বুধবার, ১২ আগস্ট, ২০১৫

খোলা ডায়েরী( ১) ~ সুকান্ত চক্রবর্তী

রাস্তায় দুজনেই চলছি । সন্ধ্যে বেলা । অঘ্রানের ঠাণ্ডা বাতাসটা ভালই বইছিল । আমার গায়ে একটা জ্যাকেট ছিল । ওর ছিল আকাশী রঙ এর চুড়িদার ।তাই হয়তো হাত গুটিয়ে রেখেছিল। গলি রাস্তা, মানুষজন কম । সাবলীল ভাবে বলার মত কিছুই খুঁজে পাচ্ছিলাম না বোধ হয় , তাই আমরা ও চুপচাপ । যৌবনের শুরুতে এরকম মুহূর্ত বেশ ভালই ।
গাছপালা আর বাতাসের কথাবার্তার মাঝে ও বলে উঠল ,” আজ ঠাণ্ডা পড়েছে একটু ।“
-হ্যাঁ , শীত তো এসে যাচ্ছে ।
- আজ ডিসেম্বর এর ৬ তারিখ, তাই না ।
-আজ ! হ্যাঁ ! বুধবার । হ্যাঁ ৬ তারিখ ।
আবার চুপচাপ ।
কথা বলা যে কতো বড় কঠিন কাজ আর কতো কঠিন আর্টফর্ম সেদিন বুঝতে পেরেছিলাম । যাই হোক, আসল ঘটনা হল ওর শীত করছে । আর আমার কাছে জ্যাকেট ও আছে । আমার conscious mind জানান দিচ্ছে আমায় , যে জ্যাকেট টা খুলে ওকে দেয়া দরকার । আবার শালা সাথে সাথেই বুঝিয়ে দিচ্ছে যে ব্যাপারটা একটু শারুখিয়ানা হয়ে যাবে। সেই সময়ে ,ঐ পরিস্থিতিতে জ্যাকেট আর শীত আমার কাছে সবচেয়ে কঠিন খেলা নিয়ে হাজির ছিল ।
পায়ে পায়ে রাস্তা অনেকটা কেটে যায়,ধীরে ধীরে মেইন রোড এ উঠে আসি । অঘ্রানের শীত নিয়ে দু-তিন টে কথাও হয় । ওর গ্রামের পিসি শীতকালে কি কি পিঠে বানাত তাও জানা হয়ে যায় । কিন্তু আমার তখন ও জ্যাকেট আর শীত নিয়ে কোনও কিনারা হয়নি।জ্যাকেটটা খুলে দেয়ার বা না দেয়ার অনেক যুক্তি নিজের মত করেই আসতে থাকে । ধীরে ধীরে “মানবিকতা” এর মতবাদটা বেশ জমাট মনে হল ।জ্যাকেট টা খুলে ফেললাম ওকে জড়িয়ে নিতে বলবো বলে ।
-এই তো , বাস এসে গেল । আমি চললাম ।
এক গাল ভরা হাসি ।
-কাল দেখা হচ্ছে কলেজে ।
জ্যাকেটটা হাতেই রয়ে গেল আর মেয়েটিকে নিয়ে বাস টা এগিয়ে গেল ।
আমি ক্রমশ দুরেই যেতে থাকলাম ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সম্পাদিকার ডেস্ক থেকে

উৎসবের আলোড়ন কিছুটা স্তিমিত , তবুও মনের অলিন্দে হৈমন্তী স্বপ্ন । বারো মাসের তেরো পার্বণ প্রায় শেষ মুখে , উৎসব তিথি এখন অন্তিম লগ্ন যাপনে ব...