মঙ্গলবার, ৭ জুলাই, ২০১৫

অশনি সংকেত ~ সুপ্রভাত লাহিড়ী


যাচ্ছিলাম মেদিনীপুর থেকে বাঁকুড়া, ভোর ভোর গাড়িতে। পথে একটু বিশ্রাম, একটু প্রাতরাশ, পথের পাশের ধাবাতে।
গরম গরম রুটি, আলু ছেঁচকি। শালপাতায় ভোজ হচ্ছে। হঠাত্‍-ই শিশুকণ্ঠ, 'একটা রুটি দে না বাবু।' চমকে তাকাতেই নজরে আসে বাচ্বা মেয়েটাকে, মাযের কোলে। ধাবার গা লাগানো শালের গুঁড়িতে। উচ্বকিত নারীকণ্ঠ আরও চমকে দেয়, 'আঃ, খাতি দে না বাবুটারে। কতখানি পথ আসিল, যাবেও বা কতখানি বটে। ধকল নেয় নাকি এ নরম শরীল!' এ সবই শিশুকন্যাকে মায়ের শাসন আর কি। অবশ হাতে খসে পড়ল মুখের গ্রাস। নজর রাখছে মা ও মেয়ে। একটু দূরত্ব হলেও নজর এড়ায় না এক চিলতে ব্যঙ্গের হাসি আমার অপ্রস্তুত চোখ। চকিতে দৃষ্টি নামিয়ে নিতেই মা শেষ করে তার শাসনাবলী, 'চোখে দেখেই ক্ষিদে মেটা না ছা।'
দু-শালপাতা ভরে রুটি-ছেঁচকি ওদের হাতে তুলে দিয়ে গাড়িতে গিয়ে বসলাম।আমার চোখ জোড়া ছিল মাটির দিকে। এক শিরশিরানি অনুভুতি!
গাড়ি ছাড়ল। পিছনে তাকাবার সাহস হরিয়েছি। ভীরুমন বলছে, 'শাল-মহুয়ার রাজত্বে জেগেছে ক্ষিদে, কেড়ে নেবার ক্ষিদে। তির্যক চাহনি, তির্যক মন্তব্য। ক্ষুদার্তের রুদ্ররোষের বিষাক্ত তীরের ফলা! আয়োজন প্রস্তুত। শুধু একটি ফুলকির অপেক্ষা। যা এঁকে দেবে রক্তবিন্দু হয়ে বঞ্চনার সেই কদর্য চিত্র!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সম্পাদিকার ডেস্ক থেকে

উৎসবের আলোড়ন কিছুটা স্তিমিত , তবুও মনের অলিন্দে হৈমন্তী স্বপ্ন । বারো মাসের তেরো পার্বণ প্রায় শেষ মুখে , উৎসব তিথি এখন অন্তিম লগ্ন যাপনে ব...