বুধবার, ৮ জুলাই, ২০১৫

টিফিন বাক্স ~ মৌমিতা ভট্টাচার্য


ছোট্ট তনিমা নতুন স্কুলে ভর্তি হয়েছে।মামুয়া একটা কি সুন্দর নীলরঙের টিফিন বাক্স কিনে দিয়েছে আর মা রোজ কতরকমের টিফিন বানিয়ে দেয় ।কোনোদিন জোকারের মুখ দেওয়া স্যান্ডউইচ কোনোদিন বা ফুলের মত।
টিফিনের ঘন্টা বাজলেই সে আগে দৌড়ে খেলতে চলে যায়।একটু খেলে এসে সে আরাম করে টিফিন খাবে।
আজও সে তাই করল।কিন্তু একী
!তার টিফিন বাক্স খালি কি করে হলো?আজ যে মা তার বড় প্রিয়
ডিম স্যান্ডউইচ দিয়েছিল! গেল কই! এত ক্ষিদে পেয়েছে!
সেদিনের পর থেকে দুএকদিন পরপর একই ঘটনা ঘটতে থাকে।
তনিমা বুঝতেই পারেনা কে তার খাবার খেয়ে নেয়।সে বড় ভালো মেয়ে ।কখনো কারোর নামে ম্যামের কাছে নালিশ করে না,তবে পাসে বসা নতুন মোটু ছেলেটার দিকে মাঝে মাঝে সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকায়।
সময় গড়িয়ে চলে তার আপন গতি তে।
তনিমা স্কুল কলেজ আর ইউনিভার্সিটির গন্ডি ছাড়িয়ে আজ বিয়ের পিড়িঁতে।
আজ তার ফুলশয্যা।
রজত ঘরে ঢুকলে আড় চোখে তাকে দেখে তনিমা।মা বাবার পছন্দ করা ছিপছিপে লম্বা ফর্সা রজতশুভ্র মিএকে তারও বেশ পছন্দ।
রজতের পুরো পরিবার বিদেশে থাকার দরুণ তাদের মধ্যে আলাপচারিতার বিশেষ সুযোগ
হয়নি।বলতে গেলে দুজনেই দুজনের কাছে অধরা ।তাই নিয়েই তনিমার বুকে তোলপাড় চলছে।কেমন হবে রজত স্বামী হিসেবে!এক চাপা অস্বস্তি চলে তার মনে।
পাশে এসে বসে রজত।
তনিমার হাতে হাত রাখতেই সমস্ত শরীরে লাগে রোমাঞ্চ।
বউয়ের আঙুলে হীরের আঙটি পরিয়ে দিয়ে সে বলে তনি আজ আমরা সারারাত গল্প করব আর একে অপরকে জানবো।
বাকীর জন্যে পড়ে থাকলো সারাজীবন।
সঙ্গে সঙ্গে তনিমার সমস্ত অস্বস্তি উধাও।
নানা একথা সেকথার পর এসে পড়ে ছোটবেলাকার কথা এবং স্কুলজীবনের কথাও।
খুব উৎসাহ নিয়ে তনিমা তার টিফিন বাক্সের গল্প বলতে বলতে আনমনা হয়ে পড়ে ।কথার মধ্যে পাশে বসা মোটু ছেলেটির প্রতি সন্দেহের কথাও বলতে ভোলে না সে ।আজও সে ওই রহস্যের কিনারা করতে পারেনি।
হঠাৎ হাসির শব্দে তার
চমক ফিরে আসে।
অবাক হয়ে দেখে রজত পেট চেপে হোহো করে হাসছে।
তনি তোমার টিফিন বাক্সর রঙ কি নীল ছিল?
আর স্কুলের নাম কি সাউথ পয়েন্ট?
তনিমা হতভম্ব।
দুজনে দেখা হলো
মধুযামিনী রে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সম্পাদিকার ডেস্ক থেকে

উৎসবের আলোড়ন কিছুটা স্তিমিত , তবুও মনের অলিন্দে হৈমন্তী স্বপ্ন । বারো মাসের তেরো পার্বণ প্রায় শেষ মুখে , উৎসব তিথি এখন অন্তিম লগ্ন যাপনে ব...