দশতলা ফ্ল্যাটের ঝুলন্ত ব্যালকনি থেকে আকাশের বুকে চোখ রাখতেই রণিতের বিষণ্ণ মনটা খুশীতে ভরে গেল । প্রায় হাতের কাছেই দু’টো রঙ্গীন ঘুড়ি উড়ছে পত্পত্ করে ! একটা ঘুড়ি নীল-সাদা রঙের । অপরটা বাসন্তী রঙের । নীল-সাদা রঙের ঘুড়িটা বাসন্তী রঙের ঘুড়িটার আশেপাশেই উড়ে বেড়াচ্ছে নিজের খেয়াল খুশী মতো । রণিত ব্যালকনিতে কেন এসেছিলো তা ভুলে গিয়ে সেদিকেই তাকিয়ে থাকলো হা-করে । ঘুড়ি দুটোকে দেখতে দেখতে কেন জানে না হঠাৎ মৃত মা-বাবার কথা তার মনে পড়লো । গতবছর দিল্লী বেড়াতে গিয়ে সেখানেই এক পথ দুর্ঘটনায় দু’জনেই চলে গেলেন রণিতের একেবারে ধরাছোঁয়ার বাইরে । রণিত সেইথেকে একলা পৃথিবীর বাসিন্দা হয়ে গেছে । আজ রবিবার । সে নিঃসঙ্গ হয়ে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছিলো একাকীত্বে ডুবে থেকে । ঘরে কেউ নেই যে দুটো কথা বলে মন হালকা করবে । চাকরির সুবাদে দিনের কিছুটা সময় অফিসে কাটিয়ে একাকীত্ব ভুলে থাকতে পারে । কিন্তু রবিবার বা ছুটির দিনে তাকে ডুবে থাকতে হয় একাকীত্বের অন্ধকারে । তেমন কাছের কোনো বন্ধুবান্ধবও এই শহরে নেই যে গিয়ে আড্ডা মেরে আসবে ।
ঘুড়ি দু’টোর দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতেই হোঁচট খেলো মনেমনে । ঘুড়ি দুটো কি তার চিরকালের জন্যে হারিয়ে যাওয়া বাবা-মা ! বাবা নীল-সাদা রঙের গেঞ্জি পছন্দ করতেন । একটা ব্যবহার করেছেন বহুকাল । এমন কি নতুন একটা কিনে গায়ে চড়িয়ে বেড়াতে গেছিলেন । মায়ের আবার ভারী পছন্দ ছিলো বাসন্তী রঙ । তেমন রঙের নতুন একটা শাড়ি এখনো তোলা রয়েছে আলমারিতে । ইচ্ছে ছিলো বেড়িয়ে এসে শাড়ির পাট ভাঙবেন । তা আর হয়ে উঠলো কোথায় ? রণিতের এখন চোখ ফেরাতে ইচ্ছে করলো না ঘুড়ি দু’টোর ওপর থেকে ।
হঠাৎই কোত্থেকে একটা কালো চাঁদিয়াল ঘুড়ি এসে ভোকাট্টা করে দিলো বাসন্তী রঙের ঘুড়িটাকে ! বাসন্তী রঙের ঘুড়িটা কাটা পড়ে দূরে ভেসে যেতে যেতে হঠাৎ মায়ের মুখ হয়ে গেল রণিতের চোখের সামনেই ! রনিত দেখলো, বাবাকে ছেড়ে যাবার দুঃখে মা কাঁদছেন ! রণিত আরও দেখলো, নীল-সাদা ঘুড়িটা লাট খেতে খেতে সুতোয় জড়িয়ে নিতে চেষ্টা করছে বাসন্তী রঙের ঘুড়িটাকে । অথচ ঘুড়িটা বারবার ফসকে যাচ্ছে । নীল-সাদা ঘুড়িটা একসময় বিফল হয়ে ফিরে এলো নিজের জায়গায় । রণিত দেখলো, নীল-সাদা ঘুড়িটা ঝপ্ করে বাবার মুখ হয়ে গেল ! আরও দেখলো, বাবার চোখেও জল ঝরছে মা’কে ধরে রাখতে না পেরে !
রণিত নিঃশব্দ কান্নায় ভেসে যেতে যেতে ভাবলো, একবার যখন এত কাছে পেয়েছে তখন মাকে আর কিছুতেই হারিয়ে যেতে দেবে না । বাবা পারলেন না বলে মা কি ভেসে যাবেন অজানা পথে ? ছেলে হয়ে তা কি হতে দেওয়া যায় ? যায় না বলেই রণিত আর কালবিলম্ব না-করে বাসন্তী রংয়ের ঘুড়িটা লক্ষ্য করে ঝাঁপ দিলো দশতলা ফ্ল্যাটের উঁচু ব্যালকনি থেকে । ঘুড়িটা যে এখনো বেশী দূরে চলে যায়নি !
ঘুড়ি দু’টোর দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতেই হোঁচট খেলো মনেমনে । ঘুড়ি দুটো কি তার চিরকালের জন্যে হারিয়ে যাওয়া বাবা-মা ! বাবা নীল-সাদা রঙের গেঞ্জি পছন্দ করতেন । একটা ব্যবহার করেছেন বহুকাল । এমন কি নতুন একটা কিনে গায়ে চড়িয়ে বেড়াতে গেছিলেন । মায়ের আবার ভারী পছন্দ ছিলো বাসন্তী রঙ । তেমন রঙের নতুন একটা শাড়ি এখনো তোলা রয়েছে আলমারিতে । ইচ্ছে ছিলো বেড়িয়ে এসে শাড়ির পাট ভাঙবেন । তা আর হয়ে উঠলো কোথায় ? রণিতের এখন চোখ ফেরাতে ইচ্ছে করলো না ঘুড়ি দু’টোর ওপর থেকে ।
হঠাৎই কোত্থেকে একটা কালো চাঁদিয়াল ঘুড়ি এসে ভোকাট্টা করে দিলো বাসন্তী রঙের ঘুড়িটাকে ! বাসন্তী রঙের ঘুড়িটা কাটা পড়ে দূরে ভেসে যেতে যেতে হঠাৎ মায়ের মুখ হয়ে গেল রণিতের চোখের সামনেই ! রনিত দেখলো, বাবাকে ছেড়ে যাবার দুঃখে মা কাঁদছেন ! রণিত আরও দেখলো, নীল-সাদা ঘুড়িটা লাট খেতে খেতে সুতোয় জড়িয়ে নিতে চেষ্টা করছে বাসন্তী রঙের ঘুড়িটাকে । অথচ ঘুড়িটা বারবার ফসকে যাচ্ছে । নীল-সাদা ঘুড়িটা একসময় বিফল হয়ে ফিরে এলো নিজের জায়গায় । রণিত দেখলো, নীল-সাদা ঘুড়িটা ঝপ্ করে বাবার মুখ হয়ে গেল ! আরও দেখলো, বাবার চোখেও জল ঝরছে মা’কে ধরে রাখতে না পেরে !
রণিত নিঃশব্দ কান্নায় ভেসে যেতে যেতে ভাবলো, একবার যখন এত কাছে পেয়েছে তখন মাকে আর কিছুতেই হারিয়ে যেতে দেবে না । বাবা পারলেন না বলে মা কি ভেসে যাবেন অজানা পথে ? ছেলে হয়ে তা কি হতে দেওয়া যায় ? যায় না বলেই রণিত আর কালবিলম্ব না-করে বাসন্তী রংয়ের ঘুড়িটা লক্ষ্য করে ঝাঁপ দিলো দশতলা ফ্ল্যাটের উঁচু ব্যালকনি থেকে । ঘুড়িটা যে এখনো বেশী দূরে চলে যায়নি !
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন