বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০১৭

জিৎ ----- চন্দ্রিমা গুপ্ত

মেডিকেল কলেজ থেকে বেড়িয়ে বাসস্টপে দাঁড়ালো পরী, খুব সাবধানে দেখে নিল চারপাশটা...... "না খুব একটা লোকজন নেই এখন", এককোণে দাঁড়ালো অপেক্ষালয়ের দেওয়ালের গা ঘেঁসে ফাঁকা বাসের অপেক্ষায়:
আর পাঁচটা মেয়ের জীবনধারা থেকে একেবারে আলাদা পরীর জীবন পথ: দেখতে বেশ সুন্দর পরী,সবাই বলে ওর দুচোখের চাহুনিতে অদ্ভুৎ চোখ-কাড়া লাবন্য, কিন্তু গরীবঘরে জন্ম পরীর: একটু স্বস্তিতে বাঁচার চাহিদা পূরণে কতটা কষ্টের মধ্যে দিয়ে হাঁটতে হয় পরী জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই তা খুব ভালোভাবে উপলব্ধি করে চলেছে, কাজেই রূপ নিয়ে পরীর ভাববার সময় আর হয়ে ওঠেনি:
বয়ো:সন্ধিক্ষনে আর এক কঠিন সত্যের মুখোমুখি হওয়া, আরো এক নিষ্ঠুর বাস্তবকে দেখা, দিদির বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ির অত্যাচারে অবশেষে বাপের বাড়ি ফিরে আসা দিদির সারা শরীরে ক্ষত নিয়ে: কারণ শ্বশুরবাড়ির চাহিদা পূরণে বাবার অক্ষমতা!
অবিশ্রান্ত লড়াই করেই বাঁচতে হয় এ সমাজের বেশ কিছু মানুষকে পরীদের মতোই: দারিদ্রকে উপেক্ষা কোরে নিজের চেষ্টায় নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে সুখের বাতাস বইয়ে দেবে ভালোবাসা দিয়ে গড়া এই ছোট্ট পরিবারটাতে, এই লক্ষ্যই যেন আলো দেখিয়ে এগিয়ে নিয়ে চলেছে পরীকে:
আকস্মিক ঘটনা পরীর স্বপ্নকে ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছিল প্রায় কিন্তু সংগ্রামী মেয়ের মনোবলকে ছুঁতে পারেনি: পরী আজও লড়াই করে চলেছে, থামার প্রশ্ন নেই: পাড়ার কিছু উঠ্তি মাস্তান পরীকে না পাওয়ার ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিল অ্যাসিড ছুঁড়ে পরীর সুন্দর মুখটা জ্বালিয়ে দিয়ে: বিকৃত মুখটা পরী আয়নায় কখনও দেখনি: আত্মীয়-স্বজন, পথ-চলতি মানুষের ঘৃণা বা আতঙ্কের দৃষ্টি ওকে জানিয়ে দিয়েছে রুপসী পরী কুৎসিৎ, ভীষণ কুৎসিৎ: তবে পরী বদলায়নি: সেই জেদি, পরিশ্রমী, মেধাবী মেয়েটি থেমে যায়নি:
হয়ত বা আরো কেউ কেউ আছে পরীর মতো! তারা ঠিক খুঁজে নেবে পরীকে অথবা পরী ওদের সাথী করে নেবে: সমাজ অবক্ষয়ের স্রোতে ভেসে হারিয়ে যাবে না ওরা, কঠিন এই লড়াই এ জিতে জয়ের হাসি হাসবে ........

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সম্পাদিকার ডেস্ক থেকে

উৎসবের আলোড়ন কিছুটা স্তিমিত , তবুও মনের অলিন্দে হৈমন্তী স্বপ্ন । বারো মাসের তেরো পার্বণ প্রায় শেষ মুখে , উৎসব তিথি এখন অন্তিম লগ্ন যাপনে ব...