আহা আড্ডা ! শব্দটা উচ্চারণের সাথে সাথেই এতো টুকরো টুকরো ছবি চোখের সামনে ভেসে ওঠে বলার নয়.. উত্তর কলকাতার সিমলা পাড়ায় ছোট থেকে বড় হওয়া..
সকালে স্বামীদের অফিসে পাঠিয়ে 'দুগ্গা দুগ্গা' বলে সদর দরজায় দাঁড়িয়ে বাড়ির গিন্নীদের আড্ডা, তারপর রোদে পিঠ ঠেকিয়ে হাতে উলের গোলা আর কাঁটার সোজা-উল্টো বুননের সঙ্গে সঙ্গে এ ছাদ থেকে ও ছাদে আড্ডা, কখনো বা আচারের শিশি রোদে পাহারা দিতে দিতে টক-ঝাল-মিষ্টি আড্ডা, কখনো সন্ধ্যে প্রদীপ দেখিয়ে স্বামীদের চা জলখাবার দিয়ে আর ছেলে-মেয়েকে গৃহশিক্ষকের জিম্মায় দিয়ে পাশের বাড়িতে দূরদর্শনে চিত্রহার দেখতে দেখতে চা এর কাপ বা পানের বাটা কোলে নিয়ে রসালো আড্ডা, কখনো পাড়ার ঠাকুর দালানে দাদু বা বাবাদের তাসের আড্ডা, কখনো পাড়ার ক্লাবঘরে নতুন সাহিত্য বা রাজনীতির ঘোর-প্যাঁচ নিয়ে তর্ক-আড্ডা, কখনো বা পাড়ার রকে বসে দাদাদের আড্ডা আর পাশের ক্যাসেটের দোকানে জোরে বেজে যাওয়া " আই অ্যাম এ ডিস্কো ড্যান্সার "..
#পাড়ার মোড়েই রাম কাকুর তেলেভাজার দোকান- লোকটা দুই মেয়ে ও তিন ছেলেকে ওই দোকানের রোজগারেই খাইয়ে পড়িয়ে বাড়িয়ে তুললেন - তার পেছনে কারণও ওই আড্ডা - এই শীতের দিনে গরম গরম ফুলকপির সিঙ্গারা, সাথে মাটির ভাঁড়ের গরম ধোঁয়া ওঠা চা, বা নেহাত্ই ছোলা বাদামের সাথে এক বাটি মুড়ি মাখা আর সবার হাত তাতে-সঙ্গে গরম গরম বেগুনি বা পেয়াঁজি - সন্ধ্যের ওই তেলতেলে আড্ডা যে কত মানুষের মনের দুয়ারে কত বন্ধুত্বের প্রদীপ জ্বালিয়েছে তা গুনে শেষ করা যায় না..
#হঠাৎ লোড-শেডিং, পাড়াময় ঘুটঘুটে অন্ধকার - দরজার বাইরে একখানা হ্যারিকেন আর ঘরময় একান্নবর্তী পরিবারের বারোজন সদস্য..বাবা-মা, জ্যাঠা-জ্যেঠিমা, কাকা-কাকিমা, ভাই -বোন আর কাকার সদ্য দেখা ভূতুড়ে ইংরেজি সিনেমার দৃশ্যবয়ান - টানটান উত্তেজনা - আর কে আগে অন্ধকার বারান্দা পেরিয়ে বাথরুম অবধি যেতে পারবে তা নিয়ে অপেক্ষা....পরিবার বেঁধে রাখার টানটান আড্ডা -
#বা ওবাড়ির মলিদির হঠাৎ আমাদের বাড়িতে দাদার থেকে নোটস্ নিতে আসা, তারপর খাতার ভাঁজ থেকে একটা ছোট্ট চিরকুট পালকের মত নিমেষে মলিদির খাতার ভাঁজে লুকিয়ে যাওয়া, চারচোখ চকচকে হয়ে ওঠা, এ ও আড্ডা -
#আর কফি-হাউস! আহা ! সে তো আড্ডার স্বর্গরাজ্য - কফির ধোঁয়ায়, সাহিত্যের তাবড় উত্তেজনায় আর কালচারের ঝাল -ঝোল-অম্বল, সব মিলিয়ে জমজমাট আড্ডা -
#তবে একটা কথা উল্লেখ্য যে আড্ডা শুধুই গল্প বা পরনিন্দা পরচর্চা নয় হে- ও বাড়ির বৌদি কতরকমের খোঁপা বাঁধতে জানে তার নমুনা দেখানোর জায়গাও ছিল এই আড্ডা, বা বড়ি ঠিক কি ভাবে দিলে মুচমুচে হয় অথচ মুখে মিলিয়ে যায় নরম হয়ে তার ফর্মুলাও মিলত এই আড্ডায়, বা ওই কাঁচা-মিঠে আমের আচারে ঠিক কতটা টক হলে কর্তা খুশি হয়ে ভারী মল জোড়া গড়িয়ে দেবে সে ও শেখা যেত এই আড্ডায় -
#ঠাকুমা গল্প করত ও পাড়ার মঞ্জু দিদা আর ঠাকুমা দুই সই ছিল আড্ডার প্রাণ, একান্নবর্তী পরিবারের রান্না সেরে, বিকেলের উনুন সাজিয়ে,বাড়ির সকলকে খাইয়ে- গৃহিণী পাট পাট শাড়িটি অঙ্গে জড়িয়ে গালে পান ঠুসে চলতেন উত্তম-সুচিত্রার নতুন সিনেমার ঘোরে গা ভাসাতে ম্যাটিনি শো এ--বাজারে উত্তম-সুচিত্রার সিনেমা বেরোলেই গরমাগরম গিলে ফেলতে হবেই এই সুগৃহিণী সখীবৃন্দকে..অথচ একটি মানুষও সংসারে অভুক্ত নেই, কোথাও কোন কাজে ত্রুটি নেই এতটুকু, স্বামীর ভেতর মনে মনে প্রাণ-সখা উত্তমকুমারকে খোঁজারও বিরাম নেই, এ ও আড্ডা -
#কদিন আগে আমার মাসির মেয়ে বলল,"দিদিভাই পিসি-দাদুর শ্রাদ্ধকাজে যাচ্ছ তো ? এই ফাঁকে সবার দেখা হবে -একটু আড্ডা দেওয়া যাবে তোমার সাথে, কতদিন ভালভাবে কথা হয় না বল তো !!"--এ ও আড্ডা, ব্যস্ততম যুগে একটু সুযোগ, সে হোক না বিয়েবাড়ি বা শ্রাদ্ধবাড়ি, দেখা তো হল, আর দেখা হওয়া মানেই সামনের বর্ম সরিয়ে শুধু নরম আড্ডা..
#একসময় গঙ্গাজল হাতে নিয়ে সই পাতাতো বাড়ির মেয়ে-বৌরা - বকুল সই, গোলাপ সই - আড্ডা? না সে তো শুধুই আড্ডা নয় - মনের যত সুখ - দুঃখের গোপন গয়না - জমা থাকত সই এর মনের সিন্দুকে -
#আজ ও আড্ডা বেঁচে আছে হোয়াটসঅ্যাপ এর গ্রুপে গ্রুপে - এই সেদিনই দেখলাম হঠাত্ আরও দুটি নতুন গ্রুপে অ্যাড হয়ে গেছি আমি- কখনো কলিগদের গ্রুপ, কখনো স্কুল কলেজের বন্ধুদের গ্রুপ, কখনো গানের বন্ধুদের গ্রুপ, কখনো ছেলের বন্ধুদের মাদের গ্রুপ - বিভিন্ন গ্রুপে আমি যাযাবর আর তাগিদ শুধুই আড্ডার -
#তবে আড্ডার রকমফের আছে বই কি !! কোথাও আড্ডা স্কুল জীবনের নস্টালজিয়া নিয়ে, কোথাও কলেজের দুষ্টু-মিষ্টি প্রেমের দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে মুচকি হাসির আড্ডা, কোথাও ম্যানেজমেন্টের মুন্ডু-পাত, কোথাও সুরের আদান-প্রদান, কোথাও আবার ছেলে-মেয়ের ভবিষ্যৎ..
#আমাদের মা'দের দেখতাম আমাদের স্কুলে ঢুকিয়ে মাঝে মাঝেই কোথাও কারোর বাড়িতে জমায়েত হতে..কারণ সেই আড্ডা - বা আমাদের স্কুল থেকে আনতে এসে গোল হয়ে দাঁড়িয়ে ক্লাশ-ওয়ার্ক, হোম-ওয়ার্ক মেলানোর অছিলায় জমাটি আড্ডার সুরে গা ভাসাতে -
#আজও আড্ডা চলে তবে লোড-শেডিং এর আঁধার কুয়াশা আর নেই, জ্বলে ওঠে ইনভার্টারের আলো -
#আজও গোপন প্রেম দানা বাঁধে তবে খাতার ভাঁজের চিরকুটে নয়, এস-এম-এস এর গোনা গুনতি শব্দের আওতায় -
#আজও বৌ-মেয়েরা সই পাতায়, তবে নিজের প্রাণ-ভোমরা বান্ধবীর মনের সিন্দুকে রাখার ছল করে মাত্র, রাখার ভরসা পায় না -
#আজও তেলেভাজার দোকানে সিঙ্গারা বেগুনি বিক্রী হয় - তবে পাশের মিও -আমোরে বা ক্যাথলিনের আলোয় তা ম্লান হয়ে যায় -
#আজও বাড়ির গিন্নীরা টেলিভিশন দেখে - তবে যে যার ঘরে, এমনকি একই বাড়িতে সব বেডরুমে আলাদা আলাদা ঘরে একক একক ভাবে, না হলে হট্টগোলে রসভঙ্গ হবে যে -
#আজও আমরা সিনেমা যাই - তবে অন-লাইনে টিকিট বুক করে, ঝাঁ চকচকে মলে - আর ঠান্ডা হল থেকে বেড়িয়েই নিজেদের যান্ত্রিকতার উত্তাপে নিমেষে ভুলে যাই রূপালী পর্দার শীতল মোহময়তা -
#আজও কফির কাপে ধোঁয়া তুলে ওঠে আড্ডার তুফান তবে সেটা কফি হাউস না কাপে-কফি-ডে তা তর্ক সাপেক্ষ -
#এতো তফাত, এতো পরিবর্তন, তবু আড্ডা আছে - আছে বাঙালী - আর আছে বাঙালীর আড্ডা-কালচার...তাই -
বল বল বল সবে
আড্ডা থাকুক বেঁচে
বাঙালী হয়ে এসেছ এ ভবে
বন্ধু হও যেচে যেচে..
#জিন্দাবাদ বাঙালী ও বাঙালীর আড্ডা কালচার...
সকালে স্বামীদের অফিসে পাঠিয়ে 'দুগ্গা দুগ্গা' বলে সদর দরজায় দাঁড়িয়ে বাড়ির গিন্নীদের আড্ডা, তারপর রোদে পিঠ ঠেকিয়ে হাতে উলের গোলা আর কাঁটার সোজা-উল্টো বুননের সঙ্গে সঙ্গে এ ছাদ থেকে ও ছাদে আড্ডা, কখনো বা আচারের শিশি রোদে পাহারা দিতে দিতে টক-ঝাল-মিষ্টি আড্ডা, কখনো সন্ধ্যে প্রদীপ দেখিয়ে স্বামীদের চা জলখাবার দিয়ে আর ছেলে-মেয়েকে গৃহশিক্ষকের জিম্মায় দিয়ে পাশের বাড়িতে দূরদর্শনে চিত্রহার দেখতে দেখতে চা এর কাপ বা পানের বাটা কোলে নিয়ে রসালো আড্ডা, কখনো পাড়ার ঠাকুর দালানে দাদু বা বাবাদের তাসের আড্ডা, কখনো পাড়ার ক্লাবঘরে নতুন সাহিত্য বা রাজনীতির ঘোর-প্যাঁচ নিয়ে তর্ক-আড্ডা, কখনো বা পাড়ার রকে বসে দাদাদের আড্ডা আর পাশের ক্যাসেটের দোকানে জোরে বেজে যাওয়া " আই অ্যাম এ ডিস্কো ড্যান্সার "..
#পাড়ার মোড়েই রাম কাকুর তেলেভাজার দোকান- লোকটা দুই মেয়ে ও তিন ছেলেকে ওই দোকানের রোজগারেই খাইয়ে পড়িয়ে বাড়িয়ে তুললেন - তার পেছনে কারণও ওই আড্ডা - এই শীতের দিনে গরম গরম ফুলকপির সিঙ্গারা, সাথে মাটির ভাঁড়ের গরম ধোঁয়া ওঠা চা, বা নেহাত্ই ছোলা বাদামের সাথে এক বাটি মুড়ি মাখা আর সবার হাত তাতে-সঙ্গে গরম গরম বেগুনি বা পেয়াঁজি - সন্ধ্যের ওই তেলতেলে আড্ডা যে কত মানুষের মনের দুয়ারে কত বন্ধুত্বের প্রদীপ জ্বালিয়েছে তা গুনে শেষ করা যায় না..
#হঠাৎ লোড-শেডিং, পাড়াময় ঘুটঘুটে অন্ধকার - দরজার বাইরে একখানা হ্যারিকেন আর ঘরময় একান্নবর্তী পরিবারের বারোজন সদস্য..বাবা-মা, জ্যাঠা-জ্যেঠিমা, কাকা-কাকিমা, ভাই -বোন আর কাকার সদ্য দেখা ভূতুড়ে ইংরেজি সিনেমার দৃশ্যবয়ান - টানটান উত্তেজনা - আর কে আগে অন্ধকার বারান্দা পেরিয়ে বাথরুম অবধি যেতে পারবে তা নিয়ে অপেক্ষা....পরিবার বেঁধে রাখার টানটান আড্ডা -
#বা ওবাড়ির মলিদির হঠাৎ আমাদের বাড়িতে দাদার থেকে নোটস্ নিতে আসা, তারপর খাতার ভাঁজ থেকে একটা ছোট্ট চিরকুট পালকের মত নিমেষে মলিদির খাতার ভাঁজে লুকিয়ে যাওয়া, চারচোখ চকচকে হয়ে ওঠা, এ ও আড্ডা -
#আর কফি-হাউস! আহা ! সে তো আড্ডার স্বর্গরাজ্য - কফির ধোঁয়ায়, সাহিত্যের তাবড় উত্তেজনায় আর কালচারের ঝাল -ঝোল-অম্বল, সব মিলিয়ে জমজমাট আড্ডা -
#তবে একটা কথা উল্লেখ্য যে আড্ডা শুধুই গল্প বা পরনিন্দা পরচর্চা নয় হে- ও বাড়ির বৌদি কতরকমের খোঁপা বাঁধতে জানে তার নমুনা দেখানোর জায়গাও ছিল এই আড্ডা, বা বড়ি ঠিক কি ভাবে দিলে মুচমুচে হয় অথচ মুখে মিলিয়ে যায় নরম হয়ে তার ফর্মুলাও মিলত এই আড্ডায়, বা ওই কাঁচা-মিঠে আমের আচারে ঠিক কতটা টক হলে কর্তা খুশি হয়ে ভারী মল জোড়া গড়িয়ে দেবে সে ও শেখা যেত এই আড্ডায় -
#ঠাকুমা গল্প করত ও পাড়ার মঞ্জু দিদা আর ঠাকুমা দুই সই ছিল আড্ডার প্রাণ, একান্নবর্তী পরিবারের রান্না সেরে, বিকেলের উনুন সাজিয়ে,বাড়ির সকলকে খাইয়ে- গৃহিণী পাট পাট শাড়িটি অঙ্গে জড়িয়ে গালে পান ঠুসে চলতেন উত্তম-সুচিত্রার নতুন সিনেমার ঘোরে গা ভাসাতে ম্যাটিনি শো এ--বাজারে উত্তম-সুচিত্রার সিনেমা বেরোলেই গরমাগরম গিলে ফেলতে হবেই এই সুগৃহিণী সখীবৃন্দকে..অথচ একটি মানুষও সংসারে অভুক্ত নেই, কোথাও কোন কাজে ত্রুটি নেই এতটুকু, স্বামীর ভেতর মনে মনে প্রাণ-সখা উত্তমকুমারকে খোঁজারও বিরাম নেই, এ ও আড্ডা -
#কদিন আগে আমার মাসির মেয়ে বলল,"দিদিভাই পিসি-দাদুর শ্রাদ্ধকাজে যাচ্ছ তো ? এই ফাঁকে সবার দেখা হবে -একটু আড্ডা দেওয়া যাবে তোমার সাথে, কতদিন ভালভাবে কথা হয় না বল তো !!"--এ ও আড্ডা, ব্যস্ততম যুগে একটু সুযোগ, সে হোক না বিয়েবাড়ি বা শ্রাদ্ধবাড়ি, দেখা তো হল, আর দেখা হওয়া মানেই সামনের বর্ম সরিয়ে শুধু নরম আড্ডা..
#একসময় গঙ্গাজল হাতে নিয়ে সই পাতাতো বাড়ির মেয়ে-বৌরা - বকুল সই, গোলাপ সই - আড্ডা? না সে তো শুধুই আড্ডা নয় - মনের যত সুখ - দুঃখের গোপন গয়না - জমা থাকত সই এর মনের সিন্দুকে -
#আজ ও আড্ডা বেঁচে আছে হোয়াটসঅ্যাপ এর গ্রুপে গ্রুপে - এই সেদিনই দেখলাম হঠাত্ আরও দুটি নতুন গ্রুপে অ্যাড হয়ে গেছি আমি- কখনো কলিগদের গ্রুপ, কখনো স্কুল কলেজের বন্ধুদের গ্রুপ, কখনো গানের বন্ধুদের গ্রুপ, কখনো ছেলের বন্ধুদের মাদের গ্রুপ - বিভিন্ন গ্রুপে আমি যাযাবর আর তাগিদ শুধুই আড্ডার -
#তবে আড্ডার রকমফের আছে বই কি !! কোথাও আড্ডা স্কুল জীবনের নস্টালজিয়া নিয়ে, কোথাও কলেজের দুষ্টু-মিষ্টি প্রেমের দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে মুচকি হাসির আড্ডা, কোথাও ম্যানেজমেন্টের মুন্ডু-পাত, কোথাও সুরের আদান-প্রদান, কোথাও আবার ছেলে-মেয়ের ভবিষ্যৎ..
#আমাদের মা'দের দেখতাম আমাদের স্কুলে ঢুকিয়ে মাঝে মাঝেই কোথাও কারোর বাড়িতে জমায়েত হতে..কারণ সেই আড্ডা - বা আমাদের স্কুল থেকে আনতে এসে গোল হয়ে দাঁড়িয়ে ক্লাশ-ওয়ার্ক, হোম-ওয়ার্ক মেলানোর অছিলায় জমাটি আড্ডার সুরে গা ভাসাতে -
#আজও আড্ডা চলে তবে লোড-শেডিং এর আঁধার কুয়াশা আর নেই, জ্বলে ওঠে ইনভার্টারের আলো -
#আজও গোপন প্রেম দানা বাঁধে তবে খাতার ভাঁজের চিরকুটে নয়, এস-এম-এস এর গোনা গুনতি শব্দের আওতায় -
#আজও বৌ-মেয়েরা সই পাতায়, তবে নিজের প্রাণ-ভোমরা বান্ধবীর মনের সিন্দুকে রাখার ছল করে মাত্র, রাখার ভরসা পায় না -
#আজও তেলেভাজার দোকানে সিঙ্গারা বেগুনি বিক্রী হয় - তবে পাশের মিও -আমোরে বা ক্যাথলিনের আলোয় তা ম্লান হয়ে যায় -
#আজও বাড়ির গিন্নীরা টেলিভিশন দেখে - তবে যে যার ঘরে, এমনকি একই বাড়িতে সব বেডরুমে আলাদা আলাদা ঘরে একক একক ভাবে, না হলে হট্টগোলে রসভঙ্গ হবে যে -
#আজও আমরা সিনেমা যাই - তবে অন-লাইনে টিকিট বুক করে, ঝাঁ চকচকে মলে - আর ঠান্ডা হল থেকে বেড়িয়েই নিজেদের যান্ত্রিকতার উত্তাপে নিমেষে ভুলে যাই রূপালী পর্দার শীতল মোহময়তা -
#আজও কফির কাপে ধোঁয়া তুলে ওঠে আড্ডার তুফান তবে সেটা কফি হাউস না কাপে-কফি-ডে তা তর্ক সাপেক্ষ -
#এতো তফাত, এতো পরিবর্তন, তবু আড্ডা আছে - আছে বাঙালী - আর আছে বাঙালীর আড্ডা-কালচার...তাই -
বল বল বল সবে
আড্ডা থাকুক বেঁচে
বাঙালী হয়ে এসেছ এ ভবে
বন্ধু হও যেচে যেচে..
#জিন্দাবাদ বাঙালী ও বাঙালীর আড্ডা কালচার...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন