মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৬

রোহিণীর দুঃস্বপ্নের রাত -- সুধাংশু চক্রবর্ত্তী

গাছের পাতা নড়ছে না। পৃথিবী যেন বাতাসহীন হয়ে পড়েছে আজ রাতে। এই মুহূর্তে রোহিণীর কবুতরীর বুকের ভেতরও এতটুকু বাতাস যেন নেই। নরম ঘাসের নিচে চাপা পড়ে থাকা কাঁকরগুলো পিঠে বিঁধছে খচ্‌ খচ্‌ করে । মুখ বুজে সয়ে যেতে হচ্ছে কাঁকরের খোঁচা। মুখের সামনে সমানেই দুলে চলেছে জন্তুটার ঘার্মাক্ত মুখখানা। রোহিণীর গোটা শরীর কেঁপে যাচ্ছে সেই দুলুনিতে। ওর অসহায়তার সুযোগ নিয়ে ঘাসের নিচে চাপা পড়ে থাকা কাঁকরগুলো......
জন্তুটার ঘার্মাক্ত মুখখানা ওর মুখের সামনে থেকে সরে গেল একসময়। রোহিণীর শরীরের কম্পন স্তব্ধ হয়ে গেল। অমনি গাছের পাতারা নড়েচড়ে বসলো। রোহিণী শোয়া ছেড়ে ঠেস দিয়ে বসলো গাছের গুড়িতে। পিঠ, বুক, ঠোঁটে - শরীরের সর্বত্র যন্ত্রণায় ফেঁটে পড়ছে। শরীরের নিচটায় অসহনীয় যন্ত্রণা জট পাকিয়ে রয়েছে। এই জট খুলতে সময় নেবে। ততক্ষণে অবশ্য পূব আকাশে ছড়িয়ে পড়বে নবারুণের লাল আভা। রোহিণী একঝলক দেখলো ঘাসগুলোকে। দলিত মথিত ঘাসগুলোর মাথায় কে যেন গোলা লাল রঙ ছড়িয়ে দিয়েছে। চোখ সরিয়ে নিয়ে তাকালো আকাশের দিকে। পূবাকাশের আলোআঁধারি লজ্জায় রেঙে উঠছে ধীরে ধীরে।
কি করবে ভাবছে তখনই বহুদূর থেকে ভেসে যেন এলো মায়ের গলা, উঠে পড় রোহিণী। সকাল হয়েছে। ওরা এসে পড়ার আগে নিজেকে গুছিয়ে নে। নইলে তোকে এই অবস্থায় দেখলে লজ্জায় মাথা কাটা যে যাবে আমার।
রোহিণী তাড়াতাড়ি নেমে এল বিছানা থেকে। গতরাত্রে মোটেও গরম ছিলো না। অথচ রোহিণী কেমন ঘামে জ্যাবজ্যাবে হয়ে গিয়েছে! নিশ্চয়ই ভয় পেয়েছে খুব। মা জানেন না বিয়েতে ওর ভীষণ ভয়। সেই ভয়েই তো গতরাত্রে অমন বীভৎস স্বপ্নটা ওকে......... 

1 টি মন্তব্য:

সম্পাদিকার ডেস্ক থেকে

উৎসবের আলোড়ন কিছুটা স্তিমিত , তবুও মনের অলিন্দে হৈমন্তী স্বপ্ন । বারো মাসের তেরো পার্বণ প্রায় শেষ মুখে , উৎসব তিথি এখন অন্তিম লগ্ন যাপনে ব...