অনিন্দিতা ঘুমের ঘোরে পাশ ফিরতেই দেখে, টাকুম নেই ।
পাশের ঘরে গিয়ে দেখে,বাবার ছবিটা হাতে নিয়ে মেয়ে কেঁদে চলেছে।
তবে কি আজকেও স্কুলের বন্ধুরা ওকে অপমান করেছে?
মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বললো, 'অনেক রাত হয়েছে মা, শুবি চল। সকালে স্কুল যেতে হবে তো--'
বাধ্য মেয়ের মতো টাকুম ছবিটা রেখে উঠে এলো। মাত্র কয়েকমাসে মেয়েটা যেন কয়েকবছর বড় হয়ে গেছে ।
নীলাঞ্জন চলে গেছে আটমাস হল। তাদের তেরো বছরের বিবাহিত জীবনে শেষের দুটো বছর বোধহয় সবচেয়ে কষ্টের সময় ছিল ।এর জন্য দায়ী ঐ বিরুপাক্ষ চক্রবর্তী।
ওরা পরস্পরকে ভালবেসেছিল । একই কলেজে পড়তো যাতায়াত-ও ছিলএকই বাসে। চোখাচোখি হলেও কথা হয়নি কোনোদিন ।
একদিন কলেজ যাবার সময় বাসভাড়া দিতে গিয়ে দেখে তাড়াহুড়োতে পার্সটাই আনা হয়নি। নীলাঞ্জন ব্যাপারটা লক্ষ্য করে এগিয়ে এসেছিল। একই কলেজে পড়ে বলেই বোধহয় অনিন্দিতা ওর কাছ থেকে এই সাহায্যটুকু নিয়েছিল, একটাই শর্তে, টাকাটা ফেরত নিতে হবে।
আস্তে আস্তে তারা কাছে এসেছে, বুঝেছিল তারা একে অপরকে ছেড়ে থাকতে পারবেনা।
কিন্তু অনিন্দিতার বাবা-মা এই সম্পর্ক মানতে পারেননি। ওঁদের পছন্দের ছেলের সাথে ওর বিয়ে দিতে চান।
অনিন্দিতা তখন পালিয়ে গিয়ে নীলাঞ্জনকে বিয়ে করে।
একটা মন্দিরে গিয়ে তারা মালাবদল করে, আঙটি বদল- ও হয় । নীলাঞ্জন বলতো, 'অঙ্গুরীয়!' মনে মনে হাসলো অনিন্দিতা।
সেদিন রাতে নীলাঞ্জন তাকে কাছে টেনে প্রথম যখন তার অধরোষ্ঠে চুম্বন করেছিল, ও কেঁপে উঠেছিল। তার ভালবাসার মানুষের কাছে সে আত্মসমর্পণ করেছিল । প্রচন্ড পরিশ্রমী নীলাঞ্জন তার সব স্বপ্ন পূর্ণ করেছিল ।
সাধারণ চাকরী ছেড়ে ,একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিল । কি প্রচন্ড নাস্তিক ছিল নীলাঞ্জন, কিন্তু সেই নীলাঞ্জন এত বেশী আস্তিক হয়ে উঠলো যে তার জন্য ওদের ছেড়ে চলে যেতেও ওর একটুও কষ্ট হলনা! অবশ্যই এর জন্য দায়ী বিরুপাক্ষ চক্রবর্তী। উনি প্রতিদিন একটু একটু করে ওর ব্রেনওয়াশ করে গেছেন । এতটাই যে, অনিন্দিতা জানতেও পারেনি, ওদের বাড়ি, ব্যবসা সবকিছু ও ঐ আশ্রমের নামে লিখে দিয়েছিল ।
তখনও ও শিষ্য হয়নি, কিন্তু বিরুপাক্ষবাবু ওকে গুরুভাই বলতেন, বলতেন, 'আর কদিন পরেই তো তুমি গুরুদেবের কাছ থেকে দীক্ষা নেবে, তাহলে, আমরা তো গুরুভাই-ই হলাম নাকি!'
মুখে মধু ঝরতো যেন, আসল নজরটা তো ছিল নীলাঞ্জনের সম্পত্তির দিকে ।
ওনার আচরণ অনিন্দিতার চোখে কখনওই ক্ষমার্হ্য ছিলনা।
এই একটা মানুষের জন্য তার সোনার সংসারটা ছারখার হয়ে গেল। আট মাস আগে তার সব স্বপ্ন ভেঙে চৌচির হয়ে গেছে।
কাছেই কোনো বাড়ীতে ঢং ঢং করে ঘড়িতে ঘন্টা বাজলো, রাত তিনটে।
আজকাল রাতে আর ভাল করে ঘুমও হয়না।
টাকুমের গায়ে হাত দিতেই ও চমকে উঠলো। মেয়েটার গা টা জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে ।
থার্মোমিটার দিয়ে দেখলো, বেশ জ্বর। জলপটি দিতে হবে।
আশ্চর্য, টাকুম আজকাল ওর কোনো কষ্টের কথাই বলেনা।
নাহ্, মেয়েটার এই ক্ষয়ে যাওয়াটা ও মেনে নিতে পারছেনা।নীলাঞ্জনকে ফিরিয়ে আনার একটা শেষ চেষ্টা ওকে করতেই হবে।
ওকে আবার একটা যুদ্ধে নামতে হবে।
এইসময় জানালা দিয়ে একটা হালকা মিঠেল হাওয়া ওকে ছুঁয়ে গেল । যেন দূর থেকে নীলাঞ্জনের পরশ নিয়ে এলো!
ওর মনটা কেন জানিনা খুশী হয়ে উঠলো।
ও মনে মনে বললো, নীলাঞ্জন, টাকুমের জন্য তোমাকে ফিরতে হবে। এর জন্য যা করতে হয় আমি করবো
পাশের ঘরে গিয়ে দেখে,বাবার ছবিটা হাতে নিয়ে মেয়ে কেঁদে চলেছে।
তবে কি আজকেও স্কুলের বন্ধুরা ওকে অপমান করেছে?
মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বললো, 'অনেক রাত হয়েছে মা, শুবি চল। সকালে স্কুল যেতে হবে তো--'
বাধ্য মেয়ের মতো টাকুম ছবিটা রেখে উঠে এলো। মাত্র কয়েকমাসে মেয়েটা যেন কয়েকবছর বড় হয়ে গেছে ।
নীলাঞ্জন চলে গেছে আটমাস হল। তাদের তেরো বছরের বিবাহিত জীবনে শেষের দুটো বছর বোধহয় সবচেয়ে কষ্টের সময় ছিল ।এর জন্য দায়ী ঐ বিরুপাক্ষ চক্রবর্তী।
ওরা পরস্পরকে ভালবেসেছিল । একই কলেজে পড়তো যাতায়াত-ও ছিলএকই বাসে। চোখাচোখি হলেও কথা হয়নি কোনোদিন ।
একদিন কলেজ যাবার সময় বাসভাড়া দিতে গিয়ে দেখে তাড়াহুড়োতে পার্সটাই আনা হয়নি। নীলাঞ্জন ব্যাপারটা লক্ষ্য করে এগিয়ে এসেছিল। একই কলেজে পড়ে বলেই বোধহয় অনিন্দিতা ওর কাছ থেকে এই সাহায্যটুকু নিয়েছিল, একটাই শর্তে, টাকাটা ফেরত নিতে হবে।
আস্তে আস্তে তারা কাছে এসেছে, বুঝেছিল তারা একে অপরকে ছেড়ে থাকতে পারবেনা।
কিন্তু অনিন্দিতার বাবা-মা এই সম্পর্ক মানতে পারেননি। ওঁদের পছন্দের ছেলের সাথে ওর বিয়ে দিতে চান।
অনিন্দিতা তখন পালিয়ে গিয়ে নীলাঞ্জনকে বিয়ে করে।
একটা মন্দিরে গিয়ে তারা মালাবদল করে, আঙটি বদল- ও হয় । নীলাঞ্জন বলতো, 'অঙ্গুরীয়!' মনে মনে হাসলো অনিন্দিতা।
সেদিন রাতে নীলাঞ্জন তাকে কাছে টেনে প্রথম যখন তার অধরোষ্ঠে চুম্বন করেছিল, ও কেঁপে উঠেছিল। তার ভালবাসার মানুষের কাছে সে আত্মসমর্পণ করেছিল । প্রচন্ড পরিশ্রমী নীলাঞ্জন তার সব স্বপ্ন পূর্ণ করেছিল ।
সাধারণ চাকরী ছেড়ে ,একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিল । কি প্রচন্ড নাস্তিক ছিল নীলাঞ্জন, কিন্তু সেই নীলাঞ্জন এত বেশী আস্তিক হয়ে উঠলো যে তার জন্য ওদের ছেড়ে চলে যেতেও ওর একটুও কষ্ট হলনা! অবশ্যই এর জন্য দায়ী বিরুপাক্ষ চক্রবর্তী। উনি প্রতিদিন একটু একটু করে ওর ব্রেনওয়াশ করে গেছেন । এতটাই যে, অনিন্দিতা জানতেও পারেনি, ওদের বাড়ি, ব্যবসা সবকিছু ও ঐ আশ্রমের নামে লিখে দিয়েছিল ।
তখনও ও শিষ্য হয়নি, কিন্তু বিরুপাক্ষবাবু ওকে গুরুভাই বলতেন, বলতেন, 'আর কদিন পরেই তো তুমি গুরুদেবের কাছ থেকে দীক্ষা নেবে, তাহলে, আমরা তো গুরুভাই-ই হলাম নাকি!'
মুখে মধু ঝরতো যেন, আসল নজরটা তো ছিল নীলাঞ্জনের সম্পত্তির দিকে ।
ওনার আচরণ অনিন্দিতার চোখে কখনওই ক্ষমার্হ্য ছিলনা।
এই একটা মানুষের জন্য তার সোনার সংসারটা ছারখার হয়ে গেল। আট মাস আগে তার সব স্বপ্ন ভেঙে চৌচির হয়ে গেছে।
কাছেই কোনো বাড়ীতে ঢং ঢং করে ঘড়িতে ঘন্টা বাজলো, রাত তিনটে।
আজকাল রাতে আর ভাল করে ঘুমও হয়না।
টাকুমের গায়ে হাত দিতেই ও চমকে উঠলো। মেয়েটার গা টা জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে ।
থার্মোমিটার দিয়ে দেখলো, বেশ জ্বর। জলপটি দিতে হবে।
আশ্চর্য, টাকুম আজকাল ওর কোনো কষ্টের কথাই বলেনা।
নাহ্, মেয়েটার এই ক্ষয়ে যাওয়াটা ও মেনে নিতে পারছেনা।নীলাঞ্জনকে ফিরিয়ে আনার একটা শেষ চেষ্টা ওকে করতেই হবে।
ওকে আবার একটা যুদ্ধে নামতে হবে।
এইসময় জানালা দিয়ে একটা হালকা মিঠেল হাওয়া ওকে ছুঁয়ে গেল । যেন দূর থেকে নীলাঞ্জনের পরশ নিয়ে এলো!
ওর মনটা কেন জানিনা খুশী হয়ে উঠলো।
ও মনে মনে বললো, নীলাঞ্জন, টাকুমের জন্য তোমাকে ফিরতে হবে। এর জন্য যা করতে হয় আমি করবো
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন