শ্রীচরণেষু বাবা,
এই প্রথম তোমাকে চিঠি লিখছি, জানিনা মেয়ের লেখা বলে এ চিঠি তুমি আদৌ পড়বে কিনা। জানি, অবাক হচ্ছো, ভাবছো কেনই বা আমি তোমাকে চিঠি লিখলাম। আসলে,
চলে যাবার আগে তোমাকে মনের কষ্টটা বলে যেতে বড় সাধ হল ।
বাবা, জানি আমার জন্ম তোমার বা ঠাকুমার কাছে এতটুকু আনন্দের ছিলনা।
আমার জন্মের সময় কেউ একটাও শাঁখ বাজায়নি, শুনেছি তুমি বা ঠাকুমা বহুদিন আমার মুখও দেখতে চাওনি। তোমরা ছেলে চেয়েছিলে, তোমাদের বংশধর চেয়েছিলে, তাই ভাই যখন জন্মাল তোমাদের আনন্দ দেখে মনে হত মায়ের কোলে যেন কোনো মহাপুরুষ 'অবতীর্ণ' হয়েছে!
ভাই নাকি তোমাদের সমস্ত 'অপকর্ষ ' থেকে উদ্ধার করবে!
বাবা, ঠাকুমা না হয় সেকেলে মানুষ কিন্তু তুমি তো এইযুগ সম্পর্কে 'অজ্ঞ' নও, তুমি তো জানো, এ'যুগে মেয়েরা পারেনা এমন কোন কাজ নেই, তবুও কন্যাসন্তানের প্রতি এত অবহেলা কেন?
আমি দেখতাম, ভাই কিছু চাওয়ার আগেই সেই জিনিসটা পেয়ে যেত, আর আমার দৈনন্দিন জীবনের অত্যাবশ্যক জিনিসগুলোও তোমার কাছে 'অনাবশ্যিক' বলে মনে হত--
ভাইয়ের শত অপরাধেও তোমরা ওকে শাসন করা থেকে 'বিরত' থেকেছো।
আমি অবাক হয়ে দেখতাম, কোন কিছুর প্রতি আমার 'অনুরাগ' জন্মালেই তুমি প্রাণপণ চেষ্টা করতে সেটা থেকে আমাকে দূরে সরিয়ে দিতে ----
আমি আর পারছিনা বাবা, দিনের পর দিন তোমাদের কাছ থেকে এত অবহেলা পেতে পেতে মনের অবচেতনে নিজের প্রতিই একটা ঘৃণা জন্মেছে, তাই 'ঐহিক' সমস্ত যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে আমি অত্যন্ত 'সচেতন'ভাবে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলাম, সেই সঙ্গে তোমাদেরও মুক্তি দিয়ে গেলাম।
বাবা, আমি কিন্তু তোমাদের সবাইকে খুব ভালবাসি, তোমরা যদি আমাকে একটু কাছে টেনে নিতে---
আমার প্রণাম নিও ।
ইতি তোমার হতভাগী কন্যা
হিমানী।
পাইকপাড়া, কোলকাতা
এই প্রথম তোমাকে চিঠি লিখছি, জানিনা মেয়ের লেখা বলে এ চিঠি তুমি আদৌ পড়বে কিনা। জানি, অবাক হচ্ছো, ভাবছো কেনই বা আমি তোমাকে চিঠি লিখলাম। আসলে,
চলে যাবার আগে তোমাকে মনের কষ্টটা বলে যেতে বড় সাধ হল ।
বাবা, জানি আমার জন্ম তোমার বা ঠাকুমার কাছে এতটুকু আনন্দের ছিলনা।
আমার জন্মের সময় কেউ একটাও শাঁখ বাজায়নি, শুনেছি তুমি বা ঠাকুমা বহুদিন আমার মুখও দেখতে চাওনি। তোমরা ছেলে চেয়েছিলে, তোমাদের বংশধর চেয়েছিলে, তাই ভাই যখন জন্মাল তোমাদের আনন্দ দেখে মনে হত মায়ের কোলে যেন কোনো মহাপুরুষ 'অবতীর্ণ' হয়েছে!
ভাই নাকি তোমাদের সমস্ত 'অপকর্ষ ' থেকে উদ্ধার করবে!
বাবা, ঠাকুমা না হয় সেকেলে মানুষ কিন্তু তুমি তো এইযুগ সম্পর্কে 'অজ্ঞ' নও, তুমি তো জানো, এ'যুগে মেয়েরা পারেনা এমন কোন কাজ নেই, তবুও কন্যাসন্তানের প্রতি এত অবহেলা কেন?
আমি দেখতাম, ভাই কিছু চাওয়ার আগেই সেই জিনিসটা পেয়ে যেত, আর আমার দৈনন্দিন জীবনের অত্যাবশ্যক জিনিসগুলোও তোমার কাছে 'অনাবশ্যিক' বলে মনে হত--
ভাইয়ের শত অপরাধেও তোমরা ওকে শাসন করা থেকে 'বিরত' থেকেছো।
আমি অবাক হয়ে দেখতাম, কোন কিছুর প্রতি আমার 'অনুরাগ' জন্মালেই তুমি প্রাণপণ চেষ্টা করতে সেটা থেকে আমাকে দূরে সরিয়ে দিতে ----
আমি আর পারছিনা বাবা, দিনের পর দিন তোমাদের কাছ থেকে এত অবহেলা পেতে পেতে মনের অবচেতনে নিজের প্রতিই একটা ঘৃণা জন্মেছে, তাই 'ঐহিক' সমস্ত যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে আমি অত্যন্ত 'সচেতন'ভাবে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলাম, সেই সঙ্গে তোমাদেরও মুক্তি দিয়ে গেলাম।
বাবা, আমি কিন্তু তোমাদের সবাইকে খুব ভালবাসি, তোমরা যদি আমাকে একটু কাছে টেনে নিতে---
আমার প্রণাম নিও ।
ইতি তোমার হতভাগী কন্যা
হিমানী।
পাইকপাড়া, কোলকাতা
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন