এখন বড় হয়েছো। ভালোমন্দ বিচার করতে শেখো। কোথাও একলা যাবে না। যেখানেই যাবে কাউকে সাথে নিয়ে যাবে। বাবা দিনরাত শাসন করছেন মেয়েটিকে।
- এ্যাই মেয়ে, ওভাবে পা ছড়িয়ে বসতে নেই। ফ্রকটাকে টেনে নামিয়ে পা’দুটো ঢেকে বসো। অদৃশ্য জগত থেকে মায়ের শাসানি ভেসে এসে মেয়েটিকে চমকে দেয়।
সদ্য চোদ্দ বছরে পা রাখা মেয়েটি বেশ আনন্দেই খেলছিলো পাড়ার বন্ধুবান্ধবীর সাথে। খোলা বারান্দায় বসে। খেয়ালই করেনি মা তাকে লক্ষ্য করছেন রান্নাঘরের আড়ালে থেকে। অগত্যা দ্রুত গুটিয়ে নেয় নিজেকে।
মা কখনো বলছেন, অমন হুটোপুটি করিস কেন পাড়ার ছেলেগুলোর সাথে? হতে পারে তোর ছেলেবেলাকার বন্ধু, তাই বলে এখনো চালিয়ে যাবি? তুই কিন্তু আগের মত আর ছোটটি নেই । কখনো বলেন, এখন বড় হয়েছিস। অত ছটফটে হওয়া আর মানায় না তোকে ।
মেয়েটি মাঝেমাঝেই ভাবতে বসে, কেন? মা অমন করে বলে কেন? বাবাও রোজ একই কথা মন্ত্রের মতো বলেন যখনই কোনো বন্ধুর বাড়িতে যাবার বায়না ধরে বা কোথাও একলা যেতে চায়। কেন? কেন? কেন?
মাস কয়েকের মধ্যেই মেয়েটি জানতে পারলো কারণটা কি। জানার পর থেকে অজানাকে জানার আগ্রহে অস্থির হয়ে উঠলো। মেয়েটি সেইদিন থেকে আর ঘর ছেড়ে বেরোতে চায় না। সবচেয়ে প্রিয় বান্ধবীটিকে ডেকে এনে ঘরের দরজা বন্ধ করে প্রচুর সময় কাটায় বাবার কম্পিউটারে নেট খুলে বসে। কখনো তিন-চারজন সমবয়স্কা বান্ধবীও এসে জোটে তাদের সাথে। ফিসফাস-গুজগুজ লেগেই আছে সবসময়।
মেয়ে নিজের আব্রু রক্ষা করতে শিখেছে দেখে মা নিশ্চিন্ত হলেন। বাবাও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন মেয়ে আর একলা বাইরে যাবার আবদার করছে না দেখে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন