[১]
লক্ষ্মণ রেখার ভিতর থেকে উঁকি দিয়ে আকাশ দেখেছি শুধু। খাঁচায় পোষা টিয়াপাখিটা কখনও আকৃষ্ট করেনি আমায়। সবার চোখের আড়ালে উড়িয়ে দিয়েছি ওকে। সে ফিরে চায়নি একবারও।
জানলার শিকে মাথা রেখে অশ্বত্থ গাছটার সাথে রোজ কথা বলেছি আপন মনে আর জল না পেয়ে শুকাতে দেখেছি আমার টবে বট, পাকুড়ের বনসাই।
(২)
বিশ তলা ফ্ল্যাটের কাজ শেষ হলে কেরিয়ার আর অর্থ দুটোই হাতের মুঠোয়। সাদা জল বড়ো স্বাদহীন লাগে আজকাল। তৃষ্ণা মেটেনা। রঙিন দামি বোতল, প্রতিদিন ঝ'রে পড়া ঘাম, রক্ত জিভের স্বাদকোরকগুলোকেই অন্য রকম করে ফেলেছে।
জানিস! আজকাল উঁচু ফ্ল্যাটের ছাদে দাঁড়ালেই ঝাঁপ মারতে ইচ্ছে করে। খুব ইচ্ছে হয় 'আরণ্যক' এর যুগলপ্রসাদ হয়ে যাই!
যে নির্মাণ আমায় শূন্য, একা করে দেয়, আনন্দ কেড়ে নেয়, আত্মঘাতী হবার পথে টেনে নিয়ে যায় তাতে জীবন খুঁজে পাওয়া বড়ো দায়।
[৩]
অনেক দিনের চেষ্টায় দরজাটা খুলে ফেলেছি কিন্তু তোর মতো আমার সাজানো ফ্ল্যাট, ধনদৌলত কিচ্ছু নেই।
আমি আকাশের নীচে দুহাত ছড়িয়ে বৃষ্টি ভিজি। যন্ত্রণাগুলো ঠাণ্ডা হয়। আমি রোজ খেতে পাই না জানিস! শোবারও জায়গা নেই!
লোকে আমায় কীসব বলে! আমি সব টব দুমদাম আছড়ে ভেঙে ফেলি যে! চারাগাছগুলো লাগিয়ে দিই এখান ওখান।
হুম... তুইও যুগলপ্রসাদ হয়ে যাস।
কৃষ্ণচূড়া লাগিয়েছি। অনেকদিন পর যদি কোনো বৃষ্টিবেলায় হেঁটে যাস, দেখিস ফুল ঝ'রে পড়বে তোর মাথায়।
* * *
আমি তখন থাকব না!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন