" ক্ষত যত ক্ষতি যত মিছে হতে মিছে,
নিমেষের কুশাঙ্কুর পড়ে রবে নীচে
কী হল না, কী পেলে না, কে তব শোধে নি দেনা
সে সকলই মরীচিকা মিলাইবে পিছে
সত্যের আনন্দরূপ ... এই তো জাগিছে "
১৩৩৩ সালের ৯ই অগ্রহায়ণে রচিত পূজা ' পর্বের অন্তর্গত এই গানটি কি আশ্চর্য ভাবে প্রাসঙ্গিক আজকের দিনে । কবির কোন আত্মরক্ষা নেই , একথাটা আরও নিদারুণ ভাবে প্রকট সাম্প্রতিক কালে ঘটা নিন্দনীয় দুটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ।
কবিতা ব্যক্তি মানুষের একান্ত ব্যক্তিগত অনুভব থেকে সৃষ্ট হলেও পরবর্তীতে তা সর্বজনীন হয়ে ওঠে পাঠক মননের ভাবনা অলিন্দ বেয়ে ... কবি আদতে অভিমন্যু , ... তাঁর এক এবং একমাত্র লক্ষ শব্দের মধ্যস্থতায় সমকালীনতাকে তুলে ধরা ।
মন্দাক্রান্তা বা শ্রীজাত ... যিনিই হন না কেন , তাঁদের একমাত্র পরিচয় , তাঁরা কবি , এবং তাঁরা মৃত্যুঞ্জয় ।
বছর ঘোরে ... চৈত্রের অবসান হয় , আবাহন ঘটে বৈশাখের । চলতে থাকে ঋতুর ঘূর্ণিচক্র । অনন্ত সময় চরাচরে , আস্তে আস্তে আবছা হতে থাকে বসন্তের দীর্ঘতর ছায়াশরীরটি ।
কিন্তু , ... যাবো বললেই কি যাওয়া যায় ? অনন্ত চরাচর জুড়ে ধ্বনিত হতে থাকে ... " যেতে নাহি দিব ... " ।
তবুও যেতে দিতেই হয় , ... পুরনো কে আঁকড়ে ধরে বাঁচা যায়না , যায়না এগিয়ে চলাও , ... রিক্ততার আভরণ ঘুচিয়ে মহান রাজসিক বৈশাখ কে স্বাগত জানাতেই হয় ।
পা রাখতে হয় ১৪২৪ এর স্বপ্ন সরণিতে ।
নতুন বছরের এই শুভ লগ্নে প্রার্থনা হোক এটুকুই ... অধর্ম আর হীনতার মুখোশ ছেড়ে আমরা যেন সত্যিই মানুষ ' হয়ে উঠি ... মানব ধর্মের সাথে মেলাতে হবে যুগধর্ম'কেও ... একমাত্র সেই আলোকিত প্রত্যাশাটুকুই থাকুক ...
" মানুষ বড় কাঁদছে ,তুমি মানুষ হয়ে পাশে দাঁড়াও
মানুষই ফাঁদ পাতছে ,তুমি পাখির মত পাশে দাঁড়াও
মানুষ বড় একলা ,তুমি তাহার পাশে এসে দাঁড়াও ... "
কোমল আলোকে আলোকিত হোক চারপাশের ঘনঘোর আঁধার , .আলোয় থাকুন সকলে ... ভালোয় থাকুন ।
শুভেচ্ছান্তে ,
পিয়ালী বসু