মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

ডার্করুম ও কদমফুল - সকাল রায়

এক বর্ষায় রিনি সবুজ ছাতা মাথায় নিয়ে প্রেমের শত সংলাপ কণ্ঠে বেধে ভালোবাসার সমুদ্রকান্তায় আমায় করলো আহ্বান। কসমস মোড়ের দোকানপাট সবে ঝাঁপি তুলেছে। গোয়ালের গরু সুর্য গায়ে মাখবে বলে বেরুতে চাইছে।
রিনি এসে দাঁড়ালো মুখখানা ভ্যাবাচ্যাকা করে। এপাশ-ওপাশ চোখ মাঠ থেকে শেষে ঘাট পেরিয়ে চোখ স্থির করে বলি বলি করে শেষে বললো, নির্ঝর দা' আমি সিনেমাটিক মুড নিয়ে বলতে পারবো না যে- ভালোবাসি তোমাকে। তোমার হৃদয়ের রোদ-বর্ষায় ছাতা হয়ে পাশে থাকতে চাইছি। চাইছি তোমার ভালোবাসা পেতে।
আমি তো নির্বাক !!
হতচ্ছাড়া মুডে বললাম তোর মাথার স্ক্রু ঢিল হয়ে গেছে-রে। আমাকে দিয়ে প্রেম-ট্রেম কিছু হবেনা। তুই আর কোথাও চেষ্টা কর।
– আজকাল বড্ড বাজে বকছো নির্ঝরদা; আমি চাকুরী চাইতে আসিনি যে, এখানে চান্স হলোনা আর কোথাও চেষ্টা করার কথা বলতে পারো। আমার মনে হলো, তোমাকে ভালোবাসলে আমি কষ্ট পাবো না তাই এলাম।
আমি বললাম নিজের উপর বিশ্বাস থাকা ভালো, কিন্তু কারও আগ-পিছ না জেনে তার উপর বিশ্বাস রাখা ভালো না।
পরদিন পাঁচ-পাঁচটা কদম নিয়ে রিনি হাজির।ঝুমবৃষ্টি তখন পুরো আকাশময়। আমি ডার্করুম থেকে বেরুতে গেছি দেখি বাইরে থেকে দরজা বন্ধ। শব্দ করলাম অনেকক্ষণ, শোনা যায় না বৃষ্টির শব্দে। ক্ষণিক পরে রিভু এসে দরজা খুললো। বললাম দরজায় ছিটকিনি দিয়েছিলো কে? রিভু বললে বলতে পারছিনা, কেউ আসেনি তো।
আমি ড্রেসিং রুমের আয়নার সামনে দাঁড়াতেই দেখি পাঁচ-পাচঁটা কদম ফুল টিপয়ের উপর পড়ে আছে।
রিভু ফুল কে এনেছে? ও বলল রিনি আপু রেখে গেছে।
এতক্ষণে বুঝলাম কে দরজায় ছিটকিনি দিয়েছে।
রিনি বলে- প্রেমে বিরহ হলো, যন্ত্রণার কাটা; আর এ কাঁটা পায়ে না বিঁধলে প্রেমের স্বার্থকতা নেই। সারাজীবন আনন্দ বন্যায় হেসে গেলে, একবেলা কাঁদবার অবকাশ পেলে না সে জীবনের স্বার্থকতা নেই।
এপর্যন্ত বলে একটু দম নিল রিনি। তারপর বললো, সুন্দর মন কিনতে পাওয়া যায় না, নয়তো একটা কিনে রাখতাম। তারপর এক জোছনা রাতে তাকে জিজ্ঞেস করতাম, পৃথিবীর সেরা প্রেমিক জুুটিরা বিরহ ছাড়া প্রেম করতে পারলো না কেন?
রিনি হঠাৎ দাড়িয়ে উঠে বললো তোমার কি মনে হয় আমি সেরকম মেয়ে? আমি বললাম তা-নয়, আমি বললাম তোর তো অগাধ জ্ঞান আছে, রিনি তো তুই ইচ্ছে করলে ডজন খানেক প্রেম করতে পারিস।
রিনি দু’হাত এক করে কেঁদে উঠলো
তারপর কান্না কণ্ঠে বললো, আমাকে যে তোমার ভালো লাগে না সেটা বললেই পারো, এভাবে কষ্ট দাও কেন ?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সম্পাদিকার ডেস্ক থেকে

উৎসবের আলোড়ন কিছুটা স্তিমিত , তবুও মনের অলিন্দে হৈমন্তী স্বপ্ন । বারো মাসের তেরো পার্বণ প্রায় শেষ মুখে , উৎসব তিথি এখন অন্তিম লগ্ন যাপনে ব...