কাটানো। একটা প্রতিবাদ কি দরকার নয়?
ধীর পায়ে উঠে দাঁড়ালো সে, স্থির হাতে আলমারি খুলে একটা ধপধপে সাদা সাউথ কটনের শাড়ি বের করলো।
এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: ফিচার

দুর্গাপূজো ~ রীণা রায়

পূজো মানে, শিউলি ফুল
আর নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা,
পূজো মানে, পদ্ম আর কাশ
নতুন পোশাক আর নানা রঙের মেলা।
পূজো মনে, শারদসংখ্যা
অনিয়ম আর আড্ডা, বাড়ুক যতোই বেলা,
পূজো মানে, ধূনুচিনাচ
অঞ্জলি আর সন্ধিপূজো, স্মৃতিতে দেয় দোলা।
পূজো মানে' ঢাকের তালে কোমর দোলে'
পূজো মানে,স্ব্প্ন খোঁজা ঐ চোখের কাজলে।
পূজো মানে, নস্টালজিয়ায়
ছোটবেলাকে চাওয়া,
পূজো মানে, ভিড়ের মাঝে
তোমায় কাছে পাওয়া।
পূজো মানে, সঙ্গোপনে
মন হারানোর খেলা।
পূজো মানে, উদাস মন-ও
চায় না হতে একলা।
এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: কবিতা

যতটুকু বলা বাকি ছিল ~ অর্ণবকমল বসুভট্টাচার্য

প্রতিদিন দূরে সরে যাই যেভাবে,
যেভাবে যানজট পুষে রাখে বিকেল পাঁচটা...
সেভাবে কাছে টেনে নেবে না?
এই হঠকারি দিনকাল, এই জলোচ্ছ্বাসে
এতখানি সরে থাকা যায়?
সমুদ্র না হয় ঢেউ খেলায়,
আলো আলো জমকালো পথে ফেরা হয়নি!
ঠিকানা খুঁজেছি রোজই,
আমার চিলেকোঠা- কড়িকাঠ জুড়ে
তুমি তুমি তুমি ভেসে এসো..
এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: কবিতা

গোত্রহীন ~ নীল মলয়

এমনটাই যদি হয়
বিনাশ তবে অপ্রয়োজনীয়
নাম লিখে মুছে দিও
ব্যস্ত যখন শীত অকাল.
আবেগ যদি ছলকে পড়ে
মূল্য তবে অহেতুক
দোষ-গুনের সমীকরণে
ষড়রিপুর মহাকাল..
অবক্ষয়ের মূল্যবোধ
ভীষণ দামী সোনার কাঠি
তার চেয়ে মেঘ নামুক
বৃষ্টি আসুক বিকেল জুরে
স্বপ্ন দিনে তোমায় পাবো
এক্কেবারে সুতোয় বেঁধে
মায়ার আচল দাগ কাটবে
আদর হবে অতিথি অবুঝ ;
রাতকে রেখো বুকের মাঝে
অতল হোক আরও গভীর
দ্বন্দ্ব সমাস বারোমাসের
শঙ্খ লাগুক শবের খাটে.
বুলেট ছবি জেহাদ ভুলে
আগুন জ্বলুক শরীরজুরে
ভষ্ম হয়ে মিলব আবার
কবিতার- ই লাসকাটা ঘরে....
এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: কবিতা

তোর একটা চুমুর জন্য ~ অনিরুদ্ধ দাস

তোর ভ্রুর ইশারা--কলগেট হাসি,
স্ট্যাটাস পাল্টাতে চাস
রোদ্দুর হয়ে;
কাছেপিঠে থাকলে --
তোর অস্তিত্ব জানান দেয়
বুকে...
বড় ক্লান্ত! স্রোত নেই
কেবল ফসিল নদীখাত
আছে;
সমাজ থাক-- ছায়া থাক
বরমাল্য থাক--সহস্র সহস্র
সঙ্গম থাক--বাতানুকূল জীবন,
বারকোটেড্ লাইফ থাক,
আয়!তোর একটা চুমুতে
ভিজি 
এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: কবিতা

চন্দন দরোজায় কড়া ~ লুতফুল হোসেন


কড়া নাড়ার শব্দেরা দরোজায়
লঘু পায়ে কখনো দাঁড়াবে
এসে কোনো খেয়ালী অবসরে।
সুদৃশ্য একজোড়া কড়া এনে
লাগিয়ে তা ছিলাম অপেক্ষাতে।
কেউবা কখনো এসে যদি
নাড়ে তারে কোনো উদগ্রীব হাতে!
দেয়ালে ঘড়িটা নীরব সংগী,
ফ্যানের পাখা তিনখানা প্রহরী।
অনড় বসে বসে অবশেষে
অবসাদ বলে মনে হতেই
একদিন খুলে নিলাম ঘড়ির সব
কাঁটাগুলি, অপেক্ষার শরীর
থেকে একে একে অবহেলার
চিহ্নময় সুদৃশ্য কড়াগুলি।
যতোক্ষণ ঘরে থাকি, দরোজা
হাট খোলা অবারিতই রাখি।
ঘরের বাইরে থাকা সময়টাতে
অপেক্ষাতে দেখি কড়া দুটি
দরোজাময় নকশা কাটে কথার।
নিঃসঙ্গময় অপেক্ষামগ্নতায় ওরা শুধু
আমার জন্যেই বসে থাকে কি !
আমি ফিরে এলে ঘরে ওদের
চুম্বনের রেশটুকু ছাড়া আর থাকে কি !
সারাটা সময় অপেক্ষায় দরোজাময়
এই যে অহেতুক ওৎ পেতে বসে থাকা !
জেনে শুনে। আমি ছাড়া কেউ কি আর
কড়া নাড়ার শব্দ শুনতে থাকে বসে !
চন্দন গন্ধময় বুকের দরোজায়
তাই আজ লাগানো রাখিনি কোনো কড়া
জানি আসবেনা কেউ আর,
এমন কি তার চিঠি হাতে ডাক হরকরা।
এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: কবিতা

শুভেচ্ছা ~ মানস চক্রবর্তী

এই তো এখন নরম রোদে ভাসান দেয়ার শুভেচ্ছা দাও
হত্যাকারীর রক্তদাগের রোজ সকালে আমরা সবাই দারুন খুশি
কাঁপতে কাঁপতে অষ্টবক্র, চোখ পালটে বেশ্যাবৃত্তির শুভেচ্ছা নাও
তোমরা যারা পথের ধূলোয় হারিয়ে সুখ তাদের জন্যে বুকেই আমি
রাগ পুষি...
রাগটুকু নাও আপন করে অঞ্জলী দাও নতুন করে ওই মেয়েটির চিতার ওপর
আগুনগুলো গুছিয়ে নাও ভালোবাসায় শুদ্ধ কর জলকে চলো
তোমরা আমার রক্তে রাঙা শুভেচ্ছা নাও
এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: কবিতা

ভালবাসি তাই ~ সুকান্ত চক্রবর্তী

ভালোবাসি বলে পৃথিবীর সমস্ত রঙিন এনে দিতে পারি তোমার আঁচলে ।
ভালোবাসি বলেই সমস্ত নিয়ম ভেঙে চুমু খেতে পারি তোমার নরম ঠোঁটে ।
ভালোবাসি বলে মৃত্যুর কষ্ট ভুলে ফিরে আসি বারবার এই পৃথিবীর বুকে ।
ভালোবাসি বলেই হয়তো তোমার শরীর ভরিয়ে দিতে চাই অক্ষরে অক্ষরে ।
এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: অনুকবিতা

পাঁজি শুধু জানে ~ গৌতম যুথিপুত্র

পাঁজি শুধু জানে , শেষ হয়ে গেল দিন ,
পায়ে পায়ে ভীড় ছেড়ে গেছে মন্ডপ ;
অভিনয় সেরে চলে গেল আশ্বিন ,
সাদা কাশফুলে লেগেছে হলুদ ছোপ ।
রাতজাগা কিছু ট্যাক্সিগুলোর সীটে ,
পেয়ে যেতে পারো চুল-খসা কিছু ক্লিপ ,
হাল্কা জামায় সিঁদুরের কিছু ছিটে....
আয়নার ধারে ভুলে যাওয়া আঠা-টিপ ।
যে ফানুসগুলো উড়ছিল মাঠে মাঠে ,
লেখা ছিল তাতে দিন-বদলের-দিন ,
গঙ্গার জলে তারই তর্পণ গঙ্গা্র ঘাটে ঘাটে ,
কারা বলেছিল নাকি , আসবেই আলাদীন !
নর-নারায়ণ সেবা ছিল নবমীতে ,
শালপাতা হাতে তোমার আমার ভীড় ,
দুখী জনতার মন্ত্রী কেটেছে ফিতে ,
কতটুকু পেট ভরেছিল পৃথিবীর !
এবার হিসেব-নিকেশের জাঁঁতাকল
কতটা খরচ , কতটা রয়েছে হাতে ,
মাস মাইনের টাকাটাই সম্বল ,
কত টাকা গেল বিসর্জনের রাতে ?
আজকেই শুরু আবার পুরোনো দিন ,
আগের মতোই চিনি বাদ থাক চা’য়ে
জীবন আবার রুটি-তরকারী-বোরোলীন...
সাবধানে চল , পেরেক না ফোটে পা’য়ে ।
এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: কবিতা

অনুভব ~ জাকিয়া জেসমিন যূথী

অট্টহাসি!!!
সহজেই বোধগম্য,
সকলের দৃষ্টিগোচর!
হৃদপতন???
নি:শব্দে প্রস্থান,
বিরহ অনন্তপুকুর 
এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: অনুকবিতা

অণু কবিতাগুচ্ছ ~ অনিরুদ্ধ দাস

অণু -১

কাঁকড়া গুগুলির মিষ্টি স্বাদ 
ভাত করে আন আন;
দেশি, পচুই সব ভুলে
হাতে-- বারকোটেড্ সিগনেচার, রাম


--------------------------

অণু -২ 

মোরগডাকা ভোর---
দেয় ইকো ;
ডাকে--- দোয়েলের শিস্, পারাবত;
ঘুঘুর মতো--- পাউস ভোর...
এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: অনুকবিতা

ম্যাকাবর ~ সুকান্ত চক্রবর্তী ও শ্রেয়া ঠাকুর

রোদ্দুরের ' ছবি  দেখে গল্প ' বিভাগের প্রথম স্থান গ্রহণ করেছে গল্পটি 
----------------------------------------------------------------

আমি ভাবতেই পারিনি, আসলে কখনোই ভাবতে পারিনি এমন একটা দৃশ্যের সামনে পড়তে হবে কোনোদিন। কোনো স্বাভাবিক মানুষ ভাবতে পারে কি... আমি প্রবাল বসু, লারসেন অ্যান্ড টুব্রোর এমপ্ল্যয়ী, স্বাভাবিক ছিলাম, অন্তত এই জার্নির শুরুতে। শুধু আমি কেন, জামাল ভাই,খেয়া ভাবী, দেবারতি,প্রিয়ম, ঋজু সক্কলেই স্বাভাবিক ছিলাম। জার্নি? পোর্ট ব্লেয়ার থেকে কার নিকোবর পর্যন্ত, বেশি না, একদিন এক রাত। নতুন ঝকঝকে একটা ক্রুজ, ম্যাকাবর আর সেই ক্রুজের টকটকে ফরসা অ্যাংলো ক্যাপ্টেন আমাদের কাণ্ডারি। দুজন চারজন ক্রু ও রয়েছে, তবে তাদের ধরিনি, ঈশ্বর প্রদত্ত যোগাযোগ ক্ষমতা তাদের নেই, সহায় হয়েছে হুইশল আর টর্চ। ম্যাকাবর; নামটা দেখে অবাক হয়েছিলাম, একটা ক্রুজের না্মের অর্থ কিনা ভয়ানক??! কি অদ্ভুত! এমন আবার হয় নাকি, আমাদের পশ্চিমবাংলায় তো হর্ষবর্ধন, ইরাবতী এমন নাম দেখি। জামাল ভাই আমার সাথে সহমত হয়েছিলেন, খেয়া ভাবীও। তারপর বলেছিলেন,"ক্যাপ্টেন কে জিজ্ঞেস করলে হয় না, হয়ত অন্তর্নিহিত অর্থ আছে কিছু।" তখনো ক্যাপ্টেনের সাথে শুধু চোখের দেখা আর পেশাদার হাসির বিনিময় হয়েছে ।সবে পা রেখেছি ক্রুজে।
ধীরে ধীরে ডক ছাড়িয়ে ক্রুজ রওনা হল গন্ত্যবের দিকে। বেশ সুন্দর আবহাওয়া । নীল নীল চারিদিক । দূরে এখনো ডক দেখা যাচ্ছে । আনাওউন্স হল সবাইকে মিটিং হল এ দেখা করার জন্য । আমরা সব সুদ্ধু ৬ জন উপস্থিত হলাম । ক্যাপ্টেন হাসিমুখে স্বাগত করলেন আমাদের । পরিচয় দিলেন নিজের এবং ক্রু- মেম্বার দের । উনার বয়েস হবে প্রায় পঞ্চাশ, এখনো কি স্মার্ট, আর অত্যন্ত অমায়িক । যাই হোক, একে একে উনি আমাদের সবার পরিচয় নিলেন , প্রাইভেট ক্রুজ ম্যাকবর এর সম্পর্কে বললেন, আমাদের যাত্রা সম্পর্কে ধারনা দিলেন । সব ঠিক থাকলে কাল ভোর বেলায় আমরা কার নিকোবর এ উঠবো । ওঁর কথায় কার নিকোবর নিকোবরের রাজধানী হলেও বেশ অনেকটা নির্জন , বিশাল মিলিটারি বেস আছে, শুধু টুরিস্টরা ই যায় মাঝে মাঝে । খুব উত্তেজনা আর আনন্দ হচ্ছিল, আন্দামান ই এত সুন্দর, নিকোবর কত সুন্দর হবে কে জানে । জামাল ভাই আর নিজের প্রশ্নটা চেপে রাখতে পারেন নি । জিজ্ঞেস করেই ফেললেন জাহাজের নামকরন সম্পর্কে । জানা গেল চিফ ইঞ্জিনিয়ার Late. Mr. Mackellar এর নামানুসারে এর নামকরন হয় । এই ক্রুজ এর সমস্ত ডিজাইন উনি ই করেছিলেন । কিন্তু এর কাজ শুরু হওয়ার কিছুদিনের মধ্যে ই উনি এক অজানা চর্মরোগ এ আক্রান্ত হয়ে পরেন এবং তার কিছুদিনের মধ্যে ই মারা যান । তাঁকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে এর নামকরন এরকম রাখা হয়। জামাল ভাই আর কিছুই বলতে পারলেন না, না আমরা । আমাদের মধ্যে একমাত্র দেবারতিই আসার আগে আন্দামান নিকোবর সম্পর্কে বই পত্র ঘেঁটে ঘুঁটে এসেছে, সেই বিদ্যে ফলাতেই মনে হয় প্রশ্ন করলো আচ্ছা আন্দামানের উপজাতি তো জারোয়া, নিকোবরের উপজাতি শুনছি শোম্পেন, তাহলে সেন্টিলেজ রা কোথাকার?
ক্যাপ্টেন অ্যাংলো হলে কি হবে, বেশ ঝরঝরে বাংলা বলেন, আসলে এ মুলুকের সত্তর শতাংশ বাঙালি কিনা। উনি বললেন, “সেন্টিলেজ রা থাকে আন্দামান আর নিকোবরের মাঝে, ব্যারেনের নাম শুনেছেন আপনারা?”
সমস্বরে বললাম, “হ্যাঁ! হ্যাঁ!”
- “ ওই ব্যারেনের কাছাকাছি এক দ্বীপে ওদের বাস, ভয়ানক হিংস্র এখনো! খুব বেশি সরকারকে এন্টারটেন করে না। সভ্য কিছু ব্যবহার করে খুব কম, আর পোশাক এখনো পরে না বোধ হয়“
- “গেলে দেখা যাবে ওদের?’ উৎসুক প্রশ্ন প্রিয়মের।
- “কেন রে? ওরা কি মানুষের বাইরে? তোকে কলকাতার বাড়িতে জাপানী রা দেখতে এলে কেমন লাগবে? তুই না প্রোগ্রেসিভ?” খেঁকিয়ে উঠলো দেবারতি। আমতা আমতা করে প্রিয়ম চুপ করে গেলো। ইদানীং বড় ভাব দেখছি দুটো তে, আমরা অবশ্য নেমন্তন্ন পেলেই খুশি।
- “যাওয়া নিষেধ।“ ক্যাপ্টেন হেসে বললেন, “ বললাম না ভয়ানক হিংস্র, আমরা অনেক সময় জলে লাশ ভাসতে দেখি।“
- “লাশ!?” খেয়া ভাবী শিউরে উঠলেন
- ‘ হ্যাঁ ম্যাডাম, চামড়া ছাড়া্নো লাশ, সে যে কি ভয়ানক… শুনেছি ওরা নাকি আমাদের এত হেট করে যে আমাদের চামড়া ছাড়িয়ে ঘর সাজায়, ওই স্টাফড অ্যানিম্যাল টাইপ। মানুষের মাংস যখন সবচেয়ে সুস্বাদু, চামড়াও তুলতুলে হবে, কি বলেন? হে হে!”

আমি আর পারলাম না, উঠে এলাম ডেকে। তারপর দেখি বাকিরাও একে একে এসে জুটল। ভাবীর মুখ দেখি ফ্যাকাশে হয়ে গেছে, সেটা দেখে;
- হুঁহ! চামড়া ছাড়ানো লাশ! একটা ঢপ দিয়ে দিলো। ভাবী আপনিও যেমন।“ ঋজু তাচ্ছিল্যের সাথে বলে উঠলো।
- “ আমারও তেমন কনভিন্সিং লাগলো না, কোনো বইতে বা রিসার্চ পেপারে বা কোথাও পড়িনি এমন।“ দেবারতির কথা শুনে খেয়া ভাবী খানিক স্বাভাবিক হলেন মনে হয়। আমরা ডেকে আড্ডা দেওয়া শুরু করলাম।
সবাই বেশ চুটিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলাম ছাদে । প্রায় বিকেল হয়ে আসছে । চারিদিকে অকুল সমুদ্র –নীল ।তার ব্যাপ্তি মনের সমস্ত সঙ্কীর্ণতা কে কোথায় যেন পরাজিত করে। অনেক দিন পর আবার অফিস স্টাফদের সাথে ট্যুর । অফিস যাপনের সঙ্কীর্ণ গণ্ডির বাইরে যে একটা আলাদা মানুষ থেকে যায়, আদতে সে অন্যরকম, সেটা বোধহয় এরকম ভাবে মিশলেই বোঝা যায় ।
“একটা দারুন জিনিস খাবে জামালদা?”, প্রিয়ম জিজ্ঞেস করল ।
- “কি ?”
- “একটা বিদেশি স্কচ । হেব্বি । মেয়েরা খাবি তো? নাকি আবার ন্যাকামো মারবি?”
- “আরে নিয়ে আয় , সবার জন্য ভাবতে গেলে নিজেই খালিপেটে থাকবি ।“, খেয়া ভাবী এতক্ষণে বেশ হাসতে হাসতে উত্তরটা দিল ।
- “৫ মিনিট দাড়াও , নিয়ে আসছি নিচে থেকে ।“ , বলে প্রিয়ম বেরিয়ে গেল ।
কি ভাল লাগছিলো চারিদিকে নীল নীল জল দেখে । দূরে ঢলে যাচ্ছে সূর্য ধীরে ধীরে । একটা অদ্ভুত শান্তি, তৃপ্তি আমায় ঘিরে । এর মাঝেই সন্ধ্যের জলখাবার চলে এল । গরম চা , প্যাকেট করা সামোসা আর রোস্টেড বাদাম । একজন ক্রু হাসিমুখে সারভ করে চলে গেল ।
“ভালই হয়েছে । বাদামটা ভালো কাজেই লাগবে “, জামাল দা বলে উঠলো ।
“খরচ করে লাভ আছে বলুন জামাল ভাই, গভর্নমেন্ট ভেসেলে এই আরাম টা পাওয়া যেত না” গরম সামোসায় কামড় বসিয়ে দেবারতি উক্তি।।
“সে সব ঠিক আছে, কিন্তু প্রিয়ম এতক্ষণ কি করছে ?, স্কচ এর নাম শুনার পর এসব চা-ফা আর ভালো লাগে?”
“দাড়াও দেখছি । ব্যাটাকে ধরে নিয়ে আসছি ।“ বলেই ঋজু উঠে পড়ল ।
আমি ততক্ষণে রেলিং এর পাশে চলে এসেছি। সাগরকে এরকম্ভাবে উপলব্ধি হয়ত কখনো করিনি । কতটা সময় যে কেটে গেছে সূর্যাস্তের দিকে চেয়ে মনেও নেই । লাল আবির আর সোনা রঙের উদ্ভাসে সমুদ্র তখন সদ্য যুবতী, ধীরে ধীরে যে রহস্যময়তা শিখবে। অপূর্ব!
হটাত ঋজু এর চিৎকার শুনে ঘোর ভাঙল ।
“প্রিয়ম দা তো নীচে নেই!”
দেখি দৌড়ে উপরে এসে হাঁপাচ্ছে সে, ফরসা মুখটা উত্তেজনায় লাল।
- “ কি হলো ?প্রিয়ম নেই মানে!” এগিয়ে এলো দেবারতি
- “ তোমাদের কেবিন আমাদের কেবিন কোথাও নেই দেবারতি দি, শুধু প্রিয়ম দার রুকস্যাক টা খোলা পড়ে আছে। আর ঘরের মেঝেতে…”
- হাতটা তুলে ধরলো সে, প্রিয়মের চশমা , কাচে রক্তের ধারা,
- “ ঘরের মেঝেতেও… অনেকটা…”
চিৎকার করে উঠলেন খেয়া ভাবী, “ কি বলছিস ভাই?”
“ক্যাপ্টেনের কাছে চল, কুইক!” আমরা সবাই দৌড়লাম ইঞ্জিন রুমের দিকে, শুধু দেবারতি নীচে নেমে গেলো।
শান্ত ইঞ্জিন রুম, হালকা একটা ট্রাইবাল মিউজিক বাজছে, স্টিয়ারিং গীয়ারে ক্যাপ্টেন একা, এছাড়া দুজন ক্রু আছে। আমাদের দেখে সহাস্যে হাত তুললেন তিনি। তারপর ক্রু এর হাতে গীয়ার দিয়ে বেরিয়ে এলেন।
- “বলুন”
উতেজনার প্রাথমিক রাশ টা থামিয়ে বললাম , “ আমাদের এক বন্ধু, প্রিয়ম, ওই চশমা পড়ে, তাকে খুঁজে…”
- “প্রিয়ম বাবু তো? উনি তো এসেছিলেন একটু আগে, স্কচ অফার করলেন। আহা মোলায়েম, সিল্কের মত পুরো! খুব যত্ন আত্তি করেন নিজের বোঝাই যাচ্ছে।“
- “ কি বলছেন বুঝছি না, প্রিয়ম এসেছিলো? কিন্তু নীচে কেবিনে ওর চশমা, রক্ত পড়ে আছে.।“
- “ হ্যাঁ উনি সিঁড়িতে পড়ে চোট খেয়েছেন, আমি ফাস্ট এইড করে দিলাম। তারপর বললেন মন খারাপ লাগছে, একা সমুদ্র দেখতে চান, তাই সে ব্যবস্থাও করে দিলাম। এখন ওঁকে ডিস্টার্ব করা মানা। তাই আমি চাইলেও আপনাদের সাহায্য করতে পারলাম না!”
- “ হোয়াট দা হেল! হোয়াট ইজ দা মিনিং অফ ইট? ইয় ব্লাডি সোয়াইন!” ঋজুর এমনিতেই মাথা গরম, তার ওপর প্রিয়মের অন্তর্ধান আর রক্ত প্রথম ও আবিষ্কার করেছে, প্রচণ্ড উত্তেজিত। ক্যাপ্টেন ওর কথায় কর্ণপাত ও করলো না। তেমনি শান্ত গলায় বলল, “ আপনারা ডেকে যান, ঠিক সময় প্রিয়ম বাবুর সাথে আপনাদের দেখা হয়ে যাবে। আর মনে রাখবেন, এটা ডাঙ্গা নয় আর ফোনে টাওয়ার ও নেই , তাই নিজেদের সামলে রাখুন।“
প্রচ্ছন্ন হুমকি তে যেন ছিটকে চলে এলাম ডেকে। খেয়া ভাবী নিঃশব্দে কেঁদে যাচ্ছে। মুহ্যমান হয়ে বসে পড়লাম ডেকের ওপর রাখা চেয়ারে। অন্ধকার নেমে এসেহে তখন সমুদ্রের বুকে। ম্যাকাবরে জ্বলে উঠেছে সার্চ লাইট। ডেকে আলো কম আঁধার বেশি।
জামাল ভাই ই প্রথম কথা বললেন, “ এই ক্রুজ টা কলকাতা থেকে কে বুক করেছিলো?”
- “করেছিলো তো দেবারতি, ওর কোন কন্ট্যাক্টের থ্রুতে।“ আমি উত্তর দিলাম।
- “দেবারতি, কন্ট্যাক্ট টা যার থ্রু তে পেয়েছিলি তার নাম্বার আছে?”
কোনো উত্তর নেই। গুমরে আছে মনে হয়। ছেলেটা কোথায় গেলো, কিরকম একটা অজানা ভয়ে জমে আছি আমরা।
- “ অ্যাই দেবারতি!”
এবারেও উত্তর নেই। বিদ্যুৎচমকের মত মনে এলো আরে ও তো কেবিনে নেমে গেছিলো।
- “ জামাল ভাই, ঋজু , কুইক। দেবা নীচে কেবিনে নেমে গেছিলো, আমার মনে আছে।“
মন কে বোঝাচ্ছিলাম, নীচে গিয়ে দেখবো প্রিয়ম আর দেবারতি জমিয়ে ঝগড়া করছে বা চুমু খাচ্ছে। যা খুশি করুক, ওরা যেন থাকে নীচে। কিন্তু… ঋজু শুধু ধপ করে বিছানার ওপর বসে পড়লো, চোখে জল।
- “কি হচ্ছে প্রবাল দা, এগুলো... “ আমি ওর প্রশ্নের কোনো উত্তর খুঁজে পেলাম না। কিরকম জড় লাগছে নিজেকে। এমন কোনো অভিজ্ঞতার সিনেমা দেখলে বা গল্পের বই পড়লে ধুর বোগাস প্লট ভেবে হাসতাম। কিন্তু এটা যে বাস্তব, ভীষণ ভাবে বাস্তব!
ভূত? ক্যাপ্টেন টা ভূত? এই ক্রুজ টাই ভৌতিক! ধুর! অল বোগাস। ক্যাপ্টেনের কিছু চক্রান্ত এর পিছনে, কি করবো, কি করবো এখন!
“যথেষ্ট হয়েছে, যথেষ্ট!!!!” চিৎকার করে উঠলো ঋজু, “ আমি জবাব চাই! ওই শালা ক্যাপ্টেনের বাচ্চা! ওই খানকির ছেলের হাত আছে এতে। শালার বিচি তে দুটো লাথ মারলে গড়গড় করে সব উগলে দেবে!” জামাল ভাইও দেখলাম ঋজুর হাত টা চেপে ধরে বললেন, “ ওঠ, চল ইঞ্জিন রুমে! দেখি কার বাপের কত দম।“
ওরা দরজার দিকে এগোলেও আমি দাঁড়িয়েই রইলাম, মাথাটা বোদা মেরে গেছে, কিরকম হ্যালুসিনেশানের মত লাগছে।
- “ প্রবাল দা, এসো!” ঋজুর ডাকে সম্বিৎ ফিরলো।
- “ যা তোরা, আসছি, চোখে মুখে একটু জল দিই।“
- “তাড়াতাড়ি।“ বেরিয়ে গেলো ওরা।
অবিশ্রান্ত জলের ছলাত ছলাত আর ইঞ্জিনের এক ঘেয়ে শব্দের মাঝখানে দাঁড়িয়ে রইলাম, ফাঁকা কেবিনে, যেখান থেকে আমার দুই প্রিয় সহকর্মী হারিয়ে গেছে, অবাস্তব ভাবে।
মেঝতে যেখানে প্রিয়মের (?) রক্ত পড়েছিলো সেদিকে চোখ গেলো, শুকিয়ে কালচে হয়ে গেছে, তারপর আরো একটা ব্যাপার চোখে পড়লো। আশ্চর্য , এতক্ষণ কি অনভ্যস্থ চোখ আর উত্তেজনা ছিলো বলেই এটা নজরে আসেনি। রক্তের দাগটা একটা লম্বাটে আকারে ঘর থেকে বেরিয়ে গেছে, , যদিও সেটা মোছা হয়েছে পরে, কিন্তু হলদেটে মেঝের ওপর সুক্ষ্ম একটা লালচে আভা বোঝা যাচ্ছে খুঁটিয়ে দেখলে।
বুকে বেজে উঠলো মাসাইদের ঢাক, এগিয়ে গেলাম, আমাদের কেবিন, ডাইনিং হল, স্টুয়ার্ড কেবিন, ক্যাপ্টেন কেবিন,কমন টয়লেট… যাহ হারিয়ে গেলো! আর বোঝা যাচ্ছে না, খুব ভালো করে মোছা
হয়েছে যেন। কমন টয়লেট তো ক্রুজের একদম শেষের দিকে, তারপরেই লোহার চাদরের দেওয়াল, তার ওপারেই ভারত মহাসাগর। অদ্ভুত ব্যাপার এতগুলো কেবিন ক্রস করলাম কোন ক্রু কে দেখলাম না, গোটা চারেক ক্রু আছে, একজন না একজনের তো থাকা উচিত ছিলো। অন্তত ডাইনিং হলে।
বুরবকের মত দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক তাকালাম, একবার কমন টয়লেটের মধ্যে দেখবো? নাকি ওপরে উঠে ওদের ডেকে নিয়ে আসবো?
নাহ। যাই। একবার দেখেই যাই। কিছুই তো নেই মনে হচ্ছে…
ধাক্কা দিয়ে টয়লেটের দরজা খুলতেই অসম্ভব খারাপ পেচ্ছাপের গন্ধ ভক করে নাকে লাগলো।
ক্রুদের ব্যবহারকরা টয়লেট, কত আর পরিষ্কার হবে! কিন্তু ভিতর ফাঁকা, কিচ্ছু নেই, অর্থাৎ আমি যা দেখতে চাই তা নেই।
ফেরার পথ ধরেছি, এমন সময় ক্যাপ্টেন কেবিনের দরজা খুলে গেলো নিঃশব্দে, ক্যাপ্টেন বেরোলেন, হাত দুটো টাওয়ালে মুছতে মুছতে। আমাকে সামনে দেখে খানিক চমকালেও হাসিমুখে বললেন, “কি ব্যাপার, মন মেজাজ ঠিক নেই নাকি?”
এটা কে? অমানুষ! জানোয়ার নাকি ফেরেস্তা।
- “অস্বাভাবিক সেটা? আমার বন্ধুদের সাথে দেখা হয়েছে আপনার? ওরা তো আপনার কাছেই গেলো।“
- “হুম হয়েছে। এত জেদ করছিলো তাই বাধ্য হয়ে প্রিয়ম বাবু, দেবারতি ম্যাডামের কাছে যেতে দিতেই হলো!”-
- “মানে! ওদের পাওয়া গেছে! কোথায় ছিলো...” এক অসম্ভব উচ্ছ্বাস উথলে উঠলো আমার গলায়।
- “নিজেই দেখবেন, আসুন।“ ক্যাপ্টেন নিজের কেবিনের দরজাটা খুলে দিলো। পরিপাটি করে সাজানো কেবিন,আমাদের কেবিনের মতই, হালকা মিউজিক বাজছে, মৃদু আলো, ঘরময় এক অদ্ভুত সুগন্ধ, যদিও কেমন যেন অস্বস্তি হচ্ছে। কিন্তু কোথায় কে, শুধু বিছানা চেয়ার পোশাকের আলমারি।
চোখ সইয়ে নিতেই অস্বস্তির কারণ টা স্পষ্ট হলো, ঘরময় সুগন্ধির মধ্যে একটা চামসে গন্ধ আন্ডারটোন হিসেবে পাওয়া যাচ্ছে, আর মেঝেতে অদ্ভুত বিসদৃশ ভাবে দুটো লোহার আংটা।
আমাকে অবাক করে ক্যাপ্টেন আংটা দুটো ধরে টান মারতেই একটা ট্র্যাপ ডোর খুলে গেলো মেঝেতে, তারপর হাসিমুখে আমাকে বলল, “ নিন, নামুন, সিঁড়ি আছে।“
- “এটা কোথায়?”
- “যেখানে আপনার সক্কল বন্ধুরা আছে, আপনার অপেক্ষায়, নামুন নামুন।“ কিছু বুঝে ওঠার আগেই জোর ধাক্কায় ট্র্যাপডোরের সিঁড়িতে নেমে পড়লাম, চামসে গন্ধ টা বাড়ছে।
তারপর...
আমি ভাবিনি কোনোদিন এমন দৃশ্য আমাকে দেখতে হবে, আর সেটাই জীবনের শেষ দৃশ্য... কোনো মানুষ ই মনে হয় এমন ভাবে মরতে চায় না... আমিও ভাবিনি, কল্পনাও করিনি...
নাতিদীর্ঘের একটা বেসমেন্ট, চামসে গন্ধ ম ম করছে, মাঝখানে সার বেঁধে শুয়ে আছে প্রিয়ম, দেবারতি, ঋজু, জামাল ভাই, খেয়া ভাবী। প্রিয়মের কপালের ক্ষত টা তখনো তাজা। ঋজুর ঘাড়টা অস্বাভাবিক ভাবে বেঁকে আছে। ম্যাকাবর ম্যাকাবর... ভয়ানক... ওই জন্যই নামের অর্থ ভয়ানক।
- “মিলিটারি জানবে জোর করে আমাকে ভয় দেখিয়ে আপনারা সেন্টিলেজ দের দ্বীপে নেমেছেন। আমার কোনো দায় নেই, আর আমার ক্রু রা আমার মতই। আর আপনি জানলেন আসলে আপনারা আমার ছোট্ট চামড়ার কালেকশান টা আরেকটু গুছিয়ে নিতে সাহায্য করলেন। মানুষের চামড়ার সে যে কি উত্তাপ!!” ফিসফিস করে কানের মধ্যে শব্দ গুলো ভেসে এলো। আর চোখ তখন ঘরের দেওয়ালে সাজানো সারি সারি সাদা কালো তামাটে হলদে চামড়ার ট্রফিতে আটকে আছ...টুকরো টুকরো চামড়ার কোলাজ... যেখানে কিছুক্ষণের মধ্যে আমিও..
এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: অনুগল্প

শঙ্খচিলের স্বপ্ন ডানা ~ লুতফুল হোসেন

গলুইয়ের উঁচু আড়ালটায় বেশ খানিকটা ছায়া। দড়ি পাতা খাটিয়ায় হাতবালিশে কাত হয়ে আধঘুমে শুয়ে জমির শেঠ। সকালের রোদটা এখনো তেজ পায়নি। বাতাসটা থেকে থেকে হালকা পরশ বুলিয়ে যাচ্ছে। সাথে আঁশটে নোনা গন্ধের আমেজটা মনের মধ্যে এলোমেলো ভাবনাগুলোয় তুফানের ধাক্কা দিয়ে যাচ্ছে।
সেই হাফ প্যান্ট পরা বয়স থেকে এই গন্ধ, এই বাতাসের সাথে দিন-রাত রোদ-বাদলা ঝড়-তুফান। য্যান এইটাই জীবনের সবচাইতে বড় প্রেম। দেখতে দেখতে একুশটা বছর গেছে। সারেঙের ঘরটার দিকে তাকায় সে চোখ খুলে। কি ঝকঝকা রোদ ঝিকমিক করা কাঁচে ঘেরা সেই ঘরখানা।
মনের মধ্যে তুমুল স্বপ্ন ছিলো, সারেঙ হবে। তীব্র ঝড়ের মধ্যে ওই ছ্য় হাতের চাকার হাতল দাবড়ে শক্ত হাতে জলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চালাবে ট্রলার, এঞ্জিন বোট, হয়তো আরো বড় কিছু, জাহাজ। দিনে দিনে বুঝতে পারে শুধু বয়স বাড়লেই সে সুযোগ হাতে আসবে না। স্বপ্নের ঘুড্ডির লেজগুলো তাই জীবন থেকে খসতে থাকে ধীরে ধীরে। কিন্তু এই নোনা জল, আঁশটে গন্ধ আর মাতাল ঢেউয়ের দোলায় জান বাজী রাখা সাগরের গান এতোদিনে শরীরের কোষে কোষে মিশে গেছে। মুটে থেকে খালাসীর সহকারী। তারপর খালাসী। শেষে সর্দার। সেই একঘেঁয়ে জীবনে নতুন তকমা জুটলো, যখন মাছধরা ট্রলারের পাশাপাশি সমুদ্রে নামলো ছোট ছোট ঝা চকচকা এঞ্জিন বোট। পর্যটক যাত্রীরা ঘোরে তাতে চেপে। কাছাকাছি দ্বীপে যায় আসে, গন্তব্যহীন ভাসে দিনে রাতে।
মনে মনে হেসে ওঠে মানুষটা। অনেকের চেয়ে ম্যালা ভালো আছে সে। কোনো আক্ষেপ নেই। খালাসী সর্দার হয়েই তো এক প্রকার সুখী ছিলো। এখন আবার পোষাকেও কেতা হয়েছে। কোম্পানীর পাটভাঙ্গা ড্রেস পরে ডিউটি করে। সাহেব সুবো মানুষ-ম্যামদের নিয়ে দিন কাটে। মাছের আঁশটে নোনাজলে ভিজে আর দিন যায় না তার।
কষ্টের দুই যুগে যা শিখেছে তাতে এমন একখানা বোট সে চালাতে পারে ভালোই। অবশ্য তাতে খুব হেরফের আর কি! লেখা পড়া যে জানা নেই মোটেই। ওটুকু না থাকলে তো যো নেই ওই কাপ্তানের চাকা হাতে নেয়।
এই বোটের কাপ্তান মানুষটা বেশ ভালো। তার জন্যই তৃপ্তি আর আনন্দের পাল্লাটা ভারী বেশী এই কাজে আসবার পর থেকে। দু’দিনের চুক্তি ট্রিপে মাঝে মাঝে ওর হাতে কাপ্তানের চাকার ভার দিয়ে লোকটা উঠে পড়ে হুইল হাউসের ছাদে। বিশেষ করে চাঁদনী রাতে কিংবা কোনো বৃষ্টির রাতে। কিছুটা সময়ের জন্য তখন জমির শেঠ তার স্বপ্নের জীবনটায় ঘুরে ফিরে আসে যেনো।
হুইল হাউসের দখল পেলে তার চোখের ভেতর সাতশ তারার ঝিকিমিকি চকমকিয়ে ওঠে যেনো। জোড়া লাইটের জোরালো আলোয় সামনের দিকে তাকিয়ে থাকে সে ধ্যানমগ্নের মতো। দৃষ্টি তার বিঁধে থাকে কোনো অনন্তের দিকে। সামনের কন্ট্রোল প্যানেলের রেডিও ট্রান্সমিটার, মোর্স কোডের বাতি, কম্পাস এসবের দিকে চকিতে চোখ বুলিয়ে মাঝে মাঝেই সে ভাবে, ‘ওসব ছাড়াও আমার চলে’। এই সাগরের মাঝে চোখ বেঁধে এমন বোট চালাতে দিলেও সে পারবে তা অনায়াসে। বলতে গেলে নিজ করতলের মতোই তার চেনা হয়ে গেছে এ সাগর । এর সঙ্গেই তো জীবনের সব সুর বাঁধা। সুখ দুঃখের রাগ সাধা।
জমিলার অভিমানী মুখটা মনে পড়ে। সাগরটারে মাঝে মধ্যেই খুব হিংসা করে জমিলা। ক্যান করে! শিরায় শিরায় উত্তাল ঢেউয়ের সাথে যুঝে চলার যে নেশা তাকে এই জলের বুকে ভাসিয়ে নিয়েছে দুই কুড়ি বছরের বেশী। সেই প্রেম! সেই টানেরে তার হিংসা !
একমাত্র ছেলেটার নাম রেখেছে সে সূরুয শেঠ। স্কুলে পড়া তার শেষ হয় য্যান কাপ্তান হওয়ার পরে। জেগে থাকলেও এই স্বপ্নটা তাকে তাড়া করে। ব্যাপারটাকে সে এক রকম উপভোগও করে।
অথচ খুব ভালো জানে সে - এই সাগর যে কোনোদিন কাউকে টেনে নিতে পারে অনন্তের পথে। যে কোনো সকাল হতে পারে কারো নিকটজনদের শোকে পাথর হবার কাল। কতোজনকেই তো এই জীবনে দেখলো যেতে সে, না ফেরার দেশে। তবু স্বপ্নমগ্নতায় বুঁদ হয়ে প্রতিটি দিন সে ভালবাসে প্রতিটি সমুদ্র যাত্রা। মনের মধ্যে এ যেনো তার এক রকম যাত্রা নিরুদ্দেশ।
কখন চোখ জোড়া আবার বুঁজে এসেছিলো টের পায়নি। তার সারেঙ, কাপ্তার আবীর স্যারের গলায় চোখ মেলে উঠে বসে জমির শেঠ। “আজকে দিনের ট্রিপ বিকেলে শেষ করে সময় বেশী পাবেনা। সন্ধ্যায় দুই দিনের সফরে নোঙ্গর তুলতে হবে কিন্তু। আসার পথে শুনলাম বিকালে সাত নম্বর ঘোষণা দিতে পারে। খেয়াল করে গুছিয়ে নিও কিন্তু সব। বুঝলে তো জমির !”
একটা বড় ঢেউ এসে আছড়ে পড়ে। এক কুড়ি মানুষ নিয়ে জলে দাপিয়ে চলার যানটাও যেনো আলাপে যোগ দিতে একখান হালকা দুলুনি দিয়ে ওঠে। একজোড়া শঙ্খচিল ডানা ঝাপটে হুইল হাউসের ছাতে লহমার বিরতি নিয়েই আবার উড়ে যায়। সেই যাওয়া ছোট্ট ডেকটায় জুড়ে থাকা বাতাসটাকে নাড়িয়ে দ্যায়।

এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: অনুগল্প

বহুমাত্রিক ~ অরিজিৎ বাগচী

অস্তিত্ব বোধের স্লোগান যখন 
আত্মা তে উঁকি মারে -
তখন বোঝা যায় জীবন ও ভালোবাসা বোধ দুটি একে অপরের পারস্পরিক স্বত্বা ।।
এরা এক সাথে পাশাপাশি চলে,
হামাগুড়ি দেয়, প্রতি ফলিত হয় একে অপরের গায়ে ।।
কিন্তু এদের মিশে যাওয়াটা, দিগন্তের ওপারে, যা শুধু মাত্র বিশ্বাসের আস্তরন, না দেখা সত্যির অসহায়ত্বের যবনিকাপাত ।।
এই দুই বোধের জন্ম কথা স্কেচ করে সম্পর্ক, সম্পর্ক ই হল এই দুই ভেজা ট্রাম লাইনের শেষ একক,
ট্রামের টুঙটাঙ।।
এর পর একটু ভেজা তুলির টান ক্যানভাসে ,
আর সময়ের প্রেক্ষাপটে জেগে ওঠা এক সবল পরিকাঠামো - অনুভূতি ।।
যে অন্ধ নয় , বধির নয় , তাই সে ভালোবাসা ও নয় ।।
শুধু ভালোবাসার মতো দেখতে কিছু ভালোলাগা চেহারা ,
যা অন্তঃসার শূন্য সুডৌল নিটোল পিটুইটারির জ্যামিতি মাত্র 
এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: ফিচার

প্যারা অলিম্পিয়ান ক্ষীণচরণ ~ সুধাংশু চক্রবর্ত্তী

বামাচরণের ঘর আলো করে জন্ম নিলো একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তান। কিন্তু একটা ব্যাপার দেখে বাবা-মা দু’জনেরই চোখ কপালে উঠলো। সন্তানের পা’দুটো এতটাই ক্ষীণ যে সে দুটোকে পাটকাঠি বলে ভ্রম হয়। মা অভাগী দেবী দুঃখে চোখের জল ফেললেন নিঃশব্দে। বাপ বামাচরণ পাথর হয়ে বসে ভাবনায় ডুবে থাকেন সবসময়। এই পুত্রের ভবিষ্যৎ কি হবে তা নিয়ে বড়ই চিন্তিত।
যাই হোক্‌ পুত্র বড় হতে লাগলো স্বাভাবিক নিয়মে। নামকরণের সময় বাপ বামাচরণ অনেক ভেবেচিন্তে পুত্রের নাম রাখলেন ক্ষীণচরণ। কচি ক্ষীণচরণের শরীরে ওই একটাই মাত্র খুঁত। নইলে তার দিকে একবার তাকালে চোখ ফেরানোর জো’টি থাকে না। এতটাই সুন্দর দেখতে সে। ক্ষীণচরণের মা অভাগী দেবী ছেলেকে কোলে নিয়ে নিঃশব্দে কাঁদেন আর শাড়ির আঁচলে চোখ মোছেন।
বামাচরণ দুঃখী স্ত্রীকে সান্ত্বনা দেন, আহা, ওইটুকু খুঁত ছাড়া এমন সুন্দর পুত্র পেয়েছো তুমি। অমন সুন্দর পুত্র অনেক খুঁজে আর একটাও পাবে না এই শহরে। ওকে নিয়ে ভেবো না। আমার যা টাকাপয়সা রয়েছে তা দিয়েই পুত্রের ওই খুঁতটুকু ঠিক ঢেকে দেবো। দেখে নিও তুমি।
মায়ের মন তাতে বাঁধ মানবে কেন? তিনি একহাতে চোখের জল মোছেন। অন্য হাত দিয়ে কবিরাজি তেল মালিশ করেন পুত্রের ক্ষীণ চরণ দুটিকে শক্তপোক্ত করার আশায়। বুকে আশা পুত্রের এই ক্ষীণচরণদুটি একদিন শক্তপোক্ত হয়ে উঠবেই তাঁর হাতের গুনে।
যাইহোক্‌ ক্ষীণচরণ একদিন বড় হলো। দু’পায়ে হাঁটতে না পারলেও এদিক সেদিক চলে যায় পেছন ঘষটাতে ঘষটাতে। ভয়ডর বলে কোনো বস্তুই যেন তার মনে স্থান পায়নি। বাপ বামাচরণ দূর থেকে দেখেন আর ভাবেন, আর কিছু না হোক পুত্রের হাতদুটো কিন্তু শক্তপোক্ত হচ্ছে এতে। এই পুত্রই একদিন পৃথিবী শাসন করবে ওই হাতদুটো দিয়ে। এসব ভেবেই পুত্রকে উৎসাহ দেন। যেখানে সেখানে চলে যেতে দেখেও বাধা দেন না।
ক্ষীণচরণের বয়স যখন সাত বছর হয়েছে ঠিক তখনই একটা দুর্ঘটনা ঘটে গেল। বাপের আশকারা পেয়ে পেয়ে ততদিনে ঘরের বাইরেটা বেশ চিনে নিয়েছে সে। কিছুতেই ঘরে থাকতে চায় না। মা অভাগীদেবীর চোখ এড়িয়ে পালিয়ে যায় বাইরে। সেদিনও মায়ের চোখ এড়িয়ে পালাতে গেছিলো বড় রাস্তার ওদিকের খোলা মাঠটায়। বেশ কিছু কচিকাঁচা খেলা করছিলো সেখানে। মন্দ কপাল। পেছন ঘষটাতে ঘষটাতে রাস্তার মাঝখানে পৌঁছোতেই একটা মোটরগাড়ি এসে হামলে পড়লো তার ওপর। সেই দুর্ঘটনায় প্রাণে বেঁচে গেলেও ক্ষতিগ্রস্ত হলো তার ক্ষীণ চরণদুটি। বলতে গেলে মোটরগাড়িটা তাকে ক্ষীণচরণ থেকে একেবারে হীনচরণ করে ছাড়লো।
বামাচরণ এতটুকুও দমলেন না তাতে। পুত্রের উপযুক্ত চিকিৎসা করালেন শহরের সেরা নার্সিংহোমে রেখে। সেরা ডাক্তারদের হাতে পুত্রকে সপে দিয়ে। হীনচরণ ওরফে ক্ষীণচরণ একদিন বাড়ি ফিরে এলো সুস্থ হয়ে।
বাড়িতে এসে বামাচরণ পুত্রকে সাহস যোগালেন, ভয় পেও না সোনা। সবসময় তোমার পাশেই আছি। ঐ বিশ্রী চরণদুটো গেছে তো কি হয়েছে। তোমাকে এমন দু’টো চরণ উপহার দেবো যা দিয়ে তুমি একদিন বিশ্বজয় করবে।
যেমন কথা তেমন কাজই করলেন বামাচরণ। অনেক টাকাপয়সা খরচ করে বিশেষ ধাতুর তৈরী একজোড়া চরণ আনালেন বিদেশ থেকে। সেই ধাতুর চরণ পেয়ে হীনচরণ পুত্র আবার ক্ষীণচরণ হয়ে গেল।
বামাচরণের বাল্যবন্ধু কৃষ্ণধন বহুকাল বাদ দেখা করতে এলো বন্ধুর সাথে। তিনি ক্ষীণচরণকে ধাতুর পায়ে তড়তড়িয়ে হাঁটতে দেখে অবাক হলেন। তাকে উৎসাহও দিলেন প্রচুর। ফিরে যাবার আগে বামাচরণকে একটি সুপরামর্শ দিয়ে গেলেন, ওহে বামাচরণ, এই পুত্রকে তুমি অলিম্পিয়ান তৈরি করো। প্যারা অলিম্পিয়ান। দেখে নিও কালে কালে খুব নাম করবে ও। তোমার এবং দেশের মুখ উজ্জ্বল হবে তাতে।
বাল্যবন্ধুর পরামর্শ বামাচরণের মনে ধরলো খুব। পরদিনই পুত্রকে তুলে দিলেন একজন দৌড়বীর ওস্তাদের হাতে। পুত্রকে দৌড়বীর বানিয়ে ছাড়বেন এই পণ করে। ওস্তাদের কাছে তালিম পেয়ে ক্ষীণচরণ কালে কালে একজন দৌড়বীর হিসেবে খুব নাম করলো। প্রথমে শহরে। তারপর জেলায় খুব নাম কামালো প্যারা দৌড়বীর হিসেবে। তারও পর দেশের হয়ে প্যারা অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করে প্রচুর মেডেল পেতে লাগলো। প্যারা অলিম্পিয়ান ক্ষীণচরণের নাম দেশ-বিদেশের মানুষজনের মুখে মুখে ঘুরতে লাগলো।
সেই থেকে ক্ষীণচরণের জীবনধারাটাই আমূল বদলে গেল। অনেক অনেক টাকা হলো। টাকার টানে বেশ কিছু সুন্দরী বান্ধবীও এসে জুটলো তার কপালে। সেইসব সুন্দরীদের কাছে ক্ষীণচরণের ধাতুর পা’দুটো তেমন গুরুত্বই পেলো না। ক্ষীণচরণ দু’হাতে তাকা ওড়াতে লাগলো সুন্দরীদের পেছনে।
বামাচরণ সব দেখেশুনে বিপদের সংকেত পেলেন। উপায়ান্তর না দেখে একদিন পুত্রকে ডেকে উপদেশ দিলেন, শোনো বাছা, এভাবে টাকা ওড়াতে ওড়াতে তোমার মাথাটাই না ঘুরে যায়। তাহলেই কিন্তু একেবারে গোল্লায় যাবে। পারলে নিজেকে সংযত করো।
ক্ষীনচরণ বাপকে ভারী পছন্দ করতো। তাই বাপের কথামতো চলাটাই মেনে নিলো। সুন্দরীদের আর পাত্তা দিলো না। টাকাপয়সা খরচ করে খুব হিসেব করে। সবকিছু আবার আগেরি মতো হয়ে গেল। দেখে বাপ বামাচরণ নিশ্চিন্ত হলেন। মা অভাগীদেবী খুব আনন্দিত হলেন পুত্রের এই পরিবর্তন দেখে।
বামাচরণ যতকাল বেঁচে ছিলেন ক্ষীণচরণের মধ্যে ততকাল তেমন কোনো খারাপ লক্ষণ দেখা গেল না। কিন্তু বামাচরণ হগত হতেই ক্ষীণচরণের মধ্যে অদ্ভুৎ একটা পরিবর্তণ লক্ষ্য করা গেল। আজকাল ওস্তাদের কাছে তালিম নেবার চেয়ে নারীসঙ্গ পেতে বেশী আগ্রহী হয়ে উঠলো। এবং অহং ভাবটা ক্রমেই প্রকট হয়ে উঠতে লাগলো তার আচরণে।
সেই দেখে মা অভাগী দেবী ভাবলেন ছেলেকে বিয়ে দিয়ে বিপথগামী হবার গেটটা বন্ধ করে দেবেন। সেইমত ক্ষীণচরণের জন্যে একটি সুন্দরী পাত্রী পছন্দ করলেন। সেই পাত্রীকে পুত্রের হাতে তুলে দিয়ে বললেন, একটু দেখেশুনে নে বাবা। একেই তো বিয়ে করবি বাপের বাৎসরিক শ্রাদ্ধ সম্পন্ন করে।
ক্ষীণচরণ আপত্তি করলো না। কিন্তু সুন্দরীদের সঙ্গও ছাড়লো না। একদিন এই নিয়ে তার এবং সেই সুন্দরী পাত্রীটির মধ্যে বেঁধে গেল তুমুল লড়াই। অহংকারী ক্ষীণচরণ রাগে অন্ধ হয়ে নিজের ধাতুর পাদুটো দিয়ে পাত্রীটিকে মেরেধরে সোজা যমালয়ে চালান করে দিলো। পুলিশ এসে ধরে বেঁধে নিয়ে গেল তাকে। নামী প্যারা অলিম্পিয়ান বলে এতটুকুও রেয়াত করলো না।
তারপর থানা থেকে আদালত। আদালত থেকে সোজা জেলে চালান হয়ে গেল দেশের নামী প্যারা অলম্পিয়ান ক্ষীণচরণ। এখন জেলে বসে স্মৃতি হাতড়ে মরছে সে। সুন্দরীরাও কর্পুরের মতো উবে গেল তার জীবন থেকে।
বাপ বামাচরণ স্বর্গে বসে কপাল চাপড়াচ্ছেন তাঁর প্রিয় পুত্রের এই করুণ অবস্থা দেখে। বৃদ্ধা মা অভাগীদেবী নিভৃতে চোখের জল ফেলেন আর দোষ দেন নিজের পোড়া কপালের। 
এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: অনুগল্প

কোন নাগরিকা ~ রাজর্ষি কুণ্ডু

প্রচন্ডতম ভীড় থেকে প্রব্যাবিলিটির সমস্ত আশঙ্কাচূর্ণ মেখে বেরিয়ে এসো, না হয় একটু পরে, অনুপস্থিতির মেঘ দ্যাখো, আমার। তারপর বিশ্বাসের কথা না ভেবে ন’য় চলে যেও, যেরকম অবিশ্বাস না নিয়েই গেছি। আর যদি নাইই আসো, (মানে) যদি অদেখা রয়ে যায় মেঘ, তাহলে বজায় রেখো আশঙ্কাকে। আশঙ্কাই আশা; অস্তিত্বের সমস্ত হাসি শোনাকথা ফুল হোয়ে ফুটে থাকুক, পাশ দিয়ে ছুটে যাওয়া ক্লান্তিকর ট্রেনের জান্‌লা দিয়ে দেখে নেবো অসম্ভবকে, তারপর তো ফের ফিরেই আসি সামাজিকে।
আসলেই কী জানো না? নাকি পারছো না, ঘটনার আড়াল টপকাতে, মূর্ত তো হও এট্‌লিস্ট,ক্যাজুয়াল দৃষ্টিতেই দ্যাখো কীভাবে চাপা পড়ে আছে প্রচন্ড বৈখরী! সামান্য অহেতুকই,এক ভাবনা থেকে আরেক ভাবনার মেরাজের পাশে দাঁড়িয়ে দেখি অবোধ্য সমুদ্র, সেখানকার জটিলতম ভাষা হও, না হয় জামা কাপড়ের ভেতরে হাওয়া’ই ত্বক হোয়ে দেখা দেবে। স্নিগ্ধতার সমস্ত কল্পনা ছেড়ে আকারে এসো অন্তত! আচ্ছা, বিয়োগই দিলাম সফলতা সংক্রান্ত সব ভাষাতত্ত্বকে, রঙ-বেরঙের কলম দিয়ে সম্পূর্ণ ভাবে প্রমাণ পেশ হউক দুঃখ মধ্যের শৌখিনতার অনস্তিত্ব! আগুনে ছাই হোয়ে যাক স্মৃতি সংক্রান্ত গানের সমস্ত কনসার্ট। এ পৃথিবী দুঃখ ও শৌখিনতাকে সমান ভালোবাসে।
এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: ফিচার

শরৎকালের ওপারে ~ আশিষ সমাদ্দার

আজ আমি যুদ্ধের পৃথিবী থেকে ছিটকে গেছি,
লুপ্ত নগরীর শেষ সিঁড়িতে বসে ভেবেছি গতজন্মের কথা,
পূর্ণের কথা,
চিনির সিরা মেখে দাঁড়িয়েছি নগরীর মাঝখানে
আর চারিদিক থেকে দৈত্যাকারে পিঁপড়েরা দৌড়ে আসছে আমার দিকে,
আমি কি তখনও কবি হয়ে উঠতে পারি?
ভোর রাত্তিরের প্রথম সূর্যোদয়ের সাথেই শরৎকাল এসেছিল,
কাশফুল আর মেঘেদের রাশি রাশি বেদনার কারন জেনে
নিজেকে চিৎকার করে ঘুমের ওপারে নিয়ে গেছে,
আর আমি কাদা পায়ে সাহস ছড়িয়ে ছুটে বেড়াই।
তখনও আমার নগরীতে বাতি নেই,
জ্যোৎস্না রাত্তিরে নগরীর শেষ বাঁক থেকে সূর্যকে ভুল বোঝানো শুরু হয়
ভোর রাত্তিরে মল্লিকা ফুলের পাশে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় দেখার সময়
অবশ শরীরে নিজেই বলে উঠেছিলাম,
হেমন্তে হলুদ তুমি,
আর আমি আজও লাল হয়ে আছি।
এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: কবিতা

আলাপন ~ মানস চক্রবর্তী

একলা দাঁড়িয়ে থেকো কোজাগড়ি পাহাড়ের ঢালে
ঠিক এসে যাব রাতের দ্বিতীয় প্রহরে নরম হয়ে এলে
ঝিঁঝিঁর কান্না
মৃত্যুপুরের খুব কাছে আমার ট্রেন দাঁড়িয়ে গেলে
অজানা কেউ লন্ঠন তুলে এগিয়ে দেবে 
প্রতিক্ষিত ঝর্ণা
বর্জনের ইচ্ছা পোষ মানিয়ে কতদুর যাবে
পাতা খসলে কার হাহাকার শোন শিউলী তলায়
নিকানো উঠোনে
যতগুলো তারা ভাসালে দক্ষিণের ঘাটে
আর ঘাট ভাসিয়ে দিলে নগ্ন নির্জনে
দশমী ভাসানে
কলমকারির মেটে কারুকাজ দিয়ে
পাহাড়তলীতে তোমার জলার কিনার
একলা উছল
একলা দাঁড়িয়ে থেকো কোজাগড়ি পাহাড়ের ঢালে
মুক্ত অপেক্ষা রেখো অহিংস অলোর কাছে
চ্ছ্বলাৎছল অলোকানন্দা

এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: কবিতা

রাতের কবিতা ~ শান্তনু দাশ

(১)
এই রাত শুধুই আমার
এই রাত হয়তোবা তোমার
এই রাত জানে তঞ্চকতা
এ'রাত কেবল অন্ধকার
(২)
একটা রাত এমন এসেছিলো
পড়ে থাকেনি কিছু মাত্র বলার
একটা রাত হঠাৎ শুরু হলো
অন্যভাবে অন্য পথে চলার
(৩)
কিছু রাত নিদ্রাহীন শুধুই
স্মৃতির পাতায় নুড়ি পাথর কুড়ায়
কিছু রাত অন্যমনস্ক খুব!
ক্লান্ত চোখে প্রশ্নহীন ঘুমায় ৷
এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: কবিতা

ফিরে এসো প্রেম ~ রঘুনাথ মণ্ডল


কবরের পাশে শুয়ে আছে সময়
জীবন আর মৃত্যুর একমাত্র আত্মীয়
কোপাই স্রোত বয়ে চলে কবর পাশে সময় ছুঁয়ে
তুমি ফিরে এলে কোপাই আর কাঁদবে না
আমার প্রেমের কথা বলো সময়
সেখানে তুমি শরীরী খেলা না খেলে চু কিত্ কিত্ খেলবে
বটবৃক্ষ ঝুরি ধরে দোল খাবে
এক বার এ খেলা খেললে কবর থেকে সরে পড়বে মাটি
আমিও ছোঁব তোমায় ছু.... বলেই-------
এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: কবিতা

হেঁটে যাই পরম নির্ভয়ে ~ সুধাংশু চক্রবর্ত্তী

দ্রুতপায়ে হাঁটতে থাকি বাকী পথটুকু ধরে
ধুলো ওড়ে, ওড়ে খড়কুটো বাতাসে ভর করে।
মনের পরদাতেও লেগেছে রাশি রাশি ঝুলকালি-ধূলি
সেখানেও নেমেছে বুঝি বিষাদের গোধূলি?
তারমানে প্রতিটি দিনান্তের শেষে
অশান্ত মনখানি বিষাদের স্রোতে গিয়ে মেশে!
হয়তো হবে, হয়তো বা নয়
তবুও সোজা পথটি ধরে হেঁটে যেতে হয়
শেষ সীমানার দিকে নিশ্চিন্ত মনে, পরম নির্ভয়ে
সেথায় পাওয়া যে যাবে জীবনের সত্য পরিচয়।
এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: কবিতা

ঘুম ~ রিক্তা চক্রবর্তী

জ্বলন্ত এই বাস্তব থেকে রেহাই চাই
জানো কি, ঘুমটা কোথায় পাওয়া যায়?
রাতের পর এই নিদ্রাহীন রাত
ঘুমের ঠিকানাটা জানা আছে কি কারোর?
পালাতে চাইছি নির্ঘুমের এই কারাগার থেকে
আচ্ছা, ঘুমটা এখনও আসে না কেন?
আমাকে যে ছিঁড়ে ফেলবে দয়াহীন জাগরণ
তোমরা কেউ তো ঘুমকে বলো, আমায় নিয়ে যেতে
পেঁজা তুলোর মত সাদা নরম বিছানায়
মেঘ মেঘ শান্ত ভেজা ঘুম, কিছু আরামপ্রিয় স্বপ্ন
স্বপ্নের রঙটা যেন হয় উজ্জ্বল সবুজ
কালোটা আমি আকাশেই রেখে যেতে চাই
প্রেম নয়,নাম হয়,যশ নয়, আজ শুধু ঘুম চাই
কুয়াশামাখা আচ্ছন্নতায় সে ঠোঁট ছোঁয়াক কপালে
তার সাথে গল্প করতেই আমি চলে যেতে চাই
নিশ্চিন্তিনগরে, দুঃস্বপ্নরা কারাগারে বন্দী যেখানে
ছোট্টবেলার ঘুমপরীর হাত পৌঁছায় না আর কপালে
ঘুমপাড়ানি গানগুলো আজ সুরতাল সব ভুলেছে 
নিদ্রাও আজ ভুলেছে আমায়, একলা এই ধূসরপথে
বিশ্রামের একটু ঘুম চাই, কেউ যদি এনে দিতে পারে
রূপকথার সেই মরণকাঠির 
ছোঁয়াটা কোথায় পাবো, বলতে পারো?
আজকে তুমি যদি না আসো
কষ্ট গুনতে পাগল আমি পথে নেমে চিৎকার করব 
ঘুম, বলোতো অনন্ত এত অল্প কেন?
এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: কবিতা

কিছুটা ব্যক্তিগত,কিছুটা কল্পনা ~ পিয়ালী মজুমদার

১)

বার বার ফিরে আসা এই ভীরু অন্ধকারের বেশে,
এ জন্মে আর আলো হওয়া হল না.…


(২)


একটি অপেক্ষা সকাল, একটি নিরুত্তর বিকেল…
দাঁড়াও রাত্রি! আরও এক রংচটা দিনের আঙিনায় সন্ধ্যা নামল…তোমার ক্লান্ত চোখের মতন.…


(৩)


যাওয়ার বেলায় কে বাজাবে বাঁশি? কে ধরবে হাত! বিষাদের রং ছুঁয়ে প্রতি রাতে জন্ম নিয়েছিল যে লাল, নীল, শ্বেতপদ্মেরা… কে রাখবে তার পাপড়ির হিসাব?


(৪)


তুমি অন্তত আর ভুল কোরো না… জন্মান্তর…
কোনও ভুল ঠিকানায় রেখে এসো না তোমার অনিচ্ছুক মোমবাতি… আবার
এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: কবিতা

নভেম্বর ~ অর্ণবকমল বসুভট্টাচার্য

জানলা খুলছি না।
বাইরে বিকেল ঠায় দাঁড়িয়ে,
বাইরে নভেম্বর

বাইরে উঠোনের গড়িমসি,
হুটোপুটি ছাদে মেলা আঁচলের বিষন্নতা
এই সময়টায়, ভুল বোঝা কথাদের মতো
আমার বড্ড শীত করে।
তুই আসিসনি, তাই ঘুমের ওষুধ,
তুই আসিসনি বলে সন্ধে ভর্তি শিশির...
এসব তোকে বলছি না।
তবে ভিজে ঘাস মেখে দিব্যি আছি
শুধু এই মরশুমি মন খারাপগুলোর বয়স বেড়ে যাচ্ছে...
সন্ধে হওয়ার মতো---
আচমকা
এই সময়ে নভেম্বর ০৫, ২০১৫ কোন মন্তব্য নেই:
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!X-এ শেয়ার করুনFacebook-এ শেয়ার করুনPinterest এ শেয়ার করুন
লেবেলসমূহ: কবিতা
নবীনতর পোস্টসমূহ পুরাতন পোস্টসমূহ হোম
এতে সদস্যতা: পোস্টগুলি (Atom)

সম্পাদিকার ডেস্ক থেকে

উৎসবের আলোড়ন কিছুটা স্তিমিত , তবুও মনের অলিন্দে হৈমন্তী স্বপ্ন । বারো মাসের তেরো পার্বণ প্রায় শেষ মুখে , উৎসব তিথি এখন অন্তিম লগ্ন যাপনে ব...

  • Returning Home Late at Night ~ Swastik Roy
    I was drenched as the street, and The yellow light kept shining – Upon both of us. It’s raining only under the lights. Beyond This rain ...
  • প্রতিদিনের ভালবাসার কবিতা (৬) ~পিয়ালী বসু
  • চুনি কোটাল: প্রথম মহিলা লোধা গ্র্যাজুয়েট - সুধাংশু চক্রবর্ত্তী
    স্নেহের সুতপা ,  তোমাকে জানাই আমার প্রিয় নারীটির কথা । সে হলো ভারতের প্রথম মেয়ে লোধা গ্র্যাজুয়েট ‘চুনি কোটাল’ । কেন উচ্চশিক্ষিত হতে চেয়েছে...

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

পৃষ্ঠাসমূহ

  • কবিতা
  • অনুগল্প
  • অনুকবিতা
  • ইংরেজি কবিতা
  • ব্যতিক্রমী কবিতা
  • ফিচার
  • সম্পাদকীয়

আমার সম্পর্কে

Unknown
আমার সম্পূর্ণ প্রোফাইল দেখুন

ব্লগ সংরক্ষাণাগার

  • নভেম্বর 2017 (23)
  • সেপ্টেম্বর 2017 (31)
  • জুলাই 2017 (30)
  • এপ্রিল 2017 (21)
  • মার্চ 2017 (25)
  • ফেব্রুয়ারী 2017 (31)
  • জানুয়ারী 2017 (26)
  • ডিসেম্বর 2016 (31)
  • নভেম্বর 2016 (23)
  • অক্টোবর 2016 (23)
  • সেপ্টেম্বর 2016 (38)
  • আগস্ট 2016 (41)
  • জুলাই 2016 (41)
  • জুন 2016 (41)
  • মে 2016 (41)
  • এপ্রিল 2016 (46)
  • মার্চ 2016 (21)
  • ফেব্রুয়ারী 2016 (26)
  • জানুয়ারী 2016 (41)
  • ডিসেম্বর 2015 (36)
  • নভেম্বর 2015 (31)
  • অক্টোবর 2015 (20)
  • সেপ্টেম্বর 2015 (55)
  • আগস্ট 2015 (30)
  • জুলাই 2015 (77)
  • মার্চ 2015 (1)

লেবেল

  • অনুকবিতা
  • অনুগল্প
  • ইংরেজি কবিতা
  • কবিতা
  • চিঠি
  • চিত্রপট
  • ছড়া
  • পরমাণু গল্প
  • ফিচার
  • ব্যতিক্রমী কবিতা
  • সম্পাদকীয়
  • স্মৃতিকথন

আপত্তিজনক অভিযোগ করুন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

সরল থিম. Blogger দ্বারা পরিচালিত.