বৃন্দা মেয়ের বাড়ী থেকে বেরোতে খানিক দেরীই করে ফেলেছিলো।এয়ারপোর্ট যখন পৌঁচ্ছালো তখন ফ্লাইট উড়ে যাবার কথা।দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে এসে যখন শুনলো ফ্লাইট দুঘন্টা ডিলে তখন একটা লম্বা শ্বাস নিয়ে পাশের খালি চেয়ারটিতে ধপ করে বসলো।ধাতস্থ হতে অনেকটা সময় নিলো বৃন্দা।হ্যান্ডব্যাগ থেকে জলের মিনারেল বোতলটিতে কয়েক ঢুঁক মেরে দিয়ে একটি বই বের করলো।
-দুই ঘন্টাতেও বোধ করি হবে না।
চশমা চোখ ডানে ঘুরিয়ে বৃন্দা একটি পলক ফেলেই বইয়ে দৃষ্টি রাখলো।
-কফি খাবেন।আপনি এখনো হাঁপাচ্ছেন।কফি খেলে স্ট্রেসটা কমবে খানিক।
বৃন্দা শব্দহীন।
কয়েকপাতা পড়তেই বৃন্দার মনে পড়লো এই বইটি সে তাকে দেখতে আসা পাত্রের কাছ থেকে পেয়েছিলো।তখন সে এম.এস.সি করছে।মামা কোত্থ থেকে এক পাত্র জুটিয়ে বাড়ীতে এনে হাজির।পেশায় ইঞ্জিনিয়ার কিন্তু বেশভূষা দেখে বৃন্দার নিজের অজান্তেই মুখ ফসকে বেরিয়ে পড়েছিল একটি শব্দ ক্ষেত!পাত্রটি কথাটি যে শুনেছিলো তা বোঝা যাচ্ছিলো।বইটি দিয়েই উঠে পড়েছিলো মামা অনেক জোড়াজুড়ি করলো পাত্রটি আর বসেনি।পরে মামার কাছে জেনেছিলো পাত্রটির নাম ঋদ্ধি।
-এই নিন কফি,সুগার ফ্রি।
বিরক্ত নিয়ে তাকালেও বৃন্দা মনে মনে খুব পুলকিত বোধ করছিলো।এতবছরে কেউ এইটুকু টেইককেয়ারটা ও করেনি অথচ সংসারের জন্য সে কি করেনা।
-এর মানে কি?আমি কি বলছি কফি খাবো তাছাড়া আপনি আমার পরিচিত কেউ নন যে মন চাইলো কফি এনে হাজির হলেন।আমি সুগার খাই নাকি খাইনা তাও তো জানেন না।
এতকথার পর কিছু না বলেই ফিরে যাচ্ছিলো কফি হাতে লোকটি।
-এই যে শুনুন।অপচয় করার মানে হয় না এনেছেন যখন দিন কফিটা,তা কত প্রাইজ?
নির্বাক লোকটি কফি কাপটি বাড়িয়ে দিয়ে পাশের সিটে বসে পড়লো।
-কফির দাম কত?
-দাম দিতে হবে না।
-কেন?আপনাকে নিশ্চয় ফ্রি তে দেয়নি।
কফি শেষ হয়ে গেলে অস্বত্ত্বি বাড়ে বৃন্দার কাপটা ফেলতে উঠে অনেকটা যেতে হবে।
-কাপটা দিন ফেলে দিয়ে আসি।
বৃন্দা রাগে গজগজ করতে করতে কাপটা দিলো।কিছুক্ষণ পর সেই কন্ঠস্বরে বই থেকে তাকিয়ে বৃন্দা বিস্মিত লোকটির হাতে মিনারেল ওয়াটারের বোতল।আপনার ব্যাগের বোতলটি শেষ দেখলাম তাই নিয়ে এলাম।কফির টাকা লাগবেনা জলের বিশটা দিলেই চলবে।বৃন্দার চোখেমুখে যত বিস্ময় তার চেয়ে ঢের বিস্ময় মনে।অনিশ মানে বৃন্দার দীর্ঘ আটবছর প্রেম করার পর যে আজ তার স্বামী সেই অনিশ কোনদিন অনুভব করেনি এখন বৃন্দার কফি চাই বয়স বাড়ছে তাই সুগার ফ্রি খাওয়া উচিত কিংবা খেয়াল করেনি জলের বোতল খালি হয়ে আছে বৃন্দাকে জল কিনে দেয়া উচিত।ভাবনার খেয়ালে টাকা বের করতে একটু দেরিই হলো।টাকাটা ভদ্রলোক কিছুতেই নিলেন না।বৃন্দার চোখ বইয়ের পাতায় মনটা উড়ছে এমন একজন কেয়ারিং সঙ্গীই তো তার আরাধনা ছিলো।অনিশের টাকা আছে স্মার্টনেস আছে কেবল কেয়ারটা নেই।
ফ্লাইট আরো একঘন্টা ডিলে করবে আবহাওয়ার জন্য ঘোষনাটা বারবার জানানো হচ্ছে।
সময়ের খেয়ালেই বৃন্দা আর ভদ্রলোকটি গল্পে মেতে উঠলো।গল্পের ফাঁকে বৃন্দার সহসা মনে হলো খুব কম মানুষই যথার্থ মানুষটিকে পায় জীবনে,বইটি চেয়ারে রেখে লাগেজ নিয়ে বেরিয়ে পড়ে বৃন্দা,ওয়াশরুম থেকে ফিরে কোথাও বৃন্দাকে দেখতে না পেয়ে বইটি দেখে লোকটি,পাশের জনের কাছে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারে বৃন্দা বাইরের দিকে গেছে বইটি বুকে চেপে দৌঁড়ে যায় ততক্ষণে বৃন্দার ট্যাক্সি স্টার্ট নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে গাড়ির পেছন থেকে বৃন্দার মুখটা আর জানালা দিয়ে নাড়তে থাকা হাতটা আবছা হতে হতে ভিড়ে মিলিয়ে গেলে বুকের কাছে রাখা বইটা দেখে ঋদ্ধি।প্রচ্ছদের অক্ষর গুলো তখন জ্বলজ্বল করছে পূর্ব পশ্চিম....
-দুই ঘন্টাতেও বোধ করি হবে না।
চশমা চোখ ডানে ঘুরিয়ে বৃন্দা একটি পলক ফেলেই বইয়ে দৃষ্টি রাখলো।
-কফি খাবেন।আপনি এখনো হাঁপাচ্ছেন।কফি খেলে স্ট্রেসটা কমবে খানিক।
বৃন্দা শব্দহীন।
কয়েকপাতা পড়তেই বৃন্দার মনে পড়লো এই বইটি সে তাকে দেখতে আসা পাত্রের কাছ থেকে পেয়েছিলো।তখন সে এম.এস.সি করছে।মামা কোত্থ থেকে এক পাত্র জুটিয়ে বাড়ীতে এনে হাজির।পেশায় ইঞ্জিনিয়ার কিন্তু বেশভূষা দেখে বৃন্দার নিজের অজান্তেই মুখ ফসকে বেরিয়ে পড়েছিল একটি শব্দ ক্ষেত!পাত্রটি কথাটি যে শুনেছিলো তা বোঝা যাচ্ছিলো।বইটি দিয়েই উঠে পড়েছিলো মামা অনেক জোড়াজুড়ি করলো পাত্রটি আর বসেনি।পরে মামার কাছে জেনেছিলো পাত্রটির নাম ঋদ্ধি।
-এই নিন কফি,সুগার ফ্রি।
বিরক্ত নিয়ে তাকালেও বৃন্দা মনে মনে খুব পুলকিত বোধ করছিলো।এতবছরে কেউ এইটুকু টেইককেয়ারটা ও করেনি অথচ সংসারের জন্য সে কি করেনা।
-এর মানে কি?আমি কি বলছি কফি খাবো তাছাড়া আপনি আমার পরিচিত কেউ নন যে মন চাইলো কফি এনে হাজির হলেন।আমি সুগার খাই নাকি খাইনা তাও তো জানেন না।
এতকথার পর কিছু না বলেই ফিরে যাচ্ছিলো কফি হাতে লোকটি।
-এই যে শুনুন।অপচয় করার মানে হয় না এনেছেন যখন দিন কফিটা,তা কত প্রাইজ?
নির্বাক লোকটি কফি কাপটি বাড়িয়ে দিয়ে পাশের সিটে বসে পড়লো।
-কফির দাম কত?
-দাম দিতে হবে না।
-কেন?আপনাকে নিশ্চয় ফ্রি তে দেয়নি।
কফি শেষ হয়ে গেলে অস্বত্ত্বি বাড়ে বৃন্দার কাপটা ফেলতে উঠে অনেকটা যেতে হবে।
-কাপটা দিন ফেলে দিয়ে আসি।
বৃন্দা রাগে গজগজ করতে করতে কাপটা দিলো।কিছুক্ষণ পর সেই কন্ঠস্বরে বই থেকে তাকিয়ে বৃন্দা বিস্মিত লোকটির হাতে মিনারেল ওয়াটারের বোতল।আপনার ব্যাগের বোতলটি শেষ দেখলাম তাই নিয়ে এলাম।কফির টাকা লাগবেনা জলের বিশটা দিলেই চলবে।বৃন্দার চোখেমুখে যত বিস্ময় তার চেয়ে ঢের বিস্ময় মনে।অনিশ মানে বৃন্দার দীর্ঘ আটবছর প্রেম করার পর যে আজ তার স্বামী সেই অনিশ কোনদিন অনুভব করেনি এখন বৃন্দার কফি চাই বয়স বাড়ছে তাই সুগার ফ্রি খাওয়া উচিত কিংবা খেয়াল করেনি জলের বোতল খালি হয়ে আছে বৃন্দাকে জল কিনে দেয়া উচিত।ভাবনার খেয়ালে টাকা বের করতে একটু দেরিই হলো।টাকাটা ভদ্রলোক কিছুতেই নিলেন না।বৃন্দার চোখ বইয়ের পাতায় মনটা উড়ছে এমন একজন কেয়ারিং সঙ্গীই তো তার আরাধনা ছিলো।অনিশের টাকা আছে স্মার্টনেস আছে কেবল কেয়ারটা নেই।
ফ্লাইট আরো একঘন্টা ডিলে করবে আবহাওয়ার জন্য ঘোষনাটা বারবার জানানো হচ্ছে।
সময়ের খেয়ালেই বৃন্দা আর ভদ্রলোকটি গল্পে মেতে উঠলো।গল্পের ফাঁকে বৃন্দার সহসা মনে হলো খুব কম মানুষই যথার্থ মানুষটিকে পায় জীবনে,বইটি চেয়ারে রেখে লাগেজ নিয়ে বেরিয়ে পড়ে বৃন্দা,ওয়াশরুম থেকে ফিরে কোথাও বৃন্দাকে দেখতে না পেয়ে বইটি দেখে লোকটি,পাশের জনের কাছে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারে বৃন্দা বাইরের দিকে গেছে বইটি বুকে চেপে দৌঁড়ে যায় ততক্ষণে বৃন্দার ট্যাক্সি স্টার্ট নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে গাড়ির পেছন থেকে বৃন্দার মুখটা আর জানালা দিয়ে নাড়তে থাকা হাতটা আবছা হতে হতে ভিড়ে মিলিয়ে গেলে বুকের কাছে রাখা বইটা দেখে ঋদ্ধি।প্রচ্ছদের অক্ষর গুলো তখন জ্বলজ্বল করছে পূর্ব পশ্চিম....
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন