শুক্রবার, ১ এপ্রিল, ২০১৬

যাওয়ার আগে ~সুপ্রতীম সিংহ রায়

গালিচা ভরা একরাশ নীলগোলাপ আমার অপেক্ষায়
আমি জোহান্সবার্গে তাদের একমাত্র সঙ্গী হতে চলেছি

তোমার ভিতর নেহাৎ একটা সবুজ ঘাসলন খুঁজেছিলাম
জ্যোৎস্নারাতে সেখানে গড়াগড়ি খেতে চেয়েছিলাম কিছুদিন

ঘাসলন বুক জুড়ে দেখি অসংখ্য আগুনপাখির আনাগোনা
পূর্ব অভিজ্ঞতার অভাবে আমার সেসব ধারণা ছিল বিন্দুমাত্র

কোনও এক ঝরাপাতা-কামিনী দিনে তোমায় প্রথম চুম্বন করেছিলাম
তুমি লজ্জায় কুঁকড়ে আবুলিশ হয়ে গিয়েছিলে কিছুক্ষণ

আমার ছন্নছাড়া আকাশ বদলে আমি নারীতে মুখ গুঁজি দুঃসাহসে
আকাশে জলভরা মেঘ-বাদলের হিসাব তবুও রাখা হয়নি আমার

মন্দির ভিড়ে একটা লাল টিপ এঁকে দিয়েছিলাম কপালে
তার বেশি সাজানোর কোনও স্পর্ধা বোধহয় ছিলনা

মাঝরাতে নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে তুমি কেঁদেছিলে ফোনের ওপারে
তোমার কান্নার সাথে মিশে গিয়েছিলো ব্রুসেলসের হাহাকার

যে সমস্ত সিগারেট আজও অবিন্যস্ত ধিকিধিকি পোড়ে
তোমার বোঝা উচিত ছিল তারা জন্মগত বোহেমিয়ান হয়

রেলেকাটা মাথা দেখে তেত্রিশকোটি ঈশ্বরের কাছে প্রশ্ন রেখেছিলাম
তুমি তখন চিন্ময়ী..বোধহয় প্র্যাকটিকালে ছুরি-কাঁচি নিয়ে ব্যস্ত

ঈশ্বর কী বা কেন, প্রশ্ন করার স্পর্ধা পাইনি কোনওদিন
শুধু বঙ্কিমস্ট্রিটে তাকে ভিড় বাসে উঠ যেতে দেখি প্রায়

ভোরের প্রথম শিশির মুক্তো জমিয়ে যেত তোমার উপর ঠোঁটে
আমি নীরব সন্ধ্যায় তাতে শীৎকার তান তুলেছিলাম বারবার

মেঘলা দুচোখের ফাঁকে বোধহয় শেষ স্পর্শ করছিলাম অকস্মাত
বিরহের তীব্র ক্ষণে, কোনও সুক্ষ অনুভূতি ধরা পড়ে কী?

বলেছিলাম বিদায় নেব, তবুও রক্তাক্ত করে যাব না বিন্দুমাত্র
আজ মসলিন লন জুড়ে ছড়িয়ে আছে রক্ত-মাংস-ডানা

গত বিশরাত্রিদিন ঘুমাতে পারিনি আমি ইচ্ছামতন
ক্লিওপেট্রা তার শেষ চিঠি লিখে চলেছে আমায় রক্ত আঁচড়ে

কথা ছিল ঘুমিয়ে পড়, কাল ভোরে তোমার মুখ দেখব
এখন বিছানা-বালিশ জুড়ে কেবল একাকীত্বের ভোঁ-ভোঁ

আমি সবকিছু ভুলে নেবুকাডনেজারের সঙ্গী হতে চলেছি
আমার সামনে তবু আজও "স্মৃতি" নামক ঝুলন্ত উদ্যান 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সম্পাদিকার ডেস্ক থেকে

উৎসবের আলোড়ন কিছুটা স্তিমিত , তবুও মনের অলিন্দে হৈমন্তী স্বপ্ন । বারো মাসের তেরো পার্বণ প্রায় শেষ মুখে , উৎসব তিথি এখন অন্তিম লগ্ন যাপনে ব...